আন্তর্জাতিকআলোচিত

ইসরাইল শেষ পর্যন্ত পরাজিত হবে

গাজীপুর কণ্ঠ, আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইরানের ইসলামী বিপ্লবের রূপকার ইমাম খোমেনি (র) বলেছিলেন, তোমরা সাম্রাজ্যবাদীরা আমাদেরকে হত্যা কর তাহলে আমাদের জাতি আরো বেশি জেগে উঠবে।

এরই আলোকে বলা যায় ঠিক যেমনভাবে গাযায় ইসরাইলের নির্বিচার বোমাবর্ষণে হাজার হাজার শিশু, নারী ও পুরুষের শাহাদাত বিশ্বের জাতিগুলোকে ইসরাইল ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অন্যায় ও গণহত্যার বিরুদ্ধে জাগিয়ে তুলছে ঠিক তেমনি হামাসের উপপ্রধান সালেহ আল আরূরির শাহাদাতও ফিলিস্তিনি জাতিকে আরো বেশি সচেতন করবে এবং তা অন্যান্য ঘুমন্ত জাতিকেও করবে জাগ্রত।

বলা হয় যে আলআকসা তুফান বা তূফানুল আকসা জিহাদের অন্যতম প্রধান রূপকার বা পরিকল্পনা প্রণয়নকারী এবং গাযা যুদ্ধের পরিচালনাকারী ছিলেন শহীদ সালেহ আল আরূরি। দখলদার ইসরাইল, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র , ব্রিটেন ও পশ্চিমা দেশগুলো যেমনটি ভেবেছে ঠিক তার বিপরীতে মহান আরুরির শাহাদাত বরণের ফলেও ফিলিস্তীনীদের জিহাদ, যুদ্ধ ও প্রতিরোধ সংগ্রামের কখনও পরিসমাপ্তি ঘটবে না !!

এই শাহাদাত আবারও প্রমাণ করছে যে প্রতিরোধ সংগ্রামের নেতৃবৃন্দ ও ফিলিস্তীনী জনগণের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। সাধারণ ফিলিস্তিনি জনগণ যেমন শহীদ হচ্ছেন ঠিক তেমনি তাদের সংগ্রামী নেতৃবৃন্দও মুসলমানদের প্রথম কিবলা কুদসকে মুক্ত করার সংগ্রামের পথে শহীদ হচ্ছেন । কয়েক দিন আগে লেবাননের হিজবুল্লাহ আন্দোলনের এক নেতার মুজাহিদ পুত্র ইসরাইলের বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংঘর্ষে দক্ষিণ লেবাননে শহীদ হয়েছেন। মাসখানেক আগে হামাস প্রধান ইসমাইল হানিয়ার কয়েকজন ঘনিষ্ঠ নিকট-আত্মীয় যাদের মধ্যে তাঁর নাতনিও রয়েছেন তারা গাযায় এক বোমাবর্ষণে শাহাদাত বরণ করেছেন।

এই সপ্তাহ খানেক আগে ইরানী জেনারেল সাইয়েদ রাযী মূসাভী সিরিয়ার দামেস্কে শহীদ হয়েছেন। আর ইরানের কুদস ব্রিগেডের সাবেক প্রধান ও সন্ত্রাস বিরোধী যুদ্ধের কিংবদন্তিতুল্য সফল নেতা জেনারেল কাসেম সুলাইমানীর চতুর্থ শাহাদাত বার্ষিকীর মাত্র এক দিন আগে মুজাহিদ হামাস নেতা সালেহ আল আরূরি লেবাননে ইসরাইলের সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়ে শাহাদাত বরণ করলেন। ইরান , ইরাক , সিরিয়া ,লেবানন, ইয়েমেন ও ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ সংগ্রামের নেতৃবৃন্দের সর্বোচ্চ পদক ও উপহার হচ্ছে শাহাদাত যা মহান আল্লাহ তাঁদের জন্য বিশেষ ভাবে বরাদ্দ করে রেখেছেন ।

ইসলামী ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ি সম্প্রতি ইসরাইলের নজিরবিহীন বর্বরতার মোকাবেলায় ফিলিস্তিনিদের প্রতিরোধ যুদ্ধ ও ধৈর্যকে নজিরবিহীন বলে প্রশংসা করেছেন।

ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের সর্বোচ্চ নেতা বলেছেন, মুসলিম বিশ্ব এবং আমেরিকা তথা কুফুরি বিশ্বের মধ্যে বিভাজন রেখা হচ্ছে গাজা। গাজায় এখন মুসলিম বিশ্বের নাড়ির স্পন্দন ধরা পড়ছে।

সফটপাওয়ারের শক্তির কারণে গাজাবাসীরা ও অন্যান্য অঞ্চলের সংগ্রামি ফিলিস্তিনিরা আধ্যাত্মিক প্রভাব তথা ঈমানের শক্তি, ধৈর্য ও অবিচলতার কারণে সীমিত অস্ত্র আর সীমিত আর্থিক শক্তি নিয়েও বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে। শাহাদাতের প্রতি পবিত্র কুরআন পাঠে অভ্যস্ত গাজাবাসীর সহিষ্ণুতা ও ধৈর্য দেখে পাশ্চাত্যের অনেক অমুসলিম যুবক যুবতি পবিত্র কুরআন ও পবিত্র ইসলামের সৌন্দের্যে আকৃষ্ট হয়ে এ মহান ধর্ম গ্রহণ করেছেন।

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা যেমনটি বলেছেন, হার্ড পাওয়ারের চেয়ে সফ্‌ট পাওয়ার বেশি কার্যকর। এ কারণে মার্কিন সরকার তার সমস্ত সামরিক ও পারমাণবিক সাজ-সরঞ্জাম হলিউডের পেছনে ব্যবহার করে। আমেরিকা ২০ বছর ধরে আফগানিস্তান এবং ইরাকে শত শত কোটি ডলার ব্যয় করেছে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত জনগণের বিদ্বেষ-ঘৃণা সঙ্গে নিয়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে। হার্ড পাওয়ারের প্রভাব অস্থায়ী হওয়ার কারণে এটা হয়েছে। তাই এটা স্পষ্ট যে শেষ পর্যন্ত সংগ্রামী ফিলিস্তিনিরা ও গাজাবাসীরাই বিজয়ী হবে এবং পরাজিত হবে ইসরাইল ও তার দোসর শক্তিগুলো। যুদ্ধের ময়দানের বাস্তবতাও তা-ই বলছে।

প্রায় ৯০ দিনের যুদ্ধের পরও খোদ ইহুদিবাদী ইসরাইল ও মার্কিন সরকার স্বীকার করছে যে গাজায় হামাস এখনও বেশ শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে।

এরকম আরও খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button