কালীগঞ্জে বৃদ্ধাকে নির্যাতন: ইউপি সদস্য ও যুবলীগ নেতা নাজমুল গ্রেপ্তার
বিশেষ প্রতিনিধি : কালীগঞ্জের জামালপুরে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে এক বৃদ্ধাকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করার চাঞ্চল্যকর ঘটনায় ইউপি সদস্য ও যুবলীগ নেতা নাজমুল হোসেন শেখকে (৩৪) গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১।
বৃদ্ধা ও তার মেয়েকে মারধরের ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে নাজমুল।
মঙ্গলবার (১০ নভেম্বর) দুপুরে র্যাব সদর দপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
গ্রেপ্তার নাজমুল হোসেন শেখ কালীগঞ্জের জামালপুর গ্রামের আব্দুল ছাদেক শেখের ছেলে। তিনি জামালপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৭নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ও জামালপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি।
র্যাব সদর দপ্তরের লিগ্যাল এন্ড মিডিয়া উইং এর সহকারী পুলিশ সুপার (মিডিয়া অফিসার) মোর্শেদুল হাসান স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গত ৫ নভেম্বর কালীগঞ্জ থানাধীন জামালপুর এলাকায় জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে রেহানা বেগম (৬০) নামে এক বৃদ্ধাকে গুরুতর আহত করে স্থানীয় জামালপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৭নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য নাজমুল হোসেন এবং তার সহযোগীরা। বৃদ্ধাকে মারধরের ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়। অতঃপর এই বিষয়টি নিয়ে এলাকায় ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা হয়। পরবর্তীতে ভিকটিমের মেয়ে ফারজানা আক্তার বাদী হতে কালীগঞ্জ থানায় ৭ নভেম্বর একটি মামলা দায়ের করেন।
র্যাব জানায়, ঘটনাটি বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে ব্যাপক গুরুত্বের সাথে প্রচারিত হয় এবং এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এর প্রেক্ষিতে র্যাব ঘটনার সাথে জড়িত আসামীদের গ্রেপ্তারের লক্ষ্যে তাৎক্ষণিকভাবে ছায়া তদন্ত শুরু করে এবং গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ৯ নভেম্বর আনুমানিক রাত সাড়ে ৭ টার দিকে র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা দলের সহযোগিতায় র্যাব-১ এর উত্তরা ও ঢাকার একটি দল ঢাকার উত্তরা পশ্চিম থানা এলাকার আব্দুল্লাহপুর বাসস্ট্যান্ডের হানিফ কাউন্টারের অভিযান পরিচালনা করে ওই মামলার প্রধান আসামী নাজমুল হোসেন শেখকে গ্রেপ্তার করে।
ঘটনার বিবরণ দিয়ে র্যাব জানায়, ভিকটিম রেহানা বেগম কালীগঞ্জ উপজেলার জামালপুর গ্রামের মালয়েশিয়া প্রবাসী মোঃ জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রী এবং ৩ সন্তানের জননী। গত ৫ নভেম্বর নাজমুল হোসেনের বাড়ির পাশের রাস্তার সীমানায় গাছ কাঁটা নিয়ে রেহানা বেগম ও তার মেয়ের সাথে তর্ক-বিতর্ক হয়। এক পর্যায়ে রেহানা বেগম গাছ কাটতে বাঁধা দিলে তাকে ধরে আছাড় মেরে গুরুতর আহত করে নাজমুল হোসেন। পরে নাজমুল হোসেনের লোকজন ও সে নিজে বৃদ্ধা ও তার মেয়েকে বেধড়ক কিল-ঘুষি ও লাথি মারে। তখন মা-মেয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় কান্নাকাটি করে এবং গুরুতর আহত অবস্থায় পরে থাকে। গ্রেপ্তার আসামী বৃদ্ধা ও তার মেয়েকে মারধরের ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে।