গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : এক দশক আগে ‘অভিমান করে’ মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়েছিলেন জাতীয় চার নেতার অন্যতম তাজউদ্দীন আহমদের পুত্র সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তানজিম আহমদ সোহেল তাজ। এরও দুই বছর পর সংসদ সদস্য পদ থেকেও পদত্যাগ করে রাজনীতিতে আর না জড়ানোর কথা বলেছিলেন। তবে রক্তে যেহেতু রাজনীতি তাই তিনি আবারো ফিরছেন তার ঘর আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে। আগামী কাউন্সিলের মাধ্যমেই এই প্রত্যাবর্তন হতে পারে বলে বলছে দলটির একাধিক সূত্র।
সোহেল তাজের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানিয়েছে, রাজনীতিতে আসার ইচ্ছে হারিয়ে ফেলেছিলেন তিনি। তবে ফের রাজনীতিতে আসার বিষয়ে এখন বেশ ইতিবাচক সোহেল তাজ। আওয়ামী লীগের রাজনীতির বাইরে তিনি কখনো ছিলেন না। প্রত্যক্ষভাবে দলের সঙ্গে না থাকলেও পরোক্ষভাবে সবসময়ই ছিলেন। যেহেতু তিনি রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান, রাজনীতি থেকে দূরে থাকতে পারেন না। ফের রাজনীতিতে সক্রিয় হলে তাতে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।
অনেকদিন পর সোমবার রাতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে আসেন সোহেল তাজ। এ সময় তাকে বেশ প্রফুল্ল ও ইতিবাচক দেখা গেছে। এরপর থেকেই মুলত দলে শুঞ্জন ওঠে তাহলে কি ফিরছেন সোহেল তাজ? তবে দলীয় সূত্রে জানা গেছে, কার্যালয়ে সোহেল তাজ প্রায় ১০ মিনিটের মতো অবস্থান করেন। পরে তিনি দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের হাতে ছেলের বিয়ের কার্ড তুলে দেন।
২০০৮ সালের নির্বাচনে গাজীপুর-৪ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন সোহেল তাজ। ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি সোহেল তাজ স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব নিলেও ২০০৯ সালের ৩১ মে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেন। পরে চলে যান সুদূর যুক্তরাষ্ট্রে। ২০১২ সালের ৭ জুলাই সংসদ সদস্য পদ থেকেও পদত্যাগ করেন।
রাজনীতিতে না জড়ানোর কথা বললেও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গাজীপুর ৪ আসনে বোন সিমিন হোসেন রিমির নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব পালন করেন। বোনের নির্বাচন উপলক্ষ্যে দীর্ঘদিন পর এলাকাবাসী সোহেল তাজকে পেয়ে বেশ খুশিই হন। মুলত এরপর থেকেই আলোচনা জোরালো হতে থাকে রাজনীতিতে ইউটার্ন করছেন তিনি। সর্বশেষ আওয়ামী লীগের ২০ তম কাউন্সিলে সোহেল তাজ দলীয় পদ পাচ্ছেন- এমন খবর ছড়িয়ে পড়লেও শেষ পর্যন্ত রাজনীতির মাঠে তার দেখা মেলেনি। তবে দলীয় সূত্র বলছে, এবার দলের ২১তম কাউন্সিলে আওয়ামী লীগ তরুণ নির্ভর কমিটির দিকে ঝুঁকছে। কাউন্সিলে দলের নতুন পদ পেতে পারেন এই তরুণ নেতা।
দলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সোহেল তাজকে খুবই পছন্দ করেন আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত এপ্রিলে গণভবনে সোহেল তাজ যখন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে যান তখন তাকে পরম মমতায় বুকে জড়িয়ে নেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী নিজেও চান না সোহেল তাজ রাজনীতির বাইরে থাকুক।
রাজনীতিতে ফিরে আসার ব্যাপারে জানার জন্য সোহেল তাজের ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। তার ব্যবহৃত ফোনটি বন্ধ পাওয়া গেছে।
তবে এ সম্পর্কে তার এপিএস আবু কাওসার জানান, রাজনীতির পরিবার থেকে তিনি (সোহেল তাজ) উঠে এসেছেন। রাজনীতি তার রক্তে বইছে। রাজনীতির বাইরে কার্যত তিনি থাকতে পারেন না। সুতরাং যে কোনো সময়ে তার রাজনীতিতে ফেরার সম্ভবনা রয়েছে।
ব্যক্তিগত জীবনে সোহেল তাজের এক ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে। ছেলে ব্যারিস্টার তুরাজ আহমদের বিয়ে হচ্ছে ড. বদিউজ্জামান ভূঁইয়া এবং ড. আবিদা সুলতানা ইভার একমাত্র কন্যা লাবিবা জামানের সঙ্গে।
সূত্র: রাইজিংবিডি