আন্তর্জাতিক

কাশ্মীরে ঢুকতেই দেয়া হলো না রাহুল গান্ধীকে

গাজীপুর কণ্ঠ, আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারত-শাসিত জম্মু কাশ্মীরের পরিস্থিতি সরেজমিনে দেখতে যাওয়া শীর্ষ বিরোধী নেতাদের বিমানবন্দর থেকেই ফেরত পাঠিয়ে দিয়েছে প্রশাসন। তাদের বিমানবন্দরের বাইরেও পা রাখতে দেওয়া হয় নি।

কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী, জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী গুলাম নবি আজাদ, আনন্দ শর্মা, সিপিআইএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি, তৃণমূল কংগ্রেসের দীনেশ ত্রিবেদীসহ দশ জন নেতা শনিবার দিল্লি থেকে শ্রীনগর রওনা হয়েছিলেন।

সকালেই টুইট করে কংগ্রেস দল জানিয়েছিল যে ৩৭০ ধারা বিলোপের পরে কাশ্মীরের কী পরিস্থিতি তা খতিয়ে দেখতেই বিরোধী নেতারা সেখানে যাচ্ছেন।

তবে জম্মু-কাশ্মীরের প্রচার বিভাগও টুইট করে শুক্রবার রাতেই জানিয়েছিল যে ওই সিনিয়র নেতারা যেন কাশ্মীরে আসার পরিকল্পনা থেকে বিরত থাকেন।

ডিরেক্টরেট অফ ইনফরমেশন এন্ড পাবলিক রিলেশনস তাদের টুইটে লিখেছিল, “সীমানা-পারের সন্ত্রাসবাদ আর জঙ্গি হামলা আর বিচ্ছিন্নতাবাদীদের থেকে জম্মু-কাশ্মীরের মানুষকে রক্ষা করার চেষ্টা করছে সরকার। ধীরে ধীরে শান্তি ফেরানোরও প্রচেষ্টা চলছে। তারা এলে যেসব বিধিনিষেধ আরোপিত রয়েছে, সেগুলো ভঙ্গ করবেন তারা।”

এই পরিস্থিতিতে যে বিরোধী নেতাদের বিমানবন্দরের বাইরে বেরুতে দেয়া হবে না, এটাই অবশ্য মনে করা হচ্ছিল।

শুধু এই প্রথম নয়, এর আগেও রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী গুলাম নবি আজাদকে দু’বার বিমানবন্দর থেকে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে।

শনিবার সকালে যাত্রা শুরুর আগে তিনি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “যদি পরিস্থিতি স্বাভাবিকই থাকবে তাহলে বিরোধী নেতাদের সেখানে যেতে বাধা দেওয়া হচ্ছে কেন? কেন দুজন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে আটক করে রাখা হয়েছে?”

“ওখানে তো আমার বাড়ি। নিজের বাড়িতেও যেতে পারব না আমি?”

প্রতিনিধি দলের সদস্য সিপিআইএম নেতা সীতারাম ইয়েচুরি ও সিপিআই নেতা ডি রাজা সহ আরও অনেক নেতাকেই এর আগেও বিমানবন্দর থেকেই ফিরিয়ে দিয়েছে প্রশাসন।

প্রতিনিধি দলের আরেক সদস্য শারদ যাদব বলেন, “আমরা ওখানে কোন আইনটা ভাঙ্গতে যাচ্ছি? জম্মু কাশ্মীরের মানুষও তো আমাদের দেশেরই মানুষ। সেখানে আমার দলের নেতা কর্মীরাও আছেন। আগেও তো তাদের সঙ্গে বৈঠক করতে গেছি আমি!”

তিনশো সত্তর ধারা বিলোপের পরেই যখন রাহুল গান্ধী একের পর এক প্রশ্ন তুলছিলেন, টুইট করছিলেন, তখন ভারত শাসিত জম্মু-কাশ্মীরের রাজ্যপাল সত্যপাল মালিক নিজেই টু্‌ইট করে বলেছিলেন, সেখানকার পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে, রাহুল কাশ্মীর গিয়ে দেখে আসতে পারেন। প্রয়োজনে বিমানও পাঠিয়ে দেওয়া হবে তার শ্রীনগরে যাওয়ার জন্য।

রাজ্যপালের ওই আমন্ত্রণ লুফে নেন রাহুল গান্ধী। তিনি বলেন, বিমানের প্রয়োজন নেই। শুধু বিরোধী দলের কয়েকজন নেতাকে সঙ্গে নিয়ে তিনি কাশ্মীরে যেতে চান, সেখানকার মানুষের সঙ্গে কথা বলতে চান।

“কোনও শর্ত চাপাচ্ছি না। কবে যেতে পারি আমরা?” প্রশ্ন করেছিলেন রাহুল গান্ধী।

তারপরে অবশ্য রাজ্যপাল কিছুটা ঘুরিয়ে সেই আমন্ত্রণ ফিরিয়ে নেন। জানানো হয় যেহেতু রাহুল গান্ধী কয়েকটি শর্ত রেখেছেন, তাই প্রশাসন সিদ্ধান্ত নেবে এ ব্যাপারে।

এদিকে শ্রীনগর বিমানবন্দরে বিরোধী নেতাদের আগমন উপলক্ষ করে হাজির হওয়া সংবাদকর্মীদের সঙ্গে নিরাপত্তাবাহিনী দুর্ব্যবহার করেছে বলে অভিযোগ উঠছে।

শ্রীনগর বিমানবন্দর সামরিক বিমানবন্দর, তাই সেখান থেকে সরাসরি রিপোর্টিং করা যাবে না বলে জানায় নিরাপত্তাবাহিনী। তা নিয়ে প্রতিবাদ করলেই তাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হয় বলে অভিযোগ করছেন বেশ কয়েকটি টিভি চ্যানেলের সাংবাদিকরা।

এরকম আরও খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button