গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর পলাতক থাকা জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের খতিবের ফিরে এসে জুমার নামাজের ইমামতিকে কেন্দ্র করে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে মুসল্লিদের দুই গ্রুপে সংঘর্ষ হয়েছে। মসজিদের খতিব মুফতি রুহুল আমীন এবং তার বিরোধীদের মধ্যে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে অর্ধশতাধিক মুসল্লি আহত হয়েছেন। সেনাবাহিনী নিরাপত্তায় জুমার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। তবে এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ, র্যাব ও সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১২টার পর এই ঘটনা ঘটে।
মুসল্লিরা সংবাদ মাধ্যমকে জানান, আওয়ামী লীগ সরকারের নিয়োগকৃত খতিব মুফতি রুহুল আমীন রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের তিনি পালিয়ে যান। এরপর থেকে দায়িত্বপ্রাপ্ত খতিব নামাজ পড়াচ্ছিলেন। আজও ভারপ্রাপ্ত খতিব মিম্বরে উঠেন। এ সময় পলাতক খতিব মুফতি রুহুল আমীন জুমা পড়াতে এলে একটি পক্ষ বিরোধিতা করেন। এ সময় মুফতি রুহুল আমীনের সঙ্গে থাকা বেশ কিছু মাদ্রাসা ছাত্র তাদের প্রতিহত করার চেষ্টা চালান। এক পর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী মুসল্লি হামিদ সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, মসজিদের মতো পবিত্র স্থানে এমন হামলা ঘটনা ন্যাক্কারজনক। খতিব যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে বসে সমস্যা সমাধান করতে পারতেন। কিন্তু তিনি লোকজন নিয়ে এসে হামলা চালান, যা অত্যন্ত ঘৃণিত কাজ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সংঘর্ষ চলাকালে একে অপরকে জুতা, জুতা রাখার র্যাক ছুড়তে থাকে। মসজিদের ভেতর রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। পরে পরিস্থিতি মোকাবিলায় র্যাব, পুলিশ এবং সেনাবাহিনী সদস্যরা ছুটে আসেন। পরে সেনাবাহিনী নিরাপত্তায় জুমার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। বিরোধিতার মুখে মুফতি রুহুল আমিন জুমার নামাজ পড়াতে পারেননি।
এ বিষয়ে দায়িত্বশীল পুলিশের এক কর্মকর্তা সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ছোট একটা ঘটনা ঘটেছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। আমরা কাজ করছি।
পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেট ও পল্টন মোড়ে অতিরিক্ত পুলিশ ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া ডিএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত রয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মুফতি রুহুল আমীন গোপালগঞ্জের হওয়ায় আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। ২০২২ সালে তিনি খতিব হিসেবে নিয়োগ পান। গত ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটলে সব প্রতিষ্ঠানেই পরিবর্তনের ছোঁয়া লাগে। বিরোধীদের পক্ষ থেকে দাবি উঠে, বায়তুল মোকাররমের খতিবকেও সরাতে হবে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি শেখ হাসিনাকে ‘কওমি জননী’ উপাধি দেন। এছাড়া তিনি আওয়ামী লীগের টিকিটে নির্বাচন করতে চেয়েছিলেন বলেও অভিযোগ তোলা হয়। তবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার খতিবের ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। খতিবের অনুপস্থিতিতে কয়েকজনকে নামাজ পড়ানোর দায়িত্ব দেয়।