আলোচিতজাতীয়

আ. লীগের দুই মেয়াদে ২০ লাখ কোটি টাকার উন্নয়নের রেকর্ড

গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের দুই মেয়াদের শাসনামলে দেশে উন্নয়ন হয়েছে ২০ লাখ কোটি টাকারও বেশি। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর এটি উন্নয়নের রেকর্ড। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সূত্রে এমন তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানিয়েছে, গত ১০ অর্থবছরে (২০০৯ সালের ১৩ জানুয়ারি থেকে শুরু করে ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর) মোট উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন করা হয়েছে ২ হাজার ৩০৮টি। এই বিপুলসংখ্যক প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে ২০ লাখ ৬৮ হাজার ৮৭৭ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। তবে এর মধ্যে ১০ অর্থবছরে (২০০৯ সালের ১৩ জানুয়ারি থেকে শুরু করে ২০১৮ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত) মোট ২ হাজার ১৩৫টি প্রকল্প বাস্তবায়নে মোট ব্যয় অনুমোদন করা হয়েছে ১৭ লাখ ৮২ হাজার ৯০৪ কোটি টাকা।

আর ২০১৮-১৯ অর্থ বছরের প্রথম ছয় মাসে (২০১৮ সালের ১ জুলাই থেকে ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত) প্রকল্প অনুমোদনের সংখ্যা ১৭৩টি। এই ১৭৩টি প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় হচ্ছে ২ লাখ ৮৫ হাজার ৯৭৩ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি—একনেকের বৈঠকে এসব প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনার সভাপিতত্বে এই ১০ বছরে মোট একনেক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে ১৫১টি। এসব সভায় সরকারের ফার্স্ট ট্র্যাকভুক্ত প্রকল্পগুলো অনুমোদন পেয়েছে। যেগুলোর মধ্যে রয়েছে পদ্মা সেতু, পদ্মা সেতুতে রেল সংযোগ, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, মেট্রোরেল, মাতারবাড়ী বিদ্যুৎকেন্দ্র, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র, রামু-মিয়ানমারের কাছে ঘুমধুম পর্যন্ত সিঙ্গেল লাইন ডুয়েল গেজ ট্র্যাক নির্মাণ, এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণ, পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দর এবং সোনাদিয়া গভীর সমুদ্রবন্দর প্রকল্প।

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় এসে ২০০৮-০৯ অর্থবছরের (২০০৯ সালের ১৩ জানুয়ারি শুরু) ৬৯ প্রকল্পে ব্যয় অনুমোদন করে ১৩ হাজার ৭৮৩ কোটি টাকা। ২০০৯-১০ অর্থবছরে ২২৫টি প্রকল্পে ব্যয় অনুমোদন হয় ৮০ হাজার ৪৬৯ কোটি টাকা। এর পরের অর্থবছরই প্রথমবারের মতো প্রকল্প ব্যয় অনুমোদন এক লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায়। ২০১০-১১ অর্থবছরে ২৫০ প্রকল্পে ব্যয় অনুমোদন হয় ১ লাখ ১২ হাজার ১২৬ কোটি টাকা।

২০১১-১২ অর্থবছর ১৬৮ প্রকল্পে ব্যয় অনুমোদন হয় এক লাখ ৬১ হাজার ২৬০ কোটি টাকা। ২০১২-১৩ অর্থবছরে ১৫১ প্রকল্পে ব্যয় অনুমোদন হয় ১ লাখ ৬ হাজার ৪০৬ কোটি, ২০১৩-১৪ অর্থবছর ২১২ প্রকল্পে এক লাখ ২১ হাজার ৯৬২ কোটি এবং ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ২১২ প্রকল্পে ১ লাখ ৬৩ হাজার ৯৯২ কোটি টাকার অনুমোদন দেওয়া হয়।

২০১৫-১৬ অর্থবছরে ২৭৮ প্রকল্পের বিপরীতে ব্যয় অনুমোদন হয় ২ লাখ ৭১ হাজার ৯৪৯ কোটি টাকা। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ২৫২ প্রকল্পের বিপরীতে ৩ লাখ ৮৪ হাজার ৫২৮ কোটি টাকা এবং সদ্যসমাপ্ত ২০১৭-১৮ অর্থবছরে সর্বোচ্চ ৩১৮ প্রকল্পের বিপরীতে ৩ লাখ ৬৬ হাজার ৪২৯ কোটি টাকার ব্যয় অনুমোদন দেয় একনেক। এ ছাড়াও ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে (১ জুলাই থেকে ৭ নভেম্বর পর্যন্ত) অনুষ্ঠিত ১৪টি একনেক সভায় মোট প্রকল্প অনুমোদন হয়েছে ১৭৩টি। এর বিপরীতে ব্যয় ধরা হয়েছে ২ লাখ ৮৫ হাজার ৯৭৩ কোটি ৫৪ লাখ টাকা।

