প্রেসক্রিপশন ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রি বন্ধে হাইকোর্টের নির্দেশ
গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : বিশেষজ্ঞ বা রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ বিক্রি বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ঔষধ প্রশাসনের মহাপরিচালককে (ডিজির) সার্কুলার জারি করতে বলা হয়েছে।
ওই সার্কুলারের মাধ্যমে সব জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও সিভিল সার্জনকে দু’দিনের মধ্যে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন আদালত।
এছাড়া, প্রেসক্রিপশন ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রি কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক, জনপ্রশাসন সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
জনস্বার্থে দায়ের করা এ সংক্রান্ত এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুল জারিসহ আদেশ দেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার সৈয়দ সাইয়েদুল হক সুমন। অন্যদিকে, রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোখলেছুর রহমান।
এর আগে গত ২২ এপ্রিল ব্রিটিশ দৈনিক দ্য টেলিগ্রাফে ‘সুপারবাগস লিংকড টু এইট আউট অব টেন ডেথস ইন বাংলাদেশ আইসিইউ-স’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ৮০ শতাংশ রোগীর মৃত্যুর জন্য অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধকারী সুপারবাগ দায়ী।
দ্য টেলিগ্রাফের ওই প্রতিবেদনটি সংযুক্ত করে আইনজীবী সৈয়দ সাইয়েদুল হক সুমন আদালতে রিট অবেদন করেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গবেষণা প্রতিবেদন তুলে ধরে রিট আবেদনে বলা হয়, ‘অ্যান্টিবায়োটিকের কারণে প্রতিবছর বিশ্বে সাত লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। ২০৫০ সাল নাগাদ এ সংখ্যা গিয়ে দাঁড়াতে পারে এক কোটিতে। রিট আবেদনে আরও বলা হয়, পশু খাদ্য, মাছ এবং কৃষিতে অতিমাত্রায় অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে। সবচেয়ে বেশি অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করা হচ্ছে কৃষিতে, যা দেশে ব্যবহৃত মোট অ্যান্টিবায়োটিকের প্রায় অর্ধেক। ফলে খুব সহজেই কৃষি খাদ্যের মধ্য দিয়ে এই অ্যান্টিবায়োটিক মানুষের শরীর ঢুকছে। এতে একদিকে যেমন অ্যান্টিবায়োটিকের কার্যকারিতা হারাচ্ছে, তেমনি শরীরও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হারাচ্ছে।’
রিট আবেদনে বলা হয়, ‘অপ্রয়োজনীয় ব্যবহারের কারণে অ্যান্টিবায়োটিকের কার্যকারিতা যে নষ্ট হয় বা হুমকি তৈরি করে, সে বিষয়টি তুলে ধরতে জাতীয় ওষুধ নীতি ব্যর্থ হয়েছে। অ্যান্টিবায়োটিকের অপ্রয়োজনীয় ব্যবহার মানুষের মৃত্যুফাঁদ তৈরি করছে। রাষ্ট্রের দায়িত্ব হচ্ছে এই ফাঁদ থেকে মানুষকে রক্ষা করা।’