নির্বাচন কমিশনের নাম করে আমার বিরুদ্ধে ‘গুজব’ সংবাদ ছড়ানো হয়েছে: চুমকি
নিজস্ব সংবাদদাতা : গাজীপুর-৫ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মেহের আফরোজ চুমকির বিরুদ্ধে মামলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এমন ‘গুজব’ সংবাদ ছড়িয়ে পড়ার পর এর প্রতিবাদ জানিয়েছে মেহের আফরোজ চুমকি এমপি।
শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) মেহের আফরোজ চুমকি এমপির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এর প্রতিবাদ ও নিন্দা জানানো হয়েছে।
নীল টিকযুক্ত মেহের আফরোজ চুমকি এমপির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে মামলার বিষয়ে প্রকাশিত ‘গুজব’ সংবাদের প্রতিবাদ ও নিন্দা জানানো হয়ে। এতে উল্লেখ করা হয়েছে ‘আমার নাম করে একটি মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে নির্বাচন কমিশনে, একটি গণমাধ্যমে পরবর্তীতে বিদ্বেষমূলক ভাবে নির্বাচন কমিশনের নাম করে প্রচারও করা হয়েছে, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও অপপ্রচার। নির্বাচন কমিশন থেকে মামলা করার কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়নি। নির্বাচন কমিশনের নাম নিয়ে এমন সম্পূর্ণ বানোয়াট এবং মিথ্যা অপপ্রচার এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। নিশ্চিত পরাজয় জেনে প্রতিপক্ষ মিথ্যা গুজব ও অপপ্রচার করছে। হয়ত আরো এমন মিথ্যা অপপ্রচার গুজব ছড়াবে। আমার সাধারণ জনগন এবং নেতা কর্মীদের এসব গুজব ও অপপ্রচার বিশ্বাস না করার জন্য অনুরোধ করছি।অপপ্রচার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মেহের আফরোজ চুমকি’র বিরুদ্ধে নয় বরং তাঁর এপিএস মাজেদুল ইসলাম সেলিমের বিরুদ্ধে নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে মামলা দায়েরর সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ১৯ ডিসেম্বর নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির গাজীপুর-৫ আসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গাজীপুরের সিনিয়র সহকারী জজ ৫ম আদালতে বিচারক আলিফ রহমান স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, দক্ষিণ দেওপাড়া এলাকার মৃত আফছর উদ্দিন শিকদারকে ছেলে আবদুর রহিম শিকদারের অভিযোগের ভিত্তিতে জানা যায়, মেহের আফরোজ চুমকি’র এপিএস মাজেদুল ইসলাম সেলিমের নেতৃত্বে ১০/১২ জনের নেতৃত্বে মারাত্মক অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে নৌকার স্লোগান দিতে দিতে আবদুর রহিম শিকদারকে মারধর করে জীবন নাশের হুমকি দিয়েছেন। যা সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা, ২০১৮ এর ১১(ক) ধারার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
এ বিষয়ে তদন্ত করে কেন নির্বাচন কমিশনে প্রতিবেদন প্রেরণ করা হবে না তৎমর্মে ২০ ডিসেম্বর স্ব-শরীরে হাজির হয়ে লিখিত ব্যাখা চেয়ে নির্দেশ দেয়া হয়েছিল।
আরও জানা গেছে, পরবর্তীতে এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে লিখিত ব্যাখা দিয়েছেন মাজেদুল ইসলাম সেলিম।
এরপর ব্যাখা এবং অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে মামলা দায়ের অনুমতি চেয়ে কমিশনে প্রতিবেদন পাঠায় অনুসন্ধান কমিটি।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) রাতে নির্বাচন কমিশনে বরাদ দিয়ে কয়েকটি সংবাদ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে মামলা দায়েরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। তাতে উল্লেখ করা হয় আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে মেহের আফরোজ চুমকি’র বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, ৫ জানুয়ারি নির্বাচন কমিশনের উপসচিব (আইন) মোঃ আব্দুছ সালাম স্বাক্ষরিত এক পত্রে উল্লেখ্য করা হয়েছে, অভিযুক্ত মাজেদুল ইসলাম সেলিমের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অভিযোগ দায়ের করার জন্য সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাচন অফিসারকে নির্দেশনা দেওয়ার বিষয়ে মাননীয় নির্বাচন কমিশন সদয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। সংশ্লিষ্ট জেলার বিঘ্ন পাবলিক প্রসিকিউটরের সহযোগিতায় অনতিবিলম্বে অভিযোগকারী হিসেবে গাজীপুরের বিজ্ঞ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নিয়মিত অভিযোগ (Complaint) দায়ের করার জন্য অনুরোধ করা হলো।
মাজেদুল ইসলাম সেলিম বলেন, কুচক্রী মহল নির্বাচনে তাঁদের পরাজয় নিশ্চিত জেনে অপপ্রচারে লিপ্ত হয়েছে। আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই সকল বিষয়ে আইন অনুযায়ী মোকাবেলা করা হবে।
নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মেহের আফরোজ চুমকি এমপি বলেন, আমার বিরুদ্ধে মামলার বিষয়টি সম্পূর্ণ গুজব। ভুল তথ্য দিয়ে উদ্দেশ্যমূলকভাবে কেউ এসব করাচ্ছে। সকলের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি কেউ কোন গুজবে কান দেবেন না। আর কেউ কোন গুজব ছড়াবেন না। আমরা সকলেই আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যা করা দরকার সকলকে তা পালন করার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।