জেএমবি-সংশ্লিষ্টতা: নিরাপত্তা ঝুঁকিতে গাজীপুর জেলা প্রশাসন!
বার্তাবাহক ডেস্ক : গাজীপুরের অতিরিক্ত ভূমি অধিগ্রহন কর্মকর্তা (এলএও) আনোয়ারুল আজমের ছেলে জেএমবি-সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে আইন শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হওয়াকে জেলা প্রশাসক ‘অনাকাঙ্খিত’ ও ‘ জেলা প্রশাসনের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে’ মন্তব্য করে ওই কর্মকর্তার জরুরিভিত্তিতে অন্যত্র বদলী/পদায়নের জন্য অনুরোধ করে ভূমি মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেন।
ওই চিঠিতে জেলা প্রশাসক ‘ভবিষ্যতের জন্য নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি করবে’ উল্লেখ করা ছাড়াও জেএমবি কর্তৃক আদালত চত্বর ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে দুই দফা আত্মঘাতি বোমা হামলার কথা স্মরণ করিয়ে দেন।
২০০৫ সালের ২৯ নভেম্বর ও ১ ডিসেম্বরের ওই হামলায় ৮ জন আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থী নিহত এবং ২৫ জন আহত হন।
জেলা প্রশাসক ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর গত ২৯ নভেম্বর অতিরিক্ত এলএওকে বদলী/পদায়নের অনুরোধ করে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে চিঠি (স্মারক নং ০৫.৪১.৩৩০০.০০৯.১৪.০২৮.১৬-৪১০২ (সং)) দেন। এর পর ২১ দিন অতিবাহিত হলেও মন্ত্রণালয় থেকে কোন ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়নি। গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বহাল তবিয়তে অফিস করেছেন আনোয়ারুল আজম।
প্রসঙ্গত র্যাব গত ২৫ নভেম্বর রাজধাণীর বিভিন্ন এলাকা থেকে ওই কর্মকর্তার ছেলে আরাফাত আজমসহ ৮ জনকে গ্রেপ্তার করে। র্যাবের ভাষ্যমতে গ্রেপ্তাররা নিষিদ্ধ সংগঠন জেএমবি’র র্যাডিক্যাল ইয়ুথ গ্রুপের সদস্য। ২০১৬ সালে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগ থেকে পাস করে আরাফাত আজম অন-লাইনভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ‘পাঠাও’-তে আইটি বিশেষজ্ঞ হিসাবে কর্মরত ছিল। নিহত জঙ্গি নেতা তামিম চৌধুরীর গ্রুপের সক্রিয় সদস্য বাশারুজ্জামান চকলেট সঙ্গে তার যোগাযোগ ছিল বলেও জানায় র্যাব। সে ২০১৪-২০১৫ সালে জেএমবিতে যোগ দেয়।
ছেলের বিষয়ে নিজ দপ্তরে বসে আনোয়ারুল আজম ছেলেকে নির্দোষ দাবি করে বলেন, ছেলে পুর্ণবয়ষ্ক। সে আলাদা ট্যাক্স দেয়, আলাদা টিআইএন নম্বর আছে। সে ধর্মভীরু কিন্তু কোন অবস্থায় নিষিদ্ধ কোন তৎপরতার সঙ্গে যুক্ত নয়। তিনি মনে করেন একই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সিয়ামের সঙ্গে যোগাযোগ থাকার সূত্র ধরে র্যাব তার ছেলেকে গ্রেপ্তার করেছে। ইতিপূর্বে র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার সিয়াম বর্তমানে জামিনে রয়েছে।
জেলা প্রশাসকের চিঠির বিষয়ে আনোয়ারুল আজম কোন মন্তব্য করতে বাজি হননি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গাজীপুর ভূমি অধিগ্রহণ শাখার একটি সূত্র জানায়, সার্ভেয়ার ফারুক আহমেদের সাথে আনোয়ারুল আজমের দহরম-মহরম সম্পর্ক রয়েছে। তারা দু’জন ভূমি অধিগ্রহণ শাখায় সিন্ডিকেট করে অবৈধ পন্থায় অর্থ উপার্জন করে। ওই অর্থ আরাফাত আজমের মাধ্যমে নিষিদ্ধ সংগঠন জেএমবিকে প্রদান করেন বলে তাদের ধারণা।
তথ্যসূত্র: মক্ত সংবাদ