দেশে ফিরেছেন গাজীপুর সিটির সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম
গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র জায়েদা খাতুনের পুত্র এবং সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম দুই সপ্তাহ সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরেছেন।
শনিবার (৩ আগস্ট) সকালে তিনি সিঙ্গাপুর থেকে ইউএস বাংলার একটি বিমানে করে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের নামেন। জাহাঙ্গীর আলমের কর্মী-সমর্থকসহ গাজীপুর সিটির বিভিন্নস্তরের কয়েক হাজার মানুষ বৃষ্টি উপেক্ষা করে বিমান বন্দরে তাকে স্বাগত উপস্থিত হন।
জানা গেছে, শিক্ষার্থীদের কোটা আন্দোলন চলাকালে গত ১৯ জুলাই বিকেলে জাহাঙ্গীর আলম সঙ্গীদের নিয়ে ঢাকার সমাবেশে যাওয়ার পথে উত্তরায় দুর্বৃত্তদের হামলার শিকার হন। দুর্বৃত্তরদের হামলায় জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গী হামিদুল ইসলাম জুয়েল মোল্লা নিহত এবং জাহাঙ্গীর আলমসহ বেশ কয়েকজন আহত হন। এসময় তাদের বহরের বেশ কয়েকটি গাড়ি পুড়িয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। গুরুতর আহতাবস্থায় জাহাঙ্গীর আলম একটি বাসায় আশ্রয় নেন। আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনী তাকে গুরুতর আহতাবস্থায় উদ্ধার হাসপাতালে পাঠায় এবং পরদিন ২০ জুলাই উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়। সেখানে তিনি মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। এদিকে ২০ জুলাই রাতে একদল দুর্বৃত্ত জাহাঙ্গীর আলম তথা মেয়র জায়েদা খাতুনের মহানগরের ছয়দানা হারিকেন এলাকার বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে এবং আগুন দেয়।
জাহাঙ্গীরের দেশে আসার সংবাদ পেয়ে ভোর থেকে তার কর্মী সমর্থকসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ বিমান বন্দর এলাকায় জড়ো হতে থাকেন। বিমান থেকে নামার পর মোটর শোভাযাত্রা সহকারে জাহাঙ্গ্রী আলম গাজীপুরের উদ্দেশ্যে রওনা হন। পথে তিনি দুর্বৃত্তর হামলায় মহানগরের চান্দরা এলাকার নিহত হামিদুল ইসলাম জুয়েল মোল্লার বাড়িতে যান। সেখানে তিনি জুয়েল মোল্লার কবর জিয়ারত করেন। এসময় তিনি জুয়েল মোল্লার বাবাসহ স্বজনদের সাথে কথা বলেন, খোজখবর নেন এবং সমবেদনা জানান। পরে তিনি মহানগরের ছয়দানা হারিকেনের নিজ বাসায় ফিরেন এবং মা মেয়র জায়েদা খাতুনের সঙ্গে দেখা করেন।
জাহাঙ্গীর আলমকে স্বাগত জানাতে হারিকেনের বাড়িতেও আগে থেকেই কয়েক হাজার মানুষ উপস্থিত ছিলো। এখানে সমবেত জনতার উদ্দেশ্যে জাহাঙ্গীর আলম বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, আমাকে হত্যা করতে চেয়েছেন- আমি না হয় রাজনীতির সাথে সরাসরি জড়িত। কিন্ত আমার মা একজন ৭০ বছরের বৃদ্ধ মানুষ। কয়েক ঘন্টাব্যাপি তাঁর রুমসহ বাড়ির সব কিছু তছনছ করা হলো, আগুন দেয়া হলো। তাকে সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশের উদ্ধার করতে হলো কেন ? এ নারী কার কি ক্ষতি করেছে? কারা আমাকে, আমার মাকে হত্যা করতে চেয়েছে, জুয়েলকে হত্যা করেছে? তদন্তের মাধ্যমে যেন এর সঠিক বিচার হয়। দেশ তথা গাজীপুরের মানুষ দেখুক কারা অপরাধী? কারা মুখোশ পড়ে মানুষের সম্পদ, মানুষের প্রাণ কেড়ে নিতে চেয়েছিল? মেয়রের সন্তান হিসেবে আমি এর বিচার চাই।
নেতাকর্মীদের শান্ত থাকার আহবান জানিয়ে জাহাঙ্গীর আলম আরো বলেন, জুয়েলের বাবার চোখের পানি, আর্তনাদ-এমন আর কারো আর্তনাদ দেখতে চাই না। অনেক রক্তপাত, আনেক সম্পদের ক্ষতি হয়েছে। আর যেন না হয়। আলোচনার মাধ্যমে এ সমস্যার সমাধান হওয়া দরকার। এর জন্য তিনি সরকারের উর্ধ্বতন মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।