শ্রীপুরে উচ্ছেদ অভিযানে ইউএনও’র গাড়ি ভাঙচুর, এসিল্যান্ডসহ আহত ১০
গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : শ্রীপুরে বন বিভাগের দখল করা জমি উদ্ধার অভিযানে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে উপজেলা সহকারী কমিশনারসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।
এ ছাড়া হামলাকারীরা শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএনও) গাড়িসহ তিনটি গাড়ি ও দুটি এস্কেভেটর ভাঙচুর করেছে। এ ঘটনায় দুইজনকে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) বেলা ৩টার দিকে উপজেলার ইজ্জতপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে
আহতরা হলেন- শ্রীপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আতাহার শাকিল, ইউএনওর গাড়িচালক আবদুল হানিফ, স্টাফ আশিকুর রহমান, রাজেন্দ্রপুর রেঞ্জ কর্মকর্তার গাড়িচালক লিটন, এস্কেভেটর মেশিনের অপারেটর মো. রাসেল এবং মো. হাকিমুল্লাহ্। তারা স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়েছেন। বাকিদের নাম-পরিচয় পাওয়া যায়নি।
এ ছাড়া হামলার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে আটক দুইজনের নাম-পরিচয় তাৎক্ষণিক জানায়নি পুলিশ।
বন বিভাগ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা সংবাদ মাধ্যমকে জানান, উপজেলার ৪৯ নম্বর কাফিলতলী মৌজার বনের জমি দীর্ঘদিন ধরে দখল হয়ে আসছে। ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বনের জমি দখল আরও বাড়তে থাকে।
দখল করা জায়গায় গড়ে তোলা অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নিতে কয়েকদিন ধরে এলাকায় মাইকিং করে বন বিভাগ। কিন্তু দখলদাররা বন বিভাগের জায়গা থেকে স্থাপনা সরিয়ে নিয়ে যায়নি।
মঙ্গলবার সকাল থেকে সেনাবাহিনী, র্যাব, পুলিশ, আনসার, বনকর্মী ও উপজেলা প্রশাসনের সমন্বয়ে ওই এলাকায় উচ্ছেদ অভিযান শুরু করে বন বিভাগ। অভিযানে কয়েক একর বনভূমি উদ্ধার ও বনের জায়গাতে গড়ে তোলা শতাধিক স্থাপনা গুড়িয়ে দেওয়া হয়।
ঢাকা বন বিভাগের সরকারি বন সংরক্ষণ (এসিএফ) মো. শামসুল আরেফিন সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, বেলা ৩টায় অভিযান শেষে ফেরার পথে হঠাৎ দখলদাররা একত্রিত হয়ে উপজেলা প্রশাসনের ওপর হামলা চালায়। হামলাকারীদের ছোড়া ইটপাটকেলের আঘাতে উপজেলা সহকারী কমিশনারসহ অন্তত ১০ জন আহত হন। হামলাকারীরা তিনটি গাড়ি ও দুটি এস্কেভেটর ভাঙচুর করে।
শ্রীপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আতাহার শাকিল সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, “অভিযান প্রায় শেষের দিকে, এ সময় একটি জমির মালিকানা নিয়ে রেল ও বনবিভাগের সম্পৃক্ত নিয়ে স্থানীয়রা অভিযোগ জানান। এ সময় ওই জমির অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ বন্ধ করে ফেরার পথে অতর্কিতভাবে পাশের রেল লাইন থেকে পাথর ও ইট নিক্ষেপ শুরু করা হয়।
“এক পর্যায়ে ইউএনও স্যারের গাড়ি ও আমার গাড়িতে ঢিল ছোড়া হয়। পাথরের আঘাতে এস্কেভেটর মেশিনের দুই চালক মারাত্মক আহত হয়েছেন। আমার ওপর ও ইউএনও অফিসের দুজন স্টাফের ওপর হামলা হয়েছে।”
স্থানীয় কেউ হয়ত তাদের ইন্ধন দিয়ে এমন কাজ করিয়েছে বলে দাবি উপজেলা সহকারী কমিশনারের।
শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সজিব আহমেদ সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, “হামলায় সম্পৃক্ত কয়েকজন নাম আমরা পেয়েছি। বাকিদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। এ ঘটনায় বন বিভাগ বন আইনে মামলা করবে। এ ছাড়া উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকেও মামলা করা হবে।”