জানতে চাইলে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ‘শেখ হাসিনার সরকার উন্নয়নমুখী সরকার। উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বাজায় থাকার কারণে উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে মনোযোগ বাড়ানো সম্ভব হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘দেশের এমন কোনও জায়গা পাওয়া যাবে না যেখানে সরকারের উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। এখন সময় এসেছে টেকসই উন্নয়নের প্রতি নজর দেওয়ার। আগামীতে ক্ষমতায় এলে অবশ্যই এ বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হবে।’

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে বর্তমান সরকারের প্রথম মেয়াদে অনুমোদিত প্রকল্প ব্যয়ের পরিমাণ ৪ লাখ ৪৯ হাজার ৮৩০ কোটি টাকা। দ্বিতীয় মেয়াদে ১ হাজার ১৩৫টি উন্নয়ন প্রকল্পের বিপরীতে অনুমোদন হয়েছে ১৩ লাখ ৩৩ হাজার ৭৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ব্যয় ধরা হয়েছে ৭ লাখ ৮৩ হাজার কোটি টাকা, বৈদেশিক সহায়তা থেকে ৫ লাখ ১৩ হাজার কোটি এবং বাস্তবায়নকারী সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে ৩৭ হাজার কোটি টাকা। যদিও ২০০৫-০৬ অর্থবছরে মোট ৪৩ প্রকল্পে ব্যয় হয়েছিল মাত্র ১০ হাজার ৪২৪ কোটি টাকা।

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের দাবি, বড় ধরনের পরিবর্তনের মাধ্যমে স্বপ্ন বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে শুরুতে কিছুটা সক্ষমতার অভাব থাকলেও এখন যেকোনও প্রকল্প বাস্তবায়নে শতভাগ সক্ষমতা অর্জন করেছে বাংলাদেশ। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের অর্থনীতি একটি টেকসই গতিশীলতার মধ্যে এসেছে। সেই গতিশীলতা ধরে রাখতে উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণে সবসময়ই পিছিয়ে পড়া এলাকা, প্রান্তিক মানুষের ভাগ্যোন্নয়নের পাশাপাশি সব জনগোষ্ঠীর উন্নয়নকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী দেশের মানুষকে যে স্বপ্ন দেখিয়েছেন, সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় কাজ করে যাচ্ছে। এ জন্য ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার মেয়াদে অর্জিত অর্থনৈতিক ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের সাফল্যের ধারাবাহিকতায় সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা প্রণয়ন হয়েছে। এতে এমডিজি পরবর্তীতে জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রায় (এসডিজি) অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। এর মাধ্যমে ২০২১ সালের আগেই মধ্যম আয়ের দেশে উত্তরণ এবং ২০৪১ সালে উন্নত দেশে পরিণত হওয়ার নীতি-কৌশল ও লক্ষ্য বাস্তবায়ন হচ্ছে। উন্নয়ন প্রকল্পও গ্রহণ করা হচ্ছে সেভাবেই।

জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, ‘বর্তমান সরকার জনগণের সরকার। উন্নয়নের সরকার। এই প্রকল্পগুলো যখন শতভাগ বাস্তবায়ন হবে তখন বাংলাদেশ হবে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ।’

সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন

এরকম আরও খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
A tűzhely zsírtalanítása: egy csipetnyi termék segítségével eltávolíthatja Hogyan szabadulhat meg hatékonyan a fehér csíkoktól cipőjén? A megoldás Miért van szükség a kutyáknak ruhákra: nem csak Az "Olyan jellemvonásokat Hogyan reagálj, Vízkereszt alkalmából a jéglyukban 1. Miért választják a macskák Az orvosok figyelmeztetnek: milliók halhatnak az antibiotikum-rezisztencia miatt Amikor érzi, hogy ideje orvoshoz fordulnia: Miért Vajon miért nyalogatja a macska gazdáját? A macska viselkedésének rejtélyei