দিন দিন গাজীপুরে বাড়ছে গ্যাস সিলিন্ডারে আতঙ্ক
গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : শিল্প অধ্যুষিত গাজীপুর ঘনবসতিপূর্ণ জেলা। জেলাটিতে দিন দিন বাড়ছে এলপি গ্যাসের চাহিদা। এ চাহিদা পূরণে জেলার বিভিন্ন অলিগলিতে বিক্রি হচ্ছে এলপি গ্যাস সিলিন্ডার। পাশাপাশি নিম্নমানের সিলিল্ডার রেগুলেটর ও গ্যাস সংযোগ পাইপ বিক্রি হচ্ছে অবাধে। এ ছাড়া এলপি গ্যাস ব্যবহারকারীদের অজ্ঞতা, নিম্নমানের গ্যাস সরঞ্জাম এবং ত্রুটিপূর্ণ ব্যবহারের কারণে সিলিন্ডার বিস্ফোরণসহ মারাত্মক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে গাজীপুরে।
বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে জানা গেছে, এ বছরের পহেলা জানুয়ারি থেকে ২৫ মে পর্যন্ত গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় এলপি গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ এবং অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় দুই নারী ও শিশুসহ পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে।
গত ২২ মে রাতে গাজীপুর মহানগরীর বাসন থানাধীন ইসলামপুর এলাকায় এলপি গ্যাস সিলিন্ডার থেকে সৃষ্ট অগ্নিকান্ডে একই পরিবারের চারজনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া গত ৫ মার্চ জেলার শ্রীপুর পৌর এলাকার গিলারচালা গ্রামে রান্না করার সময় গ্যাস পাইপ লিকেজ থেকে সৃষ্ট অগ্নিকাণ্ডে দগ্ধ হয়ে সেলিনা আক্তার নামে এক কারখানা শ্রমিক নিহত হন। এ অগ্নিকান্ডের ঘটনায় ওই বাড়ির চারটি টিনশেড কক্ষ ভস্মীভূত হয়। ৩১ মার্চ শ্রীপুর পৌর এলাকার মুলাইদ গ্রামে মঞ্জুরুল ইসলামের বাড়িতে গ্যাস সিলিন্ডার থেকে সৃষ্ট অগ্নিকাণ্ডের ওই বাড়ির আটটি ঘর ভস্মীভূত হয়।
জানা গেছে, এসব দোকানে ভিন্ন ভিন্ন দামে গ্যাস সিলিন্ডারসহ গ্যাস সংযোগ সরঞ্জাম বিক্রি হচ্ছে। সিলিন্ডারের রেগুলেটরের গুণগত মান নির্ধারিত হচ্ছে দামে। বিভিন্ন নামে মালয়েশিয়া থেকে আমদানিকৃত রেগুলেটর দেখা গেছে এসব দোকানে। অথচ রেগুলেটরে উল্লেখ নেই আমদানিকারকের ঠিকানা, মূল্য এবং উৎপাদনের তারিখ। রেগুলেটরটি কত দিন ব্যবহার করা যেতে পারে তা জানেন না এসব দোকানের বিক্রেতারা।
এলপি গ্যাস ব্যবহারকারী গৃহিণী আসমা বেগম জানান, রান্না করা অবস্থায় লিকেজ হলে হয় সিলিন্ডার বিস্ফোরণ নতুবা ঘরে আগুন লেগে যাবে। আগুন তো আর লিকেজ সরানোর সময় দেবে না। গুণগত মানসম্মত সিলিন্ডার এবং গ্যাস সংযোগ সরঞ্জাম নিশ্চিতের দাবি জানান তিনি।
গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার জাকির হোসেন জানান, অধিকাংশ ক্ষেত্রে এলপি গ্যাস ব্যবহারকারীদের অসচেতনতার কারণে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটছে। তবে সচেতনতা বৃদ্ধিতে বিভিন্ন পরিকল্পনার বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এর পাশাপাশি বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সামাজিক সংগঠন এবং এনজিও সচেতনা বৃদ্ধিতে এগিয়ে আসার সুযোগ রয়েছে। যেসব দোকানে অনুমোদন ছাড়াই এলপি গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি হচ্ছে সেসব দোকানে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চলমান আছে।