জাতীয়

কর্তৃত্ববাদী শাসনে অনিশ্চিত গন্তব্যে বাংলাদেশ: মাহবুব তালুকদার

গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : কর্তৃত্ববাদী শাসনে অনিশ্চিত গন্তব্যে এগোচ্ছে বাংলাদেশ এমন মন্তব্য করেছেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার। তিনি বলেছেন, একটি গণতান্ত্রিক দেশ ও জাতির জন্য নির্বাচনবিমুখতা অশনিসংকেত। নির্বাচনবিমুখতা জাতিকে গভীর খাদের দিকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। কর্তৃত্ববাদী শাসনে অনিশ্চিত গন্তব্যে বাংলাদেশ। এই অবস্থা কখনও কাম্য হতে পারে না।

পাঁচ ধাপে এবারের উপজেলা নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। উপজেলা নির্বাচন সম্পর্কে সাংবাদিকরা মাহবুব তালুকদারের অভিমত জানতে চাইলে, লিখিত বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।

মাহবুব তালুকদার বলেন, “সংবিধানে ‘স্থানীয় শাসন’ শিরোনামে একটি সম্পূর্ণ পৃথক অনুচ্ছেদের ৫৯(১) ধারায় বলা হয়েছে, ‘আইন অনুযায়ী নির্বাচিত ব্যক্তিদের সমন্বয়ে গঠিত প্রতিষ্ঠানসমূহের ওপর প্রজাতন্ত্রের প্রত্যেক প্রশাসনিক একাংশের স্থানীয় শাসনের ভার প্রদান করা হইবে।’ এতে প্রতীয়মান হয় স্থানীয় সরকারের প্রতিটি স্তরে নির্বাচিত চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও সদস্যবর্গ প্রশাসনিক ও অন্যবিধ দায়িত্ব পালন করবেন। স্থানীয় সরকারে কোনো বহিরাগতের হস্তক্ষেপের অবকাশ নেই। অন্য কারো হস্তক্ষেপ হলে উপজেলা নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু স্বাভাবিক ও শুদ্ধ হবে না। এমতাবস্থায় স্থানীয় নির্বাচন বা উপজেলা নির্বাচন সংবিধানসম্মতভাবে হয়েছে কি না, প্রশ্ন থেকে যায়।”

“উপজেলা নির্বাচন সংসদ সদস্যদের আওতামুক্ত না হলে তা কখনও অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। তাদের উপদেষ্টার ভূমিকা উপজেলা পরিষদের কৌলীন্য বিনষ্ট করেছে। অনেক সংসদ সদস্য কেন আচরণবিধি লঙ্ঘন করে পছন্দের প্রার্থীকে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে বসাতে চান, কখনও বা নিজ দলের মনোনীত প্রার্থীর বিপক্ষে অবস্থান নেন, এ প্রশ্নের সমাধান না পেলে উপজেলা নির্বাচন তাদের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ প্রভাবের কবলে পড়বেই। কোনো কোনো সংসদ সদস্য আচরণবিধি লঙ্ঘন করায় নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে বা সংসদ সচিবালয়ের পক্ষ থেকে চিঠি পাঠিয়ে তাদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করতে হয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, “যথোপযুক্ত নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্রকে অবশ্যই সমুন্নত রাখতে হবে। আমি আগেও বলেছি আমরা গণতন্ত্রের শোকযাত্রায় সামিল হতে চাই না।”

নির্বাচন কমিশনার বলেন, “বিরোধীদলগুলো অংশগ্রহণ না করায় এবারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচন ছিল একতরফা। একতরফা নির্বাচন গণতন্ত্রের জন্য শুভ নয়। গণতন্ত্রের অর্থ হচ্ছে ক্ষেত্রবিশেষে সংখ্যাগরিষ্ঠের অভিমত এবং তা বহুত্ববাদের ভেতর থেকে উৎসারিত হতে হয়। একতরফা নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠের কোন অভিব্যক্তি প্রতিফলিত হয় না বলে এর কোনো ঔজ্জ্বল্য থাকে না। নির্বাচনে সকল দলের অংশগ্রহণের ক্ষেত্র তৈরিতে উপযুক্ত পরিবেশ অপরিহার্য। কিন্তু আমরা ক্রমাগত একতরফা নির্বাচনের দিকে অগ্রসর হচ্ছি, যা গণতন্ত্রের জন্য অনভিপ্রেত।”

এরকম আরও খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button