আলোচিতসারাদেশ

বাংলোয় সাবেক ডিসির সঙ্গে নারীর রাত্রিযাপন: অন্তরঙ্গ ভিডিও ভাইরাল

গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : বরগুনার সাবেক জেলা প্রশাসক (ডিসি) হাবিবুর রহমানের নারীঘটিত তিনটি গোপন ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওতে ডিসিকে এক নারীর সঙ্গে লাল চাদর বিছানো একটি খাটে অন্তরঙ্গ মুহূর্তে দেখা যায়।

জানা যায়, ২০২০ সালের ১৭ ডিসেম্বর হাবিবুর রহমান বরগুনার ডিসি হয়ে আসেন। আড়াই বছর পর ২০২৩ সালের ৯ জুলাই এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে তাকে সরিয়ে উপসচিব পদে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা শাখায় পদায়ন করা হয়। তিনি নবাগত জেলা প্রশাসক মোহা. রফিকুল ইসলামের কাছে ৩০ জুলাই দায়িত্ব হস্তান্তর করেন। ৪ সেপ্টেম্বর উপসচিব পদ থেকে যুগ্মসচিব পদে পদোন্নতিও পেয়েছেন হাবিবুর রহমান।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল ভিডিও তিনটি প্রকাশ হওয়ার পর নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি সূত্র জানান, তার কাছে আরও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য রয়েছে।

সূত্র বলেন, ওই নারী প্রায়ই বরগুনা ডিসির বাংলোয় রাতযাপন করতেন। ডিসি তার অফিসে নিয়ে স্টাফদের পরিচয় করিয়ে দিতেন যে ওই নারী তার বান্ধবী। বিমানে, স্পিডবোটে একত্রে ভ্রমণ করতেন তারা।

ভিডিওতে শোনা যাচ্ছে, দুই দিন পর্যন্ত তোমার এত ফোন আসে। ভালোভাবে তোমার সঙ্গে কথাও বলা যায় না। ডিসির হাতে একটি অপো টাচ ফোন। দ্বিতীয় ভিডিওতে হাসি-তামাশা করে ওই নারীর কপালে চুমু দিতে দেখা যায়। পাশাপাশি লাল কভার বালিশে শুয়ে গল্প করছেন তারা। তৃতীয় ভিডিওটি হালকা অন্ধকারে। সেখানে অন্তরঙ্গ পরিবেশ। আনন্দ-ফুর্তির শব্দ শোনা যায়। অনুমান করা যায়, ওই নারী বরগুনা ডিসির বাংলোতে প্রায়ই রাতযাপন করতেন।

আরও জানা যায়, ওই নারীর স্বামী ছিলেন একজন পাইলট। তার একটি বিবাহিত মেয়ে রয়েছে। স্বামী মারা যাওয়ার পর ডিসির সঙ্গে ফেসবুকে পরিচয় হয় তার। ডিসি তাকে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে অসংখ্যবার শারীরিক সম্পর্ক করেছেন। ঘুরেছেন দুজন বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে। নারী ঢাকার ধানমন্ডিতে নিজের বাসায় বসবাস করলেও সঙ্গীর অভাব ছিল। মেয়ে বিয়ে দেওয়ার পর ডিসির সঙ্গে সংসার শুরু করতে চেয়েছিলেন তিনি।

সূত্র ওই নারীর বরাত দিয়ে বলেন, ডিসি হাবিবুর রহমান একাধিক মেয়ের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক করেছেন, যা ওই নারীর কাছে ধরা পড়েছে। যার কারণে তিনি তার কাছ থেকে সটকে পড়ার আগে গোপনে ভিডিও করে রেখেছেন। ডিসি বরিশালের এক নারী প্রভাষকের সঙ্গেও অনৈতিক কাজে জড়িয়ে পড়েন। এছাড়া বরগুনা ডিসি অফিসের নারী স্টাফদের সঙ্গেও অনৈতিক সম্পর্ক ছিল তার, যা ওই নারীর সংরক্ষণে রয়েছে।

আরও জানা যায়, ওই ডিসির নারী ও টাকার প্রতি লোভ ছিল বেশি। তিনি মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রীর একান্ত সচিব থাকাকালে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা করিয়ে বিপুল অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।

সূত্র আরও জানান, ঢাকা শহরে ডিসি হাবিবুর রহমানের একাধিক বাড়ি রয়েছে। বরগুনায় থাকাকালে তিনি এই জেলা থেকে কোটি কোটি টাকা ঘুস নিয়েছেন। যাওয়ার কয়েকদিন আগে নদীবন্দরের জমিতে ব্যবসায়ীদের ৪০টি দোকান ভেঙে দিয়ে দুই মাসের মধ্যে আবার ৮ কোটি টাকা ঘুস নিয়ে অবৈধভাবে একসনা ডিসিআর দিয়েছেন। অসুস্থতার ভান করে তিনি ৫ জুলাই হেলিকপ্টারে টাকা নিয়ে পালিয়ে যান। আবার ২৫ জুলাই বরগুনা এসে নবাগত জেলা প্রশাসক মোহা. রফিকুল ইসলামের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করেন।

ওই সূত্র আরও জানান, ডিসির গাড়িচালক আল আমিন সব কিছু জানেন। কোথায় কীভাবে ওই নারীকে নিয়ে ডিসি অভিসারে গেছেন; তার একমাত্র সাক্ষী গাড়িচালক আল আমিন। যদিও আল আমিন বিষয়টি এড়িয়ে গেছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বরগুনার স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি বলেন, ভিডিওতে থাকা ওই নারীর পরিচয় এখন পর্যন্ত পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ভিডিওটি ডিসি বাংলোর পূর্বপাশের দোতলার একটি কক্ষ বলে ওই নারী নিশ্চিত করেছেন সূত্র।

এ বিষয়ে জানতে হাবিবুর রহমানকে অনেকবার ফোন করা হয়েছে। কিন্তু তিনি রিসিভ করেননি। তার হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে বক্তব্য জানতে চাইলে কোনো জবাব দেননি।

এদিকে ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনার ঝড় বইছে।

 

সূত্র: যুগান্তর

এরকম আরও খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button