সড়কে দীর্ঘ ভোগান্তির অবসান হয়েছে: ওবায়দুল কাদের
গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, এবারের মতো স্বস্তিদায়ক ঈদযাত্রা আমাদের ইতিহাসে আর কখনো দৃশ্যমান হয়নি। আগে বছরের পর বছর দুর্ভোগ, ভোগান্তি ঈদের সময় লেগেই ছিল। নতুন কিছু ব্রিজ, ফ্লাইওভার, নির্মাণের ফলে এ দীর্ঘ ভোগান্তির অবসান হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে মহাসড়ক পরিদর্শনে এসে গাজীপুর মহানগরের বাইমাইল এলাকায় সাসেক প্রকল্পের সাইড অফিসে এক ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
মন্ত্রী বলেন, এ পর্যন্ত সড়ক নিয়ে একটি অভিযোগও পাইনি। সড়ক নিয়ে কারো কোনো অভিযোগ নেই। সড়কপথে যাত্রা স্বস্তিদায়ক ছিল। মঙ্গলবার টাঙ্গাইলে এক্সিডেন্ট ও রং সাইডে গাড়ি চালানোর জন্য কিছু সমস্যা হয়েছিল। এই মুহূর্তে সেখানে যানচলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। আশা করছি, ঘরমুখো জনগণ কর্মস্থলেও স্বস্তির সঙ্গে, নির্বিঘ্নে ফিরতে পারবেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে এখন সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন দৃশ্যমান হচ্ছে। আরো কিছু কাজ বাকি আছে। আগামী বছরের মধ্যে আরো অনেকগুলো কাজ শেষ করতে পারব। এরমধ্যে ঢাকা সিটিতে মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণকাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে।
সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে শৃঙ্খলা, এ কথা উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, সড়কে ও পরিবহনে যদি শৃঙ্খলা ফিরিয়ে না আনতে পারি তাহলে ফ্লাইওভার, মেট্রোরেল, পদ্মা সেতু, ফোর লেন, নতুন ব্রিজ এসব স্থাপনা দিয়ে সমস্যার স্থায়ী সমাধান হবে না। স্থায়ী সমাধানের জন্য শৃঙ্খলার যে সংকট, সে সংকট থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। সড়কে-পরিবহনে যে বিশৃঙ্খলা বিরাজমান, সেগুলো দূর করতে হবে। সড়কগুলো অবৈধ দখল থেকে মুক্ত করতে হবে। যে অভিযানটা আমি অনেক আগেই শুরু করেছি। এটা এখনো পুরোপুরি সফলতার মুখ দেখেনি। বেশকিছু জায়গায় দখলমুক্ত হয়েছে। সামনের দিনগুলোতে আমাদের আরো উদ্যোগ নিতে হবে।
মন্ত্রী বলেন, ঘণ্টার পর ঘণ্টা মানুষের যে দুর্ভোগ ছিল আজকে তার অবসান হয়েছে। আজকে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম সাড়ে ৩ থেকে ৪ ঘণ্টায় যাওয়া যায়। গাজীপুর থেকে ময়মনসিংহ ও গাজীপুর থেকে উত্তর জনপদের জেলাগুলোর দিকে যে যাত্রা, এ যাত্রা ইতিহাসের সব চেয়ে সস্তিদায়ক যাত্রা, যা আমরা জনগণকে উপহার দিতে পেরেছি।
তিনি আরো বলেন, দুটি উড়াল সেতু, কয়েকটি ওভারপাস, কাঁচপুর, মেঘনা ও গোমতিসহ অনেকগুলো সেতু ঈদ উপহার হিসেবে উদ্বোধনের মধ্যে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঈদযাত্রাকে এবার নির্বিঘ্ন ও স্বস্তিদায়ক করেছেন। এটা দেশবাসী উপলব্ধি করছেন এবং প্রশংসা করছেন।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, বেগম জিয়াকে মুক্তি দেওয়ার বিষয়টা সম্পূর্ণভাবে আদালতের এখতিয়ার। যে মামলায় তিনি কারাবন্দি এবং সাজাপ্রাপ্ত, সে মামলা বর্তমান সরকারের ফাইল করা কোনো মামলা না। এ মামলা বর্তমান সরকারের আমলে হয়নি। সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে এ মামলা হয়েছিল। এটা আদালতের বিষয়। বিএনপির আইনজীবীরা প্রমাণ করতে পারেনি যে, তিনি (খালেদা জিয়া) নির্দোষ। তারপর আরেকটা পথ আছে- বেগম জিয়াকে মুক্তির দাবিতে চাপ সৃষ্ট করা। প্রায় ১৫ মাস বেগম জিয়া কারাগারে আছেন। বিএনপি এ পর্যন্ত রাজপথে কোনো আন্দলোন করতে পারেননি। বারবার আন্দেলনের ডাক দিয়েছেন, জনগণ সারা দেয়নি। সেটা তো আমাদের দোষ না। তারা বেগম জিয়াকে লিগ্যাল ব্যাটেলে মুক্ত করতে পারেনি, রাজপথের আন্দোলনেও মুক্ত করতে পারেননি। এটা তাদের ব্যর্থতা।
এ সময় মন্ত্রীর সঙ্গে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের ঢাকা জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. আব্দুস সবুর, গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মো. আনোয়ার হোসেন, বিআরটিএর প্রকল্প পরিচালক সানাউল হক, সাসেক প্রকল্পের পরিচালক মো. ইসহাক, ঢাকা বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সবুজ উদ্দিন খান, গাজীপুর সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী সাইফ উদ্দিনসহ সড়ক বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
সূত্র: রাইজিংবিডি