গাজীপুর

শহীদ ময়েজউদ্দিনের ৩৯তম শাহাদাৎ বার্ষিকী আজ

গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : আজ ২৭ সেপ্টেম্বর (বুধবার) শহীদ মোহাম্মদ ময়েজউদ্দিনের ৩৮তম শাহাদাৎ বার্ষিকী। এই উপলক্ষে ঢাকা ও কালীগঞ্জে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হবে।

১৯৮৪ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে তিনি কালীগঞ্জে দুষ্কৃতকারীদের ছুরিকাঘাতে শহীদ হয়েছিলেন।

স্বাধীনতা পুরষ্কার প্রাপ্ত জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ময়েজউদ্দিনের শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে সকাল ৯টায় বনানী কবরস্থানে শ্রদ্ধা নিবেদনের মাধ্যমে দিনের কর্মসূচি শুরু হবে। এছাড়াও গাজীপুর ও কালীগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।

শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর)  সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘গণতন্ত্র ও সন্ত্রাসমুক্ত সমাজ গঠনে শান্তি ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায় জনপ্রতিনিধি ভূমিকা’ শীর্ষক এক আলোচনা ও স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ.ক.ম মোজাম্মেল হক এমপি।

শহীদ মোহাম্মদ ময়েজউদ্দিন কালীগঞ্জের নোয়াপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক শিক্ষা লাভের পর রাজা রাজেন্দ্র নারায়ণ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৪৮ সালে প্রথম বিভাগে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ঢাকা কলেজে ভর্তি হন। তিনি ১৯৫০ সালে প্রথম বিভাগে ইন্টারমিডিয়েট পাস করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক শ্রেণীতে ভর্তি হন এবং সেখান থেকে ১৯৫৩ সালে রাষ্ট্র্রবিজ্ঞানে স্নাতক (সম্মান) ও ১৯৫৫ সালে এমএ ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৬০ সালে এখান থেকে এলএলবি পাস করে আইন পেশায় আত্মনিয়োগ করার সাথে সাথে রাজনীতিতেও সক্রিয় হন।

শহীদ মোহাম্মদ ময়েজউদ্দিন স্বাধীনতাপূর্ব ও পরবর্তী বাংলাদেশের অন্যতম সাহসী ও পরোপকারী রাজনীতিবিদ যিনি ঐতিহাসিক আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা পরিচালনা কমিটির জন্য গঠিত ‘মুজিব তহবিলের’ও আহবায়ক ছিলেন। শহীদ ময়েজউদ্দিন বৃহত্তর ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, পরে সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭০ এবং ১৯৭৩ সালে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে গাজীপুর-কালীগঞ্জ নির্বাচনী এলাকা থেকে যথাক্রমে প্রাদেশিক পরিষদ সদস্য এবং জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। ১৯৪৭ সালে ভারত ভাগের পর তিনি ঢাকার কমলাপুর ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার ও পরে ১৯৬৪-৬৫ সালে চেয়ারম্যান এবং কমলাপুর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ঢাকা মিউনিপ্যাল কর্পোরেশনের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্বও পালন করেছেন। তিনি ছিলেন আন্তর্জাতিক রেডক্রস সোসাইটির সদস্য । ১৯৭০-৭১ সালে তিনি ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি ঢাকার সিদ্বেশরী হাইস্কুলে কিছুদিন শিক্ষকতাও করেছেন। তিনি ছিলেন বাংলাদেশ রেডক্রস সোসাইটির ভাইস চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ পরিবার পরিকল্পনা সমিতি (এফপিএবি)’র অবৈতনিক মহাসচিব। তিনবার রেডক্রস সোসাইটির ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। এই দু’টি সংস্থার মূল নেতৃত্বে থেকে তিনি তার সমাজকল্যাণের ভূমিকাকে বিস্তৃত করেছেন। সেইসাথে এই দু’টি সংগঠনের কার্য-পরিধিও অনেকাংশে বিস্তৃত করেন। একজন সমাজসেবী হিসেবে তার উজ্জ্বল ভূমিকা আমরা সবসময়ে লক্ষ করেছি। সামাজিক সমস্যা সমাধানে একজন মানুষ হিসেবে স্বেচ্ছাপ্রণোদিত কাজের মধ্যে দিয়ে তিনি তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন।

এরকম আরও খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button