শ্রীপুরে পাঁচ বছর ধরে বেহাল সড়কে দুর্ভোগ মাথায় নিয়েই চলাচল করছে মানুষ
গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : মহাসড়ক থেকে বের হওয়া আঞ্চলিক সড়কটি তিনটি উপজেলাকে যুক্ত করেছে। কিন্তু এর প্রবেশমুখ থেকে পুরো সড়কই বড় বড় গর্তে ভরা। যান চলাচলে দুর্ঘটনাও ঘটছে হরহামেশাই। দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ মাথায় নিয়ে এ সড়ক ধরে চলাচল করছে মানুষ।
বলা হচ্ছে শ্রীপুর উপজেলার জৈনাবাজার থেকে শৈলাট গাজীপুর সড়কের কথা।
১৩ জুলাই প্রথম আলো- পত্রিকায় প্রকাশিত ‘শ্রীপুরে বেহাল সড়কে মানুষের বারোটা’ শীর্ষক এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সড়কটি জৈনাবাজার থেকে শৈলাট গাজীপুর হয়ে পাশের জেলা ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার বাটাজোর ও টাঙ্গাইল জেলার সখীপুর উপজেলাকে যুক্ত করেছে।
এটি পাঁচ বছর আগে সংস্কার করা হলেও কিছুদিনের মধ্যেই তা দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। পুরো সড়কের বেশির ভাগ স্থানের পিচ উঠে যায়। পানি জমে বড় বড় গর্তে ভরে যায় ১২ কিলোমিটারের বেশির ভাগ।
নগরহাওলা পর্যন্ত সড়কের দুর্দশা সবচেয়ে বেশি। এ নিয়ে স্থানীয় লোকজনের অভিযোগের অন্ত নেই।
গাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের আগ্রহ থাকলে সড়কটি এত দিন অবহেলায় পড়ে থাকার কথা নয়—এমন মন্তব্যও করেছেন অনেকে। কেউ কেউ বলছেন, সড়কটির দুর্দশার কথা কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছানোর মানুষ নেই।
সড়কের ছবি তুলতে গেলে ‘ছবি তুইলা কী অইবো, কোনো কাজে তো লাগে না। কাজ তো হয় না’ বলে মন্তব্য করেন জৈনাবাজারের বাচ্চু মিয়া নামের এক ব্যবসায়ী। প্রায় একই ধরনের মন্তব্য করেন জৈনাবাজার এলাকার মাহবুবুল আলম। তিনি বলেন, এ সড়কে কোনো কাজ হয় না। এ সড়কে প্রায় প্রতিদিন গাড়ি উল্টে যায়। এক্সেল ভেঙে গাড়ি চার-পাঁচ দিন পড়ে থাকে, অটোরিকশা নষ্ট হয়। আর বৃষ্টি হলে সড়কটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে।
স্থানীয় হারুন মিয়া জানান, পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে এই সড়কে জনদুর্ভোগ। কেউ নজর দিচ্ছে না।
নগরহাওলা এলাকার আনোয়ার হোসেন নামের এক ব্যক্তি জানান, কিছুদিন আগে বৃষ্টির পর এক দিনে তিনটি গাড়ি সড়কের জৈনাবাজার অংশে বিকল হয়ে পড়ে। দিনভর চেষ্টায় তা সরিয়ে নেওয়া হয়।
জৈনাবাজার এলাকার জজ মিয়া বলেন, ‘চেয়ারম্যান তো এদিকে আসেন না। এ সড়কের দুর্ভোগের কথা কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছানোর মানুষ আমাদের নেই।’
সরেজমিনে দেখা যায়, সড়কটির আশপাশে অনেকগুলো শিল্পকারখানা। সড়কটি ধরে জৈনাবাজার হয়ে ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার বাটাজোড় ও টাঙ্গাইলের সখীপুর পর্যন্ত যাওয়া যায়। এভাবেই সড়কটি ভালুকা, শ্রীপুর ও সখীপুরকে যুক্ত করেছে। ফলে সড়কটিতে প্রতিদিন প্রচুর হালকা ও ভারী যান চলাচল করে। ভাঙাচোরা অংশে গাড়িগুলোকে খুব ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে দেখা যায়। গর্তগুলো এতটাই গভীর যে সেখানে ছোট যানগুলোকে অত্যন্ত ধীরগতিতে চলাচল করতে দেখা যায়।
এ বিষয়ে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম বলেন, ‘সড়কটিতে মানুষকে চরম কষ্ট করে চলাচল করতে হচ্ছে। আমার এলাকার সড়কটি নিয়ে আমি নিজে খুব বিব্রত। সম্প্রতি একটি বরাদ্দ হয়েছিল। কিন্তু তা বাতিল করে আরও ভালোভাবে করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জেনেছি।’ তিনি বলেন, ‘এই সড়কের বিষয়ে আমি সব সময়ই তৎপর ছিলাম। এ বিষয়ে আমার আগ্রহের কমতি নেই।’
এ বিষয়ে শ্রীপুর উপজেলা প্রকৌশলী শরিফুজ্জামান বলেন, ‘সড়কটি সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রাক্কলন পাঠানো হয়েছে। দু-তিন মাসের মধ্যে কাজ শুরু হবে বলে আশা করছি। সড়কটিকে আরও বেশি টেকসই করে সংস্কার করা হবে।’