নাই টেলিফোন নাইরে নেট: সাংবাদিকতা কাশ্মীর স্টাইল
গাজীপুর কণ্ঠ, আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে টেলিফোন, ইন্টারনেট ও মোবাইল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। এ কারণে গত এক মাসে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে তেমন সমস্যায় পড়তে হয়নি বলে পুলিশ দাবি করছে৷ কিন্তু এই পরিবেশে কীভাবে চলছে সাংবাদিকতা?
একটি জাতীয় পত্রিকায় কাজ করেন ইশফাক তন্ত্রী। তাঁর টেবিলে যে কম্পিউটারটি রয়েছে সেখানে কোনো ইন্টারনেট সংযোগ নেই। অফিসের টেলিফোন লাইনও কাজ করেনা।
তাই কম্পিউটারে রিপোর্ট লেখার পর সেটি প্রধান কার্যালয়ে পাঠাতে ইশফাককে সরকার পরিচালিত একটি মিডিয়া সেন্টারে ছুটতে হয়। সেখানে শত শত স্থানীয়, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সাংবাদিকের জন্য ইন্টারনেট সংযোগসহ মাত্র পাঁচটি কম্পিউটার রয়েছে। এর একটি ব্যবহার করেই প্রধান কার্যালয়ে রিপোর্ট পাঠান ইশফাক।
এতো গেল রিপোর্ট পাঠানোর সমস্যার কথা। কিন্তু সাংবাদিকের মূল যে কাজ রিপোর্ট সংগ্রহ করা, সেটি টেলিফোন আর ইন্টারনেট সংযোগ ছাড়া অনেকটাই কঠিন। তার ওপর আছে সরকারের হস্তক্ষেপ।
ইশফাক জানালেন, ইতিমধ্যে সরকারি কর্মকর্তারা অনেক সাংবাদিককে ডেকে নিয়ে তথ্যের সূত্র সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। ‘‘এটা এক ধরনের হুমকি ও বলপ্রয়োগ,” বলে মনে করছেন তিনি।
রাস্তাঘাটে প্রায়ই ছবি তোলায়ও বাধা দিচ্ছেন কাশ্মীরের নিরাপত্তাকর্মীরা। যেমন সাংবাদিক নিমিশা জেসওয়ালকে ছবি তোলায় বাধা দিয়েছেন এক পুলিশ। কী কারণে এমন করা হচ্ছে, জানতে চাইলে ঐ পুলিশ কোনো উত্তর দেননি।
এমন পরিস্থিতিতে টিভি কিংবা সংবাদপত্রের খবরে আস্থা হারিয়ে ফেলেছেন কাশ্মীরের মানুষ। যেমন শ্রীনগরের এক বাসিন্দা জানান, ‘‘আমরা কোনো খবর পাইনা। ভারতীয় গণমাধ্যমে ভুয়া খবর প্রকাশিত হচ্ছে। তারা বলছে, সব স্কুল খোলা, দোকানপাট খোলা, গাড়িও চলছে। কিন্তু আপনার চারদিকে তাকিয়ে দেখুন, আপনি এখন শ্রীনগরের কেন্দ্রে আছেন, অথচ সব দোকান বন্ধ, স্কুলও বন্ধ। মানুষ সবাই হতাশায় রয়েছেন।”
সূত্র: ডয়চে ভেলে