দেশ ছাড়তে চায় প্রতি তিনজনে একজন ইসরায়েলি

গাজীপুর কণ্ঠ, আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইসরায়েলে বিচার বিভাগের ক্ষমতা কমাতে সরকারের নেওয়া বিতর্কিত সংস্কার পদক্ষেপের বিরোধিতায় সপ্তাহে সপ্তাহে হাজারো মানুষের বিক্ষোভে সামিল হওয়ার মধ্যেই এক জরিপে দেখা গেছে, দেশ ছেড়ে যাওয়ার চিন্তাভাবনা করছেন প্রতি তিনজনে একজন ইসরায়েলি।
বিবিসি জানায়, দেশ ছাড়তে চান এমন একজন হলেন, ইসরায়েলি অধ্যাপক চেন হফম্যান। বিশাল সরকার বিরোধী সমাবেশেও তিনি অংশ নিচ্ছেন।
গত শনিবার রাতে রাজধানী তেল আবিবের কেন্দ্রস্থলে যে বিক্ষোভ হয়েছে তাতে অংশ নিয়ে এই চিকিৎসক বলেন, “রাস্তায় গিয়ে বিক্ষোভ করা আমাদের রীতি না। কিন্তু আমরা তা করতে বাধ্য হচ্ছি; কারণ, আমরা আমাদের দেশকে হারিয়ে ফেলছি। আমাদের কাছে এখন বিষয়টি এমনই মনে হয়।”
ইসরায়েলে নামকরা এই রেডিওলজিস্ট এখন যুক্তরাজ্যের হাসপাতালে যোগ দেওয়ার প্রক্রিয়ায় আছেন। পরিবারের অন্য সদস্যদের যাদের ইউরোপীয় পাসপোর্ট আছে তাদেরকেও দেশ ছাড়তে উৎসাহ যোগাচ্ছেন তিনি।
বিদেশে যেতে চাওয়ার ব্যাখ্যায় হফম্যান বলেন, “আমি ছুটি নিয়ে লন্ডন যাচ্ছি। এর মাধ্যমে আমি মূলত দেখতে চাইছি, বিদেশে থাকতে পারব কি না। যদি দেখি ইসরায়েলে পরিস্থিতি দিন দিন খারাপ হচ্ছে, তাহলে বসবাসের জন্য নতুন জায়গা খুঁজে নেব।”
ইসরায়েলে বিচারব্যবস্থা সংস্কারের বিতর্কিত বিল নিয়ে গণবিক্ষোভের মধ্যেই গত ২৪ জুলাই পার্লামেন্টে তা পাস হয়। এর মধ্য দিয়ে বিলটি আইনে পরিণত হয়। এতে কমেছে আদালতের ক্ষমতা।
এতোদিন সরকারের নেওয়া কোনও পদক্ষেপ অযৌক্তিক মনে করলে ইসরায়েলের সুপ্রিম কোর্ট তা নাকচ করতে পারত। কিন্ত নতুন আইনের আওতায় সুপ্রিম কোর্টের সে ক্ষমতা আর থাকছে না।
আদালতের ক্ষমতা কমাতে সরকারের এমন পদক্ষেপের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের রাজধানী তেল আবিবসহ বড় বড় নগরীতে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ হয়েছে। কয়েক মাস ধরে চলে আসছে এই বিক্ষোভ।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলছেন, সংস্কারের মধ্য দিয়ে আদালতের ক্ষমতা খর্ব হয়ে সরকারের বিভিন্ন শাখার মধ্যে ভারসাম্য ফিরে আসবে।
সম্প্রতি কয়েক দশকে রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে আদালতের হস্তক্ষেপ বেড়ে গেছে বলেই ভাষ্য সরকারের। তবে বিরোধীরা বলছে, সরকারের এমন পদক্ষেপ গণতন্ত্রের জন্য হুমকি।
গত বছর ডিসেম্বরে ইসরায়েলে নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন কট্টর ডানপন্থি জোট সরকার গঠিত হওয়ার পর এবছরের জানুয়ারিতে বিচারব্যবস্থা সংস্কার পরিকল্পনার ঘোষণা করা হয়। তখন থেকেই এর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দানা বেঁধেছে।
এর মধ্যেই গত ১০ জুলাই ইসরায়েলের পার্লামেন্টে প্রথম দফার ভোটাভুটির জন্য বিলটি তোলা হলে সেটি গৃহীত হয়েছিল। আর ২৪ জুলাই বিলটি আইনে পরিণত হয়।