গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : কয়েক বছর আগেও যখন হঠাৎ বাজারে চালের দাম বেড়ে যেত তখনই মন্ত্রীরা বলতেন ‘বেশি করে আলু খান ভাতের ওপরে চাপ কমান’। কিন্তু এখন পরিস্থিতি পাল্টেছে। প্রতি কেজি আলুর দাম ছাড়িয়ে গেছে চালের দামকে। এই অবস্থায় প্রশ্ন উঠছে এখন মানুষ কোনটি খাবে? আলুর বদলে ভাত খাবে কিনা?
বৃহষ্পতিবার (২৭ জুন) ঢাকার বাজারে প্রতি কেজি আলু ৭০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। যেটা গত সপ্তাহেও ৬০ – ৬৫ টাকার মধ্যে ছিল। ব্যবসায়ীরা বলছেন, এ বছর আলুর যে সংকট সেটা সবাই জানে, তাই দাম কোথায় গিয়ে ঠেকবে সেটা বলা সম্ভব না।
এদিকে ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) এর বৃহষ্পতিবারের বাজার বিশ্লেষণের তথ্য বলছে, বাজারে সরু চাল বিক্রি হচ্ছে ৬০ – ৭৮ টাকার মধ্যে, মাঝারি মানের চিকন চাল বিক্রি হচ্ছে ৫২ – ৫৮ টাকায়, এবং মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৮ – ৫২ টাকায়।
সরকারি একমাত্র নিত্যপণ্য বিপণনকারী এই প্রতিষ্ঠানের তথ্য অনুযায়ী, বাজারে চালের যে দাম– তার চেয়ে আলুর দাম বেশি। কারণ একটাই, দু-তিন বছর আগেও সরকার আলুর বাড়তি উৎপাদনের যে তৃপ্তিতে ছিল, সেখানে বাধা পড়েছে। গত মৌসুমে আলুর উৎপাদনও কমেছে। যে কারণে হু হু করে বাড়ছে আলুর দাম।
ফলে সরকারের পক্ষ থেকে আলু খেয়ে ভাতের উপর চাপ কমানোর যে কৌশলের কথা বলা হতো, এখন সেই টোটকাটা কাজ করছে না।
কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, গত ২০২২-২৩ অর্থবছরেও আলু রপ্তানি হয়েছে। যদিও তা তার আগের তিন বছরের রপ্তানির তুলনায় অনেক কম ছিল। কিন্তু এখন রপ্তানি তো দূরের কথা, আমদানি করেও বাজার সামাল দিতে পারছে না সরকার।
গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে তো কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক ঘোষণা-ই দিয়েছিলেন রাশিয়াতে আলু রপ্তানি বাড়ানোর। কিন্তু স্থানীয় বাজারে সংকটের কারণে সেটা আর হয়ে উঠেনি।
বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশন বলছে, প্রতি বছর ফেব্রুয়ারি থেকে মৌসুমের আলু কোল্ড স্টোরেজে সংরক্ষণ শুরু হয়। এ বছর এলাকাভেদে ২০ – ৩০ শতাংশ পর্যন্ত কম আলু সংরক্ষণ করা হয়েছে। একইসঙ্গে উৎপাদন কম হওয়ার কারণে এবারে নির্দিষ্ট সময়ের আগে থেকেই কোল্ড স্টোরেজের আলু বিক্রি শুরু হয়েছে। তবে এই মৌসুমে আলু উৎপাদনের তথ্য এখনো প্রকাশ করেনি বিবিএস।
গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে আলুর উৎপাদন ছিল ১ কোটি ৪ লাখ মে টন।