গাজীপুর

পূবাইলে মাদ্রাসা ছাত্রীকে ধর্ষণের পর ডোবার পানিতে ফেলে হত্যা, গ্রেপ্তার ১

নিজস্ব সংবাদদাতা : পূবাইলে নূপুর আক্তার (৮) নামে এক মাদ্রাসা ছাত্রীকে ধর্ষণের পর ডোবার পানিতে ফেলে দিয়ে পালিয়ে যায় ধর্ষক। এর একদিন পর পানিতে লাশ ভেসে উঠলে তা উদ্ধার করে পুলিশ।  এ ঘটনায় অজ্ঞাত আসামির বিরুদ্ধে নিহতের বাবা বাদী হয়ে মামলা দায়ের করলে ঘটনায় জড়িত সন্দেহে আব্দুল্লাহ ফকির ওরফে আব্দুল্লাহ (২০) নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। 
শনিবার (১৫ জুলাই) গ্রেপ্তার আব্দুল্লাহকে আদালতে পাঠানো হলে ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে সে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।
গ্রেপ্তার আব্দুল্লাহ ফকির ওরফে আবদুল্লাহ বাগেরহাট জেলার মোল্লারহাট থানার কাচনা এলাকার আব্দুল আলীম ফকিরের ছেলে। সে পূবাইলে মাজুখান পশ্চিমপাড়া এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করতো।
নিহত শিশু নূপুর আক্তার পূবাইলের মাজুখান বাঘেরটেক এলাকার আবুল হোসেনের মেয়ে। সে স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় পড়তো।
এজাহার ও থানা সূত্রে জানা গেছে, গত ১২ জুলাই (বুধবার) দুপুর ১টার দিকে নূপুর আক্তার আইসক্রিম খেতে বাসা থেকে বের হয়। এরপর সে আর বাড়ি ফেরেনি। পরবর্তীতে আশপাশের এলাকায় খোঁজ করেও তার সন্ধান পাওয়া যায়নি। পরদিন ১৩ জুলাই (বৃহস্পতিবার) সকাল ১০টার দিকে স্থানীয় বাঘেরটেক এলাকায় একটি ডোবার পানিতে ভাসমান অবস্থায় একটি লাশ দেখতে পায় স্থানীয়রা। খবর পেয়ে নিখোঁজ নূপুরের বাবা আবুল হোসেন ঘটনাস্থলে গিয়ে শনাক্ত করেন এটি তার মেয়ে নূপুর আক্তারের লাশ। পরবর্তীতে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মর্গে পাঠায়। এ ঘটনায় ১৪ জুলাই (শুক্রবার) রাতে অজ্ঞাত আসামির বিরুদ্ধে নিহত নূপুরের বাবা আবুল হোসেন বাদী হয়ে পূবাইল থানায় হত্যা ও লাশ গুমের অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করেন {মামলা নাম্বার-৪(৭)২৩}।
এরপর শনিবার (১৫ জুলাই) ভোরে পূবাইলের মাজুখান এলাকা থেকে সন্দেহভাজন হিসেবে আব্দুল্লাহ ফকির ওরফে আব্দুল্লাহকে আটক করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে পুলিশের কাছে সে ঘটনার দায় স্বীকার করে। পরে তাকে