গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : ভারতের আদানি গ্রুপকে ১৭৩ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করেছে বাংলাদেশ, বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত রাখতে। ঝাড়খণ্ডের গোড্ডা পাওয়ার প্ল্যান্ট থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ অব্যাহত রাখার অংশ হিসেবে এই অর্থ প্রদান করা হয় বলে জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইকোনমিক টাইমস।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আদানি গ্রুপের বিদ্যুৎ বকেয়া বাবদ বাংলাদেশের কাছে মোট পাওনা ৮৪৩ মিলিয়ন ডলার। রাজনৈতিক নানা জটিলতার কারণে এই পরিমাণ বকেয়া পরিশোধে বাধা সৃষ্টি হয়। সম্প্রতি আদানি পাওয়ার তাদের বিদ্যুৎ সরবরাহ অর্ধেকে নামিয়ে আনে এবং সরবরাহ বন্ধ করার হুমকি দেয়। এরই প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) ১৭৩ মিলিয়ন ডলারের একটি নতুন লেটার অব ক্রেডিট (এলসি) জারি করে।
এটি আদানি পাওয়ারকে দেওয়া তৃতীয় এলসি, যা বাংলাদেশের কৃষি ব্যাংকের পক্ষ থেকে ভারতের আইসিআইসিআই ব্যাংককে প্রদান করা হয়েছে। ইকোনমিক টাইমস জানায়, পূর্বের এলসিগুলো বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তির সাথে পুরোপুরি সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল না।
প্রসঙ্গত, আদানি পাওয়ারের দুটি ইউনিট থেকে মোট ১৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয়, যা পুরোটাই বাংলাদেশে রপ্তানি করা হয় এবং যা দেশের মোট বিদ্যুৎ চাহিদার প্রায় ১০ শতাংশ পূরণ করে। শেখ হাসিনা সরকারের সাথে ২০১৫ সালে করা এই চুক্তি অনুযায়ী, আদানি পাওয়ার থেকে ২৫ বছর মেয়াদে বিদ্যুৎ কিনতে হবে বাংলাদেশকে। সমালোচকরা এই চুক্তিকে একপেশে এবং অসম বলেছেন, যেখানে আদানি গ্রুপের জন্য সব সুবিধা নিশ্চিত করা হয়েছে। প্রতি মাসে ৯৫ থেকে ৯৭ মিলিয়ন ডলার পরিশোধের বাধ্যবাধকতা থাকায় দেশের জনগণের ওপর বাড়তি আর্থিক চাপ সৃষ্টি হচ্ছে।
বিভিন্ন মহল থেকে বলা হয়েছে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঘনিষ্ঠ আদানি গ্রুপের সাথে এই চুক্তি ভারতীয় সরকারের প্রভাবের ফল। সমালোচকরা উল্লেখ করেছেন, এতে বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং বিদ্যুৎ বিলে বাড়তি অর্থ পরিশোধের দায় বহন করতে হচ্ছে জনগণকে।