আলোচিতজাতীয়

উসকানি ঠেকাতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নজরদারি করবে সরকার

গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের নিরাপদ রাখতে প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নজরদারি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিল ও সহিংসতায় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা যাতে জড়িয়ে না পড়েন সে কারণে তাদের কর্মকাণ্ড খতিয়ে দেখা হবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা’র (এনএসআই) এক প্রতিবেদনের সুপারিশের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) মহাপরিচালককে নির্দেশনা দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। নির্দেশনা অনুযায়ী, ইতোমধ্যে দেশের স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার প্রধানদের এ বিষয়ে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছে মাউশি।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (মাধ্যমিক) জাবেদ আহমেদ বলেন, ‘আমরা প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই নজরদারি অব্যাহত রাখবো, যাতে ভবিষ্যতে শিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রীরা উসকানিদাতাদের মাধ্যমে অসৎ উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত না হন। উসকানিদাতাদের মাধ্যমে অসৎ কর্মকাণ্ডে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা যাতে সম্পৃক্ত না হন সে বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।’

জানা গেছে, গত আগস্ট মাসে নিরাপদ সড়কের দাবিতে রাজধানীতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন নিয়ে দীর্ঘ তদন্ত করে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রতিবেদন দেয় জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই)। প্রতিবেদনের সুপারিশে বলা হয়, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে বহিরাগতরা উসকানি দিয়ে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের অসৎ উদ্দেশ্যে ব্যবহার করেছে। সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনে সম্পৃক্ত করা হয়।

সুপারিশে আরও বলা হয়, ভবিষ্যতে যাতে উসকানি বা ইন্ধনদাতারা এ ধরনের কোনও আন্দোলনে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ব্যবহার না করতে পারে, সে লক্ষ্যে প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নজরদারি প্রয়োজন। প্রতিষ্ঠান প্রধানদের এ বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়ার কথাও বলা হয় সুপারিশে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, গোয়েন্দা সংস্থার সুপারিশের ভিত্তিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্প্রতি মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালককে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দেয়। গত ৩ ডিসেম্বরের ওই নির্দেশনা পাওয়ার পর গত ৯ ডিসেম্বর দেশের স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার প্রধানদের এ বিষয়ে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেয় মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর।

সারাদেশে নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের উসকানিদাতা হিসেবে বিভিন্ন বিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সম্পৃক্ত করা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রণালয়ের দেওয়া নির্দেশনায় বলা হয়, ভবিষ্যতে কোনও শিক্ষক-শিক্ষার্থী যাতে আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ, উসকানি দেওয়া, ইন্ধন জোগানো এবং সংঘর্ষে জড়িয়ে না পড়ে সে বিষয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানদের সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের কর্মকাণ্ডের ওপর নজর রাখতে হবে।

উল্লেখ্য, গত ২৯ জুলাই রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে বাসচাপায় শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজের দুই শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার প্রতিবাদে এবং নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনে নামে শিক্ষার্থীরা। এই আন্দোলন দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে গুজব ছড়িয়ে পড়লে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আন্দোলন সহিংসতায় রূপ নিলে এজন্য দায়ী করা হয় বহিরাগত ইন্ধনদাতাদের। এর সঙ্গে শিক্ষকদের সম্পৃক্ততার বিষয়টিও উঠে আসে।

 

সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন

এরকম আরও খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button