হঠাৎ করে এক প্রফেসর সাহেব কী পরীক্ষা চালালেন: প্রধানমন্ত্রী
গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : বাজারে পাস্তুরিত দুধের সংকটের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ‘আমি জানি না হঠাৎ করে একজন প্রফেসর সাহেব কী পরীক্ষা চালালেন, আর এই পরীক্ষার ওপর ভিত্তি করে আদালতে রিট হলো। একে একে সব কোম্পানির দুধ উৎপাদন বন্ধ। এর ফলে দুধের ঘাটতিতে পড়েছে সাধারণ মানুষ। আবার যারা খামার করছে তারাই বা কীভাবে জীবনযাপন করবে আর গরুকেই বা কী খাওয়াবে। আমদানিকৃত গুঁড়ো দুধের ব্যাপারে কোনও পরীক্ষা হয় না। তাই গুঁড়ো দুধ আমদানিকারকদের কোনও কারসাজি এখানে আছে কি-না সেটিই এখন বড় প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে।’
মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) টেলি-কনফারেন্সের মাধ্যমে লন্ডন থেকে ঢাকায় আওয়ামী লীগের বিশেষ জরুরি সভায় যোগ দিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। দুধ ইস্যু ছাড়াও তিনি ডেঙ্গু, বন্যা, গুজব প্রতিরোধসহ বিভিন্ন ইস্যুতে নির্দেশনা দেন।
ডেঙ্গু মোকাবিলায় করণীয় ঠিক করতে আওয়ামী লীগ এই জরুরি সভার আয়োজন করে। সভা চলাকালে প্রধানমন্ত্রী দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের মোবাইল ফোনে কল করে টেলি-কনফারেন্সের মাধ্যমে সবার উদ্দেশে কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘গবাদি পশুকে রোগমুক্ত রাখতে অনেক সময় অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ানো হয়। সেক্ষেত্রে দুধে কিছুটা অ্যান্টিবায়োটিকের উপস্থিতি থাকতে পারে। তবে দুধের যে সংকট সৃষ্টি হয়েছে, তা থেকে পরিত্রাণ পেতে সরকার কাজ করছে।’
উল্লেখ্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োমেডিক্যাল রিসার্চ সেন্টারের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক আ ব ম ফারুক বাজারে সহজলভ্য পাস্তুরিত দুধে দুই দফা পরীক্ষা চালিয়ে অ্যান্টিবায়োটিকের উপস্থিতি শনাক্ত করেছেন। এ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশের পর নানা মহলের রোষানলে পড়েন তিনি। গবেষণা নিয়ে আলোচনা হয় সংসদেও। দুধের প্রতিবেদন নিয়ে নানা মহল থেকে তাকে চাপ দেওয়া হয় বলেও গণমাধ্যমে অভিযোগ করেন অধ্যাপক ফারুক। এ নিয়ে হাইকোর্টে রিটও হয়।
এদিকে আদালতের নির্দেশ অনুসারে বিএসটিআই এর লাইসেন্স পাওয়া পাস্তুরিত দুধের নমুনা পরীক্ষা করে বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদের ল্যাবরেটরি, জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের ন্যাশনাল ফুড সেফটি ল্যাবরেটরি এবং বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট জানায়, এসব নমুনায় সিসা ও অ্যান্টিবায়োটিকের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। এসব প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে গত রবিবার (২৮ জুলাই) হাইকোর্ট ১৪টি কোম্পানির পাস্তুরিত দুধের উৎপাদন, সরবরাহ, ক্রয়-বিক্রয় আগামী পাঁচ সপ্তাহের জন্য স্থগিত ঘোষণা করেন। তবে এরই মধ্যে কয়েকটি দুধ বাজারজাত করার ওপর নিষেধাজ্ঞার আদেশ হাইকোর্ট স্থগিত করেছেন।