আলোচিতজাতীয়

আইজিপি ও ডিএমপি কমিশনার বদল, চুক্তিভিত্তিক নতুন আইজিপি ও কমিশনার নিয়োগ

গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের তিন মাসে দ্বিতীয় দফায় পুলিশের নেতৃত্বে পরিবর্তন করে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) হিসেবে  চার বছর আগে অবসরে যাওয়া বাহারুল আলমকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিয়েছে সরকার। আর এই দায়িত্বে থাকা মো. ময়নুল ইসলামকে পুলিশ সদর দফতরে সংযুক্ত করা হয়েছে।

বুধবার (২০ নভেম্বর) বিকালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের পুলিশ-১ শাখার উপসচিব মো. মাহাবুর রহমান শেখের সই করা প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়।

অপর এক প্রজ্ঞাপনে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) নতুন কমিশনার হিসেবে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে অবসরে যাওয়া আরেক কর্মকর্তা শেখ সাজ্জাদ আলীকে। সেইসঙ্গে এই দায়িত্বে থাকা মো. মাইনুল হাসানকে পুলিশ সদর দফতরে সংযুক্ত করা হয়েছে।

এর আগে ৬ আগস্ট রাতে মো. ময়নুল ইসলামকে পুলিশের নতুন মহাপরিদর্শক (আইজিপি) হিসেবে নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ।

নতুন আইজিপি নিয়োগ দেওয়ার কথা জানিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮–এর ৪৯ ধারা অনুযায়ী বাংলাদেশ পুলিশের অবসরপ্রাপ্ত উপপুলিশ মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) বাহারুল আলমকে অন্য কোনো পেশা, ব্যবসা কিংবা সরকারি, আধা–সরকারি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান/সংগঠনের সাথে কর্ম–সম্পর্ক পরিত্যাগের শর্তে যোগদানের তারিখ থেকে দুই বছর মেয়াদে বাংলাদেশ পুলিশের পুলিশ মহাপরিদর্শক পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ প্রদান করা হলো।

ছাত্র–জনতার আন্দোলনের মুখে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর পুলিশের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সরিয়ে দেওয়া হয়। তৎকালীন আইজিপি আবদুল্লাহ আল–মামুন বর্তমানে কারাবন্দী। অতিরিক্ত আইজিপি পদমর্যাদার বেশির ভাগ কর্মকর্তাকেই চাকরি থেকে অবসর দেওয়া হয়।

সরকার পতনের পরদিন ৬ আগস্ট রাতে মো. ময়নুল ইসলামকে আইজিপি নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। তখন দেশে কোনো সরকার ছিল না। এর কিছু দিনের মধ্যে ডিএমপি কমিশনার করা হয়েছিল মো. মাইনুল হাসানকে।

এখন পুলিশপ্রধানের পাশাপাশি ডিএমপি কমিশনারের পদেও পরিবর্তন আনা হলো।

বাহারুল আলম ২০০৭–০৮ সালে এসবি প্রধানের দায়িত্বে ছিলেন। পরে পুলিশ সদর দপ্তরে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ২০০৯ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত জাতিসংঘ সদর দপ্তরের শান্তি রক্ষা বিভাগে পুলিশ লিয়াজোঁ অফিসার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ২০১৫ সালে আফগানিস্তানে জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা মিশনের সিনিয়র পুলিশ অ্যাডভাইজার হিসেবে কাজ করেন।

এর আগে ক্রোয়েশিয়া, সার্বিয়া, কসোভো ও সিয়েরা লিওনে দায়িত্ব পালন করেন বাহারুল আলম। দুই দফা পদোন্নতিবঞ্চিত এই কর্মকর্তা ২০২০ সালে অবসরে যান তিনি।

অপরদিকে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার পদে নিয়োগ পেয়েছেন শেখ মো. সাজ্জাত আলী। পুলিশের সাবেক এই অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক পুলিশ সংস্কার কমিশনের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।

বুধবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে শেখ মো. সাজ্জাত আলীকে ডিএমপি কমিশনার পদে নিয়োগ দেওয়ার কথা জানানো হয়েছে। তিনি মো. মাইনুল হাসানের স্থলাভিষিক্ত হচ্ছেন।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সরকারি চাকরি আইন ২০১৮–এর ৪৯ ধারা অনুযায়ী সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক (চলতি দায়িত্ব) শেখ মো. সাজ্জাত আলীকে অন্য যেকোনো পেশা, ব্যবসা কিংবা সরকারি, আধা সরকারি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের সঙ্গে কর্মসম্পর্ক পরিত্যাগের শর্তে যোগদানের তারিখ থেকে দুই বছর মেয়াদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ প্রদান করা হলো।

শেখ সাজ্জাত আলী সর্বশেষ পুলিশ সদর দপ্তরের অতিরিক্ত আইজিপি (চলতি দায়িত্ব) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ১৭ নভেম্বর তাঁকে চাকরিতে পুনর্বহাল করে প্রজ্ঞাপন জারি করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল-১, ঢাকার মামলা নম্বর ৩৩/২০১৭-এর ০৩–০৯–২০২৪ দেওয়া রায় অনুযায়ী সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক (চলতি দায়িত্ব) শেখ মো. সাজ্জাত আলীকে ২০১৬ সালের ৩ নভেম্বর থেকে ভূতাপেক্ষভাবে চাকরিতে পুনর্বহাল হিসেবে গণ্য করা হলো। তিনি আদালতের আদেশ অনুযায়ী সব প্রাপ্য বেতন-ভাতা ও অবসরজনিত আর্থিক সুবিধাদি প্রাপ্য হবেন।

ছাত্র–জনতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর পুলিশের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সরিয়ে দেওয়া হয়। তৎকালীন আইজিপি আবদুল্লাহ আল–মামুন বর্তমানে কারাবন্দী। অতিরিক্ত আইজিপি পদমর্যাদার বেশির ভাগ কর্মকর্তাকেই চাকরি থেকে অবসর দেওয়া হয়।

এরকম আরও খবর

Back to top button