কালীগঞ্জে টোল আদায়ের নামে সড়কে চাঁদাবাজি, তিনজনকে কারাদণ্ড
নিজস্ব প্রতিনিধি : কালীগঞ্জে পৌর টোল আদায়ের নাম করে সড়কে চাঁদাবাজি করার দায়ে তিনজনকে চার দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ও নির্বাহী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এস.এম ইমাম রাজী টুলু।
মঙ্গলবার (১১ জুন) বিকেলে ঘোড়াশাল শহীদ ময়েজউদ্দিন ফেরিঘাট সংলগ্ন খলাপাড়া মৌজায় নির্মাণাধীন মডেল মসজিদের সম্মুখ সড়কে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে তাদের এ দণ্ডাদেশ দেয়া হয়েছে।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলো, দেওপাড়া এলাকার রহিম শিকদারের তারিফ শিকদার (২১), নাছির উদ্দিনের ছেলে তানভীর (২০) এবং নজুমুদ্দিনের ছেলে সিদ্দিক (৫০)। তারা ইজারাদারের নিখোঁজ করা চাঁদা আদায়কারী।
উপজেলা প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ডে শহীদ ময়েজউদ্দিন ফেরিঘাট ষ্ট্যান্ড থেকে টোল আদায়ের জন্য কালীগঞ্জ পৌরসভা থেকে ইজারা পেয়েছে হুমায়ূন কবির শিকদার। তিনি টোল আদায়ের ইজারা চুক্তির বিধি লঙ্ঘন করে প্রতিনিধি নিয়োগ দিয়ে পৌরসভার নির্ধারিত স্থান রেখে পার্শ্ববর্তী বাহাদুরসাদী ইউনিয়নের খলাপাড়া মৌজায় অবস্থিত ঘোড়াশাল ফেরিঘাট সংলগ্ন নির্মাণাধীন মডেল মসজিদের সম্মুখ সড়ক দিয়ে চলাচল করা যানবাহন থেকে বেশ কিছুদিন যাবৎ প্রকাশ্যে জোরপূর্বক চাঁদা আদায় করছিলো। সংবাদ পেয়ে মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এস.এম ইমাম রাজী টুলুর নেতৃত্বে অভিযান পরিচালনা করে তিনজনকে আটক করা হয়। পরে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে দণ্ডবিধির ২৯১ ধারায় ৩ জনকে চার দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এস.এম ইমাম রাজী টুলু।
জানা গেছে, চলতি বছরের ৩ মার্চ কালীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র এস,এম, রবীন হোসেন স্বাক্ষরিত ইজারা পত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, গত ৯ ফেব্রুয়ারি হুমায়ূন কবির শিকদারের দাখিলকৃত দরপত্রের প্রেক্ষিতে কালীগঞ্জ পৌরসভার শহীদ ময়েজউদ্দিন ফেরিঘাট ষ্ট্যান্ড ১৪৩১ বাংলা সনের ইজারা প্রদান করা হয়েছে। শুধুমাত্র সরকারী/পৌরসভার অনুমোদিত টোল তালিকা অনুযায়ী টোল আদায় করার অনুমতি দেয়া হয়েছে। দেওপাড়া শহীদ ময়েজ উদ্দিন ফেরিঘাট ষ্ট্যান্ড ব্যতিত অন্য কোন স্থান হতে টোল আদায় করা যাবেনা। এর ব্যতিক্রম হলে ইজারা বাতিলসহ হাট বাজার ইজারা নীতিমালা ও চুক্তিপত্র অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
ইজারাদার হুমায়ূন কবির শিকদার বলেন, সরকারি বিধি অনুযায়ী আমি পৌরসভা থেকে টোল আদায়ের জন্য ইজারা পেয়েছি। আমার লোকজন শহীদ ময়েজ উদ্দিন ফেরিঘাট ষ্ট্যান্ড থেকে টোল আদায়ের সময় হঠাৎ করে তাদের আটক করে নিয়ে গেছেন ইউএনও। আমাকে জানানো হয়েছে অবৈধভাবে টোল আদায়ের অপরাধে তাদের আটক করা হয়েছে।
কালীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র এস এম রবীন হোসেন বলেন, পৌরসভার নির্ধারিত স্থান ব্যতীত অন্য স্থান থেকে টোল আদায়ের সুযোগ নেই। যে স্থান থেকে তিনজনকে আটক করা হয়েছে ওই স্থান পৌরসভার বাহিরে। তদন্ত করে কোন অনিয়ম পেলে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ও নির্বাহী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এস.এম ইমাম রাজী টুলু বলেন, পৌর টোল আদায়ের নির্ধারিত স্থান বাদ দিয়ে পার্শ্ববর্তী বাহাদুরসাদী ইউনিয়নের খলাপাড়া মৌজার সড়ক দিয়ে চলাচল করা যানবাহন থেকে প্রতিনিধি দিয়ে চাঁদা আদায় করছিলো ইজারাদার। বিকেলে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে চাঁদা আদায়ের সময় তিনজনকে আটক কর হয়। সে সময় অভিযুক্তরা দায় শিকার করলে তাদের দণ্ডবিধির ২৯১ ধারা অনুযায়ী চার দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।