নড়াইলের জজের ক্ষমতা কমিয়ে দিল হাই কোর্ট
গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : কলেজ ছাত্র এনামুল শেখ হত্যা মামলায় প্রধান আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন না করে অব্যাহতি দেওয়ায় নড়াইলের জেলা ও দায়রা জজ শেখ আব্দুল আহাদের বিচারিক ক্ষমতার ক্ষেত্র হ্রাস করার নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট।
আদালত আদেশে বলেছে, শেখ আব্দুল আহাদ এক বছর ফৌজদারি মামলায় বিচার কাজ পরিচালনা করতে পারবেন না। সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে পরামর্শ করে আইন মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।
এ হত্যা মামলায় অভিযোগ গঠনের বিষয়ে জজ আদালতের আদেশ বাতিল করে নতুন করে অভিযোগ গঠনের শুনানি করতে বলেছে হাই কোর্ট।
মামলার প্রধান আসামি মল্লিক মাঝহারুল ইসলামকে দেওয়া জামিন বহাল রাখা হলেও ‘অপ্রয়োজনীয়’ সময়ের আবেদন করলে জামিন বাতিল হবে বলে হুঁশিয়ার করা হয়েছে।
এ বিষয়ে তিনটি রুলের নিষ্পত্তি করে বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাই কোর্ট বেঞ্চ বৃহস্পতিবার এই রায় দেয়।
আসামি মল্লিক মাঝহারুল ইসলামের পক্ষে হাই কোর্টে শুনানি করেন আইনজীবী এএম আমিন উদ্দিন, রবিউল আলম বুদু ও এম সাইফুদ্দিন খোকন (সাইফ মল্লিক)।
আর বাদীপক্ষে ছিলেন আইনজীবী ছিলেন মোহাম্মদ হোসেন লিপু। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারওয়ার হোসেন বাপ্পী।
আইনজীবী সাইফ মল্লিক পরে বলেন, “মল্লিক মাঝহারুল ইসলামের জামিন বহাল রাখলেও আদালত সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, জামিনের শর্ত লঙ্ঘন করলে জামিন বাতিল করা হবে।”
খুলনার বিএল কলেজের মাস্টার্স শেষ বর্ষের ছাত্র এনামুল শেখকে ২০১৫ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি নড়াইলের কালিয়ার চণ্ডিনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে গুলি করে হত্যা করা হয়।
ওই হত্যাকাণ্ডের পর মল্লিক মাঝহারুল ইসলাম ওরফে মাঝাকে প্রধান আসমি করে ৬৮ জনের বিরুদ্ধে কালিয়া থানায় মামলা করেন নিহতের ভাই নাজমুল হুদা।
এ মামলায় গত বছরের ২৯ নভেম্বর নিম্ন আদালত থেকে জামিন পান মল্লিক মাঝহারুল ইসলাম। পরে চলতি বছরের ১০ জুন তাকে অব্যাহতি দিয়ে এ মামলায় অভিযোগ গঠন করেন নড়াইলের জেলা ও দায়রা জজ আালতের বিচারক শেখ আব্দুল আহাদ।
প্রধান আসামির অব্যাহতির ওই আদেশ চ্যালেঞ্জ করে গত ৭ জুলাই হাই কোর্টে আবেদন করেন এনামুলের ভাই নাজমুল।
প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাই কোর্ট নড়াইলের সেই বিচারকের বিচারিক এখতিয়ার এবং অভিযোগ গঠনের আদেশ নিয়ে দুটি রুল জারি করে।
পাশাপাশি মামলার প্রধান আসামি মল্লিক মাঝহারুলের অব্যাহতির আদেশ স্থগিত করে তাকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেয়
প্রধান আসামিকে অব্যাহতি দিয়ে অভিযোগ গঠনের আদেশ কেন বাতিল করা হবে না- তা জানতে চাওয়া হয় একটি রুলে। আর বিচারক শেখ আব্দুল আহাদের বিচারিক ক্ষমতা কেন প্রত্যহার করা হবে না- সে বিষয়ে অন্য রুলে তার ব্যাখ্যা চাওয়া হয়।
ওই আদেশের পর আসামি মাঝহারুল ইসলাম গত ২২ জুলাই নড়াইলের আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করলে আদালত তা মঞ্জুর করে।
এদিকে হাই কোর্টে রুল শুনানির সময় মল্লিক মাঝহারুল ইসলামের জামিনের বিষয়টি নজরে এলে ওই জামিন কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে চেয়ে আরেকটি রুল জারি হাই কোর্ট।
এই তিনটি রুলের নিষ্পত্তি করেই হাই কোর্ট বৃহস্পতিবার রায় দিল।