ইসরায়েলে হামলায় ‘সম্মতি’ ছিল আমেরিকারও!
গাজীপুর কণ্ঠ, আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইসরায়েলে হামলার ব্যাপারটি আগে থেকেই তুরস্ককে অবহিত করেছিল ইরান। আর এ হামলাতে ‘সম্মতি’ ছিল আমেরিকারও। তবে আমেরিকা বলেছিল, ইরান যেন ‘নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে’ হামলা করে। তুরস্কের একজন কূটনীতিকের বরাত দিয়ে এসব তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
এর আগে তুরস্ক বলেছিল, তারা মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা বাড়াতে চায় না। ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় হামলার জন্য ইসরায়েলের নিন্দাও করেছিল তুরস্ক।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে তুর্কি কূটনীতিক বলেন, ‘তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান গত সপ্তাহে আমেরিকা ও ইরানের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে কথা বলেছেন। তখন তাঁরা ইসরায়েলে ইরানের হামলার পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করেন।
এ ছাড়া চলতি সপ্তাহের শুরুর দিকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদানের সঙ্গে কথা বলেছেন বলেও জানান ওই কূটনীতিক। তিনি বলেন, ‘কারও স্বার্থে মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনা বাড়ানো উচিত নয় বলে মন্তব্য করেছিলেন ব্লিঙ্কেন।’
কূটনৈতিক সূত্রটি আরও বলেন, ‘ইরান আমাদের আগে থেকেই জানিয়েছিল যে ইসরায়েলে তারা কী ঘটাতে যাচ্ছে। ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে বৈঠকের সময়ে এ বিষয়ে কথা হয়েছে। আমেরিকার পক্ষ থেকে ব্লিঙ্কেন তখন বলেছিলেন, ইরানের হামলা যেন নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে হয়। আমরা সঙ্গে সঙ্গেই আমেরিকার এ সতর্ক বার্তা ইরানের কাছে পৌঁছে দিয়েছিলাম। ইরান তখন জানিয়েছিল, তারা দামেস্কে ইরানি কনস্যুলেটে ইসরায়েলি হামলার প্রতিক্রিয়া হিসেবে এ হামলা চালাবে। এর বাইরে কিছুই করবে না।’
গত ১ এপ্রিল সিরিয়ার দামেস্কে ইরানের কনস্যুলেটে হামলা চালিয়ে একজন কমান্ডারসহ ইরানের ইসলামিক বিপ্লবী গার্ড কোরের সাত কর্মকর্তাকে হত্যা করে ইসরায়েল। এরপরই ইরান জানায়, তারা অবশ্যই এ হামলার প্রতিশোধ নেবে।
ইরানের প্রতিবেশি দেশ তুরস্ক তখন ‘সংযমের’ আহ্বান জানিয়েছিল। তুর্কি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছিল, তুরস্ক এ অঞ্চলে উত্তেজনা চায় না। এ অঞ্চলে উত্তেজনা বাড়লে তা আঞ্চলিক যুদ্ধের দিকে গড়াতে পারে। এ জন্য মধ্যপ্রাচ্যে সকল উত্তেজনা ও সংঘাত নিরসনে তুরস্ক চেষ্টা চালিয়ে যাবে।
এদিকে তুরস্কের নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে জড়িত একটি ঘনিষ্ঠ সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে, মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর প্রধান উইলিয়াম বার্নস এরইমধ্যে তুরস্কের গোয়েন্দা সংস্থা এমআইটির প্রধান ইব্রাহিম কালিনের সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি ইসরায়েল–ইরান উত্তেজনা কমাতে ইব্রাহিম কালিনকে ‘মধ্যস্থতাকারী’ হিসেবে কাজ করার অনুরোধ করেছেন। এ ছাড়া গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়েও আলোচনা করেছেন এই দুই শীর্ষ কর্মকর্তা।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, রোববার ভোরে ইসরায়েলের ভূখণ্ড লক্ষ্য করে তিন শতাধিক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান।
ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কোর (আইআরজিসি) জানিয়েছে, ‘ট্রু প্রোমিজ’ নামে অভিযানের আওতায় এসব ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়েছে।
ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা বলেছে, তেহরান ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে প্রথম দফা ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। ইসরায়েলের একেবারে ভেতরের লক্ষ্যবস্তু নিশানা করে এসব ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়েছে।