পুলিশের নিয়োগে আওয়ামী পক্ষপাত: গোয়েন্দা রিপোর্টে উদ্বেগ
গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : হাসিনার সরকারের শেষ সময়ে ৩ হাজার ৫৭৪ জন ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) চূড়ান্তভাবে নিয়োগ পেতে যাচ্ছেন। তালিকাটির এই বড় অংশই পতিত ফ্যাসিস্ট, অর্থাৎ আওয়ামী লীগ সমর্থক। তারা বর্তমানে নোয়াখালী, টাঙ্গাইল, রংপুর, খুলনা, রাঙ্গামাটি এবং পুলিশ একাডেমি সারদায় প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন।
গত মার্চ ও এপ্রিল মাসে ৬৪ জেলায় চারটি পর্বে তাদের মৌখিক পরীক্ষার আগের দিন বাছাই করা হয়। এই প্রক্রিয়ায় আওয়ামী লীগ সমর্থক প্রার্থীদের বাছাই করার জন্য অন্যদের বাদ দেওয়ার কৌশল নেওয়া হয়। তৎকালীন আইজিপি এবং নিয়োগ বিভাগের কর্মকর্তাদের মাধ্যমে এটি সম্পন্ন করা হয়।
গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, গত ১৫ বছরে নিয়োগপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্যদের অনেকেই রাজনৈতিক পরিচয় ও দুর্নীতির মাধ্যমে নিয়োগ পেয়েছেন। এ কারণে পুলিশ বাহের একটি বড় অংশ এখন সরকারের পক্ষের হয়ে কাজ করছে। সম্প্রতি ডিএমপি এবং অন্যান্য মহানগরে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বৈধ আদেশ অমান্য করার খবর পাওয়া গেছে, যা নিয়োগপ্রক্রিয়ার দুর্নীতির প্রমাণ।
বর্তমানে প্রশিক্ষণরত টিআরসিরা নভেম্বর মাসে প্রশিক্ষণ শেষ করে চূড়ান্ত নিয়োগ পাবেন। বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপারদের সাথে আলাপে জানা যায়, লিখিত পরীক্ষার ৫০ শতাংশ পাস করা প্রার্থীদের মৌখিক পরীক্ষায় সুযোগ দেওয়া হয়।
পুলিশ সদর দফতরের কর্মকর্তারা মৌখিক পরীক্ষার আগের দিন প্রার্থীদের রাজনৈতিক পরিচয় নিশ্চিত করতেন। এভাবে বিএনপি ও জামায়াতপন্থীদের বাদ দিয়ে আওয়ামী লীগ সমর্থকদের নিয়োগ দেওয়া হতো।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে সরকারকে অনুরোধ করা হয়েছে, সর্বশেষ নিয়োগপ্রাপ্ত টিআরসিসহ গত ১৫ বছরে নিয়োগ পাওয়া সব পুলিশ সদস্যের তথ্য যাচাই করা হোক। রাজশাহীতে এএসপি ও সাব-ইনস্পেক্টরদের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ স্থানীয় ছাত্রদের আপত্তির কারণে স্থগিত করা হয়েছে।
সরকারের উচ্চপর্যায়ে একটি গোয়েন্দা রিপোর্টে গত ১৫ বছরে পুলিশ নিয়োগের প্রক্রিয়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অনেক কর্মকর্তা আইজিপি, অতিরিক্ত আইজিপি ও ডিআইজি হিসেবে অবসরে গেছেন এবং এখনও গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন। এসব তথ্য সরকারের নীতিনির্ধারকদের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে, যাতে বিষয়টি সঠিকভাবে তদন্ত করা যায়।
সূত্র : ঢাকা মেইল