কালীগঞ্জে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে এক নেতার মৃত্যু, আহত ৪
নিজস্ব প্রতিনিধি : কালীগঞ্জে আধিপত্য বিস্তার ও পূর্ব শত্রুতার জের ধরে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে এমদাদুল হক আকলু (৬৫) নামে বিএনপির এক নেতার মৃত্যু হয়েছে। এছাড়াও আহত হয়েছে ৪ জন।
শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টার দিকে মোক্তারপুর ইউনিয়নের নাশু মার্কেট এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে।
নিহত এমদাদুল হক আকলু মোক্তারপুর ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি। তিনি রামচন্দ্রপুর গ্রামের বাসিন্দা।
আহতরা হলো, রাথুরা গ্রামের জসিম উদ্দিনের ছেলে জহিরুল ইসলাম (৩৫), ফাইজ উদ্দিন শেখের ছেলে মনজু শেখ (৬৫), রামচন্দ্রপুর গ্রামের ইসমাইল শিকদারের ছেলে সীমান্ত শিকদার ইমন (২৪) এবং বজলুর সরকারের ছেলে মেহিদী হাসান সরকার (৩১)।
নিহতের স্বজন, পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৬নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি এমদাদুল হক আকলু গ্রুপের মৌন সমর্থন ছিলো সাবেক চেয়ারম্যান শরিফুল ইসলাম তোরুণের নেতৃত্বে স্বতন্ত্র প্রার্থী আখতারুজ্জামানের (ট্রাক) পক্ষে। অপরদিকে প্রতিপক্ষ ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক নূর মোহাম্মদ গ্রুপ সরাসরি সমর্থন দিয়েছিলে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মেহের আফরোজ চুমকিকে (নৌকা)। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছিল। সম্প্রতি ক্ষমতার পালা বদলের পর এলাকায় দুই পক্ষের মধ্যেই আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা বিরাজ করছিলো।
বৃহস্পতিবার আকলু গ্রুপের লোকজন নূর মোহাম্মদ গ্রুপকে আওয়ামী লীগের দালাল আখ্যা দিয়ে এলাকায় প্রচারণা করে। শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে আকলুর নেতৃত্বে স্থানীয় নেতা-কর্মীরা ৮-১০ টি মোটরসাইকেল নিয়ে এলাকায় মহরা দিয়ে মিছিল করে। একপর্যায়ে তারা নাশু মার্কেট এলাকায় অবস্থান নিলে নূর মোহাম্মদ গ্রুপের প্রায় ৪০-৫০ জন নারী-পুরুষ মিলে তাদের ধাওয়া করে। সে সময় নূর মোহাম্মদ গ্রুপের লোকজন আকলুকে আটকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে ঘটনাস্থল থেকে নিহতের লাশ উদ্ধার করে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে কালীগঞ্জ থানা পুলিশ।
এছাড়াও হামলায় আকলু গ্রুপের চারজন আহত হয়। তাদের মধ্যে জহিরুল ও মনজু শেখকে উদ্ধার করে সাড়ে ১২ টার দিকে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করা হয়েছে। ইমন ও মেহেদীকে দুপুর আড়াইটার দিকে হাসপাতালে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। অপরদিকে ঘটনার পর দুপুর ১২টার দিকে স্থানীয় বিএনপির নেতা-কর্মীরা সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শরিফুল ইসলাম তোরণের বাড়িতে ও অফিসে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেছে।
মোক্তারপুর ইউনিয়নের ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মজনু শেখ বলেন, দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি এমদাদুল হক আকলু নিহত হয়েছে। সংঘর্ষে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা এ ঘটনায় জড়িত।
গাজীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) নাজমুস সাকিব খান সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে হত্যাকান্ডের ঘটনাটি ঘটেছে বলে প্রাথমিক ভাবে জানা গেছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। এঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।