তাপস-খোকনের লড়াইয়ের নেপথ্যে
গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন যুদ্ধ জমে উঠেছে। বর্তমান মেয়র সাঈদ খোকনকে চ্যালেঞ্জ করে মনোনয়ন ফরম কিনেছেন ঢাকা-১০ আসনের সংসদ সদস্য শেখ ফজলে নূর তাপস। ইতিমধ্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগেই তার পক্ষে এক বিরাট সমর্থকগোষ্ঠী দাঁড়িয়ে গেছে। যারা দক্ষিণের মেয়র হিসেবে তাপসকে প্রার্থী হিসেবে চাইছেন। মেয়রপদে আকস্মিকভাবে তাপসের মনোনয়ন ফরম কেনার ঘটনায় ভড়কে গেছেন বর্তমান মেয়র সাঈদ খোকন।
বৃহস্পতিবার মনোনয়ন ফরম কিনতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন খোকন। বলেন, ‘রাজনীতিতে একটা কঠিন সময় পার করছি।’
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, খোকনের এই কান্না উৎকণ্ঠার কান্না। কারণ তিনি নিজেও জানেন যে তাপস বিনা কারণে মনোনয়ন ফরম কেনেননি। যদিও খোকন দাবি করেছেন, মনোনয়ন তিনিই পাবেন।
এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগ সভাপতির সবুজ সংকেত তিনি পেয়েছেন। কিন্তু অনুমান করে এ ব্যাপারে কোনো নিশ্চিত তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে শহীদ শেখ ফজলুল হক মনি’র পুত্র শেখ ফজলে নূর তাপসের সঙ্গে বর্তমান মেয়র সাঈদ খোকনের দ্বৈরথ বেশ পুরনো। এই দ্বৈরথের সূচনা ওয়ান ইলেভেন থেকে। ওয়ান ইলেভেনে সাঈদ খোকন ছিলেন সংস্কারপন্থী। আওয়ামী লীগ ত্যাগ করে তিনি কিংস পার্টিতে যোগ দিয়েছিলেন। আর তরুণ আইনজীবী ব্যারিস্টার তাপস তখন ছিলেন শেখ হাসিনার অন্যতম আইনজীবী। শেখ হাসিনাকে যারা মাইনাস করতে চেয়েছিল, তাদের বিরুদ্ধে তাপসের সুস্পষ্ট অবস্থান ছিল। অন্যদিকে সাঈদ খোকন নিজেই শেখ হাসিনাকে মাইনাস করতে চেয়েছিলেন।
আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পরে সাঈদ খোকন মেয়র হন। জানা গেছে, সাঈদ খোকন মেয়র হয়ে আলাদা সিন্ডিকেট গঠন করেছিলেন। সিটি কর্পোরেশনে দলের ত্যাগী নেতাকর্মীরা জায়গা পায়নি। তাপস নিজেও একাধিকবার সিটি কর্পোরেশনের দুর্নীতি এবং দুর্বৃত্তায়নের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন। সিটি কর্পোরেশনের দুর্নীতি এবং অনিয়ম বন্ধের জন্য সাঈদ খোকনের বিরুদ্ধে এটা তাপসের ‘প্রতিবাদ’ বলে মনে করছেন অনেকেই। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, সুবিধাবাদী আপোষকামী রাজনীতির সঙ্গে আদর্শের লড়াইয়ের পুরনো সংঘাতই হলো তাপস-খোকনের দ্বৈরথের বর্তমান রূপ।