আলোচিতরাজনীতি

নজরদারি এড়িয়ে আন্দোলনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতেই বিদেশে বিএনপির শীর্ষ নেতারা?

গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনসহ কয়েকটি দাবিতে যুগপৎ আন্দোলনে আছে বিএনপি। চলমান এই আন্দোলনের মাঝেই হঠাৎ চিকিৎসার নামে দেশের বাইরে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলটির নীতিনির্ধারণী ফোরামের অন্তত পাঁচ সিনিয়র নেতা। দীর্ঘদিন ধরে দেশের বাইরে রয়েছেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানও। ধারণা করা হচ্ছে, দলের আরও একজন স্থায়ী কমিটির সদস্য ও তিনজন ভাইস চেয়ারম্যান সিঙ্গাপুরে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। চিকিৎসা নাকি বৈঠক। একদফার আন্দোলন যখন চূড়ান্ত পর্যায়ের দিকে, তখন দলের গুরুত্বপূর্ণ এসব নেতার বিদেশে অবস্থান নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা আলোচনা, গুঞ্জন চলছে।

বিএনপির একাধিক নেতা সংবাদ মাধ্যমকে জানান, দলের চেয়ারম্যান তারেক রহমান সিঙ্গাপুরে যাবেন না। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য অনলাইনে মিটিং হবে। বাংলাদেশে বসে অনলাইনে মিটিং হলে সরকার আড়িপাতবেই। তাই সরকারের এই নজরদারির বাইরে থাকতেই দেশের বাইরে বিএনপির নেতারা।

জানা গেছে, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গত ২৪ আগস্ট সিঙ্গাপুরের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেন। তার সঙ্গে স্ত্রী ও কন্যা গেছেন। গত ২৭ জুন থেকে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা নিচ্ছেন স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। ২৬ আগস্ট চিকিৎসা গ্রহণের উদ্দেশ্যে সিঙ্গাপুর গেছেন স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। এর আগে থেকেই থাইল্যান্ডে অবস্থান করছেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।

চিকিৎসার কাজে দীর্ঘদিন ধরে দিল্লিতে অবস্থান করছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমেদ। চলতি বছরের মার্চে ভারতের শিলং আদালত তাকে খালাস দিলে কিছুদিন পর তিনি দিল্লি যান। সেখানে তিনি স্ত্রীসহ অবস্থান করছেন।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির ১৪ সদস্যের মধ্যে ছয়জনই এখন দেশের বাইরে। শর্তসাপেক্ষ মুক্তিতে গুলশানের বাসায় অবস্থান করছেন খালেদা জিয়া, অসুস্থ অবস্থায় রয়েছেন ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার ও ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া। গত মে মাসে স্ত্রী নুর আকতারকে হারান জমির উদ্দিন। এরপর থেকে স্থায়ী কমিটির বৈঠকে অনিয়মিত হয়ে পড়েন তিনি। দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে টানা বিছানায় শয্যাশায়ী রফিকুল ইসলাম মিয়া। স্থায়ী কমিটির সদস্যদের মধ্যে গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সেলিমা রহমান দলীয় কর্মসূচিতে সক্রিয় রয়েছেন।

একাধিক নেতার ভাষ্য, বিএনপিতে হরতাল ও অবরোধ নিয়ে আলোচনা চলছে। দলের ভেতর থেকে নীতিনির্ধারকদের ওপর কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার চাপ অব্যাহত রয়েছে। সেক্ষেত্রে চূড়ান্ত ধাপে হরতাল, অবরোধ ও ঘেরাও কর্মসূচির চিন্তা থাকতে পারে বিএনপিতে।

বিএনপির এই প্রভাবশালী নেতাদের হঠাৎ বিদেশ গমন নিয়ে একাধিক সূত্র সংবাদ মাধ্যমকে বলছে, চিকিৎসার কথা বললেও তারা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এবং আন্দোলনের বিষয়ে সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে দলের হাই কমান্ডের সাথে বৈঠক করবেন। তারা দেশে ফিরলেই সরকার পতনসহ অন্যান্য দাবিতে আন্দোলনের রূপরেখা ঘোষণা করা হবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির এক কেন্দ্রীয় নেতা সংবাদ মাধ্যমকে জানান, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছিলেন- রাষ্ট্র এবং সরকারবিরোধী তৎপরতা নস্যাৎ করার জন্য সামাজিক মাধ্যমে নজরদারি বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে পদক্ষেপ নিয়েছে। আমরাও সেটাই দেখছি কীভাবে অধিকার লঙ্ঘন করে সরকার আমাদের ফোনে আড়িপাতছে।

দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সিঙ্গাপুরে যাবেন না বিষয়টি নিশ্চিত করে বিএনপির একাধিক নেতা
সংবাদ মাধ্যমকে জানান, দলের চেয়ারম্যান তারেক রহমান সিঙ্গাপুরে যাবেন না। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য অনলাইনে মিটিং হবে। বাংলাদেশে বসে অনলাইনে মিটিং হলে সরকার আড়িপাতবেই। তাই সরকারের এই নজরদারির বাইরে থাকতেই দেশের বাইরে বিএনপির নেতারা।

বিএনপির আরেকটি সূত্র সংবাদ মাধ্যমকে বলছে, দলের আরও একজন স্থায়ী কমিটির সদস্য ও ভাইস চেয়ারম্যান সিঙ্গাপুরে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। মিটিং অনলাইনে হলেও সিঙ্গাপুরে তারেক রহমানের বিশেষ প্রতিনিধি থাকবে যেখানে দলের শীর্ষ নেতাদের বৈঠক হবে।

 

সূত্র: কালবেলা

এরকম আরও খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button