আইন-আদালতআলোচিতজাতীয়

সাবেক আইজিপি আবদুল্লাহ মামুন ও শহীদুল হক গ্রেপ্তারের পর রিমান্ডে

গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : হত্যা মামলায় পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের ৮ ও শহীদুল হকের ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। বৈষম্যবিরোধী কোটা আন্দোলন চলাকালে মোহাম্মদপুরে মুদি দোকানদার আবু সায়েদ হত্যা মামলায় মামুনের ও রাজধানীর নিউমার্কেট থানা এলাকায় ব্যবসায়ী আব্দুল ওয়াদুদ হত্যা মামলায় শহীদুলের এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৬টা ৪৫মিনিটে তাদের ঢাকার সিএমএম আদালতে হাজির করে পুলিশ।

এরপর পৃথক দুই হত্যা মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাদের ১০ দিন করে রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন তদন্তকারী কর্মকর্তারা।

অপরদিকে তাদের আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের আবেদন করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে

ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আকতারুজ্জামান তাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এর আগে ঢাকা মহানগর পুলিশের জনসংযোগ বিভাগের পাঠানো দুটি পৃথক বার্তাতে তাদের গ্রেপ্তারের তথ্য জানানো হয়, সদ্য সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে মামলা হওয়ায় সেনা হেফাজতে থাকা অবস্থায় আত্মসমর্পণের ইচ্ছা প্রকাশ করেন তিনি। মঙ্গলবার রাতে পুলিশ তাকে হেফাজতে নেয়।

আরেকটি বার্তায় বলা হয়, ছয় বছর আগের পুলিশপ্রধান শহীদুল হককে মঙ্গলবার রাতে উত্তরা ১৬ নম্বর সেক্টর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

সরকার পতনের পর বিকালে হেলিকপ্টারে পুলিশ সদর দপ্তর ছাড়েন আইজিপিসহ কয়েকজন কর্মকর্তা। এরপর থেকে প্রকাশ্যে দেখা যায়নি তাকে। নতুন অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের আগেই তাকে চাকরি থেকে বাদ দেওয়া হয়।

চৌধুরী আব্দুল্লাহ মামুনের অবসরে যাওয়ার কথা ছিল দেড় বছর আগে। তারপরও তাকে চুক্তিতে আইজিপি করে রেখেছিলেন শেখ হাসিনা। আইজিপি হওয়ার আগে তিনি র‌্যাবের মহাপরিচালক ছিলেন। সর্বশেষ গত ৫ জুলাই আরও এক বছরের জন্য তার চুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হয়েছিল। সরকার পতনের পর ৬ অগাস্ট রাতে তার চুক্তি বাতিল করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

অপরদিকে এ কে এম শহীদুল হক ২০১৪ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০১৮ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত আইজিপি ছিলেন। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর পরই ২০০৯ সালে তিনি ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার হন। মঙ্গলবার রাতে গ্রেপ্তারের পর তাদের ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন পুলিশ কর্মকর্তারা। সরকার পতনের পর আন্দোলনে সহিংসতার ঘটনায় তাদের দুইজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।

কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের ওপর পুলিশ নির্বিচারে গুলি চালালে গত ১৯ জুলাই বিকেল ৪টার দিকে মোহাম্মদপুর থানার বছিলায় ৪০ ফিট চৌরাস্তায় মুদি দোকানদার আবু সায়েদ নিহত হন।

এ ঘটনায় ১৩ আগস্ট ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরীর আদালতে এস এম আমীর হামজা নামে এক ব্যক্তি মামলা করেন। মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ ৭ জনকে আসামি করা হয়। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করেন। এজাহার হিসেবে গ্রহণ করতে মোহাম্মদপুর থানাকে নির্দেশ দেন।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন- সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান, অতিরিক্ত কমিশনার মো. হারুন অর রশীদ ও যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার।

গত ১৯ জুলাই বিকেল ৫টায় নিউমার্কেটের ১নং গেটের সামনে গুলিতে নিহত হন ব্যবসায়ী আব্দুল ওয়াদুদ। এ ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ ১৩০ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করা হয়। নিহত ব্যবসায়ীর ভাগনি জামাই আব্দুর রহমান বাদী হয়ে গত ২১ আগস্ট নিউমার্কেট থানায় এ মামলা করেন।

মামলার অন্যান্য উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক স্বারাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, সাবেক সংসদ সদস্য ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, সাবেক মন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাত, সাবেক স্বরাষ্ট্র সচিব চৌধুরী জাহাঙ্গীর আলম, সাবেক আইজিপি শহীদুল হক, সাবেক ডিবিপ্রধান হারুন অর রশীদ প্রমুখ।

এরকম আরও খবর

Back to top button