এই সময়ে যেভাবে নিরাপদ রাখবেন আপনার ওয়েবসাইট
গাজীপুর কণ্ঠ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক : একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে অনলাইনে টের পাওয়া যাচ্ছে সাইবার যুদ্ধের উত্তাপ। এই উত্তাপের মধ্যে হ্যাকারদের হাত থেকে ওয়েবসাইট নিরাপদে রাখা এখন চ্যালেঞ্জের বিষয় । কোনও ইস্যুকে সামনে রেখে হ্যাকাররা সক্রিয় হয়ে ওঠে অনলাইনে। কোনও সাধারণ সাইট, ব্লগ সাইট বা নিউজ সাইটে মতের আদর্শগত বা অমিল বিষয়ক কোনও তথ্য পেলে হ্যাকাররা সংশ্লিষ্ট সাইট হ্যাক করে এর প্রতিবাদ জানায়। অনেক সময় সাইট তাদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে তাদের পছন্দের কনটেন্ট প্রকাশ করে থাকে।
প্রযুক্তি বিশ্লেষকরা বলছেন, সাইটের নিরাপত্তা ব্যবস্থা দুর্বল থাকলে হ্যাকাররা তা সহজেই ভেঙে ফেলে। বেশিরভাগই সময় হ্যাকাররা অনিষ্ট করার জন্য সাইট হ্যাক করে। আবার অনেকে সাইট ফিরিয়ে দেওয়ার বিনিময়ে অর্থ চেয়ে কৌশলে যোগাযোগ করতে থাকে। হ্যাকারদের দেওয়া জায়গা অনুযায়ী অর্থ পৌঁছে দিলে সাইট ফিরিয়ে দেয়। অনেক সময় হ্যাকাররা তাদের সক্ষমতা দেখাতে সাইট হ্যাক করে ‘সাইট কর্তৃপক্ষ’কে সাইটের নিরাপত্তাজনিত দুর্বলতাগুলো দেখিয়ে দেয়। সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, বর্তমান সময়ে অনিষ্ট করতে এবং সাইট কর্তৃপক্ষকে বিপদে ফেলতেই সাইট হ্যাক করা হতে পারে। ফলে এই সময়ে ওয়েবসাইটে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী করে তোলার কোনও বিকল্প নেই।
ওয়েব সাইটের নিরাপত্তা ব্যবস্থা শক্তিশালী করতে সাইট তৈরি করতে ভালো প্ল্যাটফরম ব্যবহার করা, শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহার একেবারে প্রাথমিক সমাধান। অন্যদিকে, সাধারণ ওয়েবসাইট বা নিউজ সাইট নিরাপদ রাখার কিছু কৌশল বা পদ্ধতি অবলম্বন করা হলে নিরাপদ থাকা যাবে। এরমধ্যে আছে হেল্প টেস্ট, ওয়েবসাইট স্ক্যানিং সিস্টেমের ব্যবহার। হেল্প টেস্ট ও সফটওয়্যার স্ক্যানিং কৌশল প্রয়োগ করলে সাইটের দুর্বলতাগুলো চিহ্নিত করা যায়।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (ডিআইইউ) সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান ও সাইবার নিরাপত্তা গবেষক ড. তৌহিদ আই. ভূইয়া বলেন, ‘ওয়েবসাইটে নিরাপত্তা ত্রুটি থাকলে এবং যেখানে সাইটটি হোস্ট করা সে জায়গাটা অনিরাপদ থাকলে হ্যাকাররা সহজে সাইট হ্যাক করতে পারে। এসব দোষে দুষ্ট সাইট হ্যাক করার জন্য হ্যাকার হওয়ার দরকার নেই। সফটওয়্যারের বিভিন্ন টুলস দিয়েই সেসব সাইট হ্যাক করা সম্ভব।’ তিনি ওয়েবসাইটগুলোকে নিয়মিত ‘হেল্প টেস্ট’ করার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, ‘হেল্প টেস্ট করা হলে সাইটগুলোর দুর্বলতা চিহ্নিত করে তাতে শক্তিশালী নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তুললে হ্যাকাররা সহজে আর সাইটগুলো হ্যাক করতে পারবে না।’
অন্যদিকে, স্ক্যানিং সফটওয়্যার বিষয়ে রাফু সফটের প্রধান নির্বাহী রাফায়েত হোসেন রাফু বলেন, ওয়েব সাইট স্ক্যান করেও সমস্যা চিহ্নিত করা যায়। এরকম একটি সফটওয়্যার রয়েছে। এই স্ক্যানারটির নাম ওয়েবসাইট স্ক্যানিং অ্যান্ড সিকিউরিটি সলিউশন (ডাব্লিউ ট্রিপল-এস)। এটা দিয়ে যেকোনও সাইট স্ক্যান করলে সাইটের দুর্বলতা,ভালনারিবিলিটি ধরা পড়ে। এসব সমস্যা সাইট ডেভেলপারদের দিয়ে ঠিক করিয়ে নেওয়া যায়। ফলে সাইট হয় সুরক্ষিত।’
সংশ্লিষ্টরা বলেন, ওয়েবসাইটগুলোতে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা, পেশাদার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের দিয়ে রক্ষণাবেক্ষণ করা, সার্ভার নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা এবং শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহার করলে হ্যাকাররা সহজে কোনও সাইট হ্যাক করতে পারে না।
সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন