‘বন্যার্তদের টাকা আত্মসাতের’ অভিযোগ টঙ্গী প্রেসক্লাবের সভাপতির বিরুদ্ধে!
বিশেষ প্রতিনিধি : টঙ্গী প্রেসক্লাবের সভাপতির বিরুদ্ধে ভানবাসী মানুষের জন্য সংগৃহীত অনুদানের টাকা আত্মসাতের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে।
এতে ক্লাবের কার্যনির্বাহী কমিটির অন্যান্য কর্মকর্তা ও সাধারণ সদস্যদের মধ্যেও ক্ষোভ বিরাজ করছে। এ ঘটনায় টঙ্গীতে তোলপাড় চলছে।
ভানবাসী মানুষের টাকা আত্মসাতসহ সুনির্দিষ্ট বিভিন্ন দুর্নীতির জবাব চেয়ে প্রেসক্লাবের সভাপতিকে ‘লিগ্যাল নোটিশ’ দিয়েছেন ক্লাবের কার্যনির্বাহী কমিটির একজন সদস্য।
টঙ্গী প্রেসক্লাবের একাধিক সদস্য জানান, ক্লাবের নির্বাহী পরিষদের সিদ্ধান্ত ছাড়াই এমনকি সাধারণ সদস্যদের সাথেও কোন পরামর্শ না করেই সভাপতি এম.এ হায়দার সরকার প্রেসক্লাব ও অন্য একটি নামসর্বস্ব সংগঠনের ব্যানারে বন্যার্তদের সাহায্যের নামে গত ৩১ জুলাই টঙ্গী পাইলট স্কুল এন্ড গার্লস কলেজ মাঠে কনসার্টের আয়োজন করেন। অনুষ্ঠানের আগের রাতে সদস্যদের মোবাইলে ক্ষুদে বার্তার মাধ্যমে এই কনসার্টের কথা জানানো হয়। সাধারণ সম্পাদকও তখন বান্দরবানের লামায় তিন দিন ধরে মোবাইল ফোন বন্ধ রেখে কোয়ন্টাম মেথডের ধ্যানে মগ্ন ছিলেন। তিনিও এভাবে খবর পেয়ে ৩১ তারিখ ভোরে টঙ্গীর উদ্দেশ্যে রওনা দেন এবং রাতে কনসার্টে যোগদেন। কিন্তু সভাপতি অদ্যাবধি পরিষদকে ভানবাসী মানুষের নামে সংগৃহীত টাকার কোন হিসাব দেননি এবং সংগৃহীত টাকা ভানবাসী মানুষের মধ্যে বিতরণ না করে আত্মসাত করেন।
এব্যাপারে সাধারণ সম্পাদক কালিমুল্লাহ ইকবালের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এবিষয়ে কিছুই জানেন না বলে স্বীকার করেন।
ক্লাবের সাংগঠনিক সম্পাদক লতিফ মুহাম্মদ হালিমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনিও এব্যাপারে কিছুই জানেন না বলে স্বীকার করে বলেন, আমি কনসার্টের খবর আগের রাতে মোবাইল ম্যাসেজের মাধ্যমে জানতে পেরেছি।
এব্যাপারে টঙ্গী প্রেসক্লাবের সহ-সাধারণ সম্পাদক এম. আর নাসিরের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি সভাপতিকে উকিল নোটিশ দেওয়ার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, শুধু ভানবাসী মানুষের টাকা আত্মসাতের জন্য নয়, বরং আরো সুনির্দিষ্ট কিছু অনিয়ম ও দুর্নীতির জবাব চেয়ে সভাপতিকে লিগ্যাল নোটিশ দেওয়া হয়েছে। শুরু থেকেই সভাপতির এসব দুর্নীতি ও অনিয়মের প্রতিবাদ করায় তাকে (এম.আর নাসির) বিভিন্নভাবে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল।
অভিযোগ করে তিনি আরো বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না’ ইতিমধ্যেই আমাকে এমন এক উদ্ভুত নোটিশ ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। সভাপতির ব্যক্তিগত আচরণ ও নোটিশের ভাষা দেখে মনে হয়, ‘যেন আমি প্রেসক্লাবের কর্মচারী, আর ওনি আমার নিয়োগকর্তা, তাই আমার বিরুদ্ধে শাস্তিমুলক ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ভাবছেন।’
এদিকে এব্যাপারে টঙ্গী প্রেসক্লাবের সভাপতি এম.এ হায়দার সরকারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এককভাবে সভাপতির যে কোন সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে এবং সদস্যরা আমাকে সেই ক্ষমতা দিয়েছেন। এখন উদ্দেশ্যেমূলকভাবে আমার কর্মকান্ডের সমালোচনা ও নানা প্রশ্ন উত্থাপন করা হচ্ছে। সংগঠন পরিচালনায় কারোর সাথে কোন পরামর্শ করার প্রয়োজনীয়তা আছে বলে আমি মনে করি না। কারণ, আমাকে বিশ্বাস করেন বলেই সদস্যরা সর্বোচ্চ ভোট দিয়ে আমাকে নির্বাচিত করেছেন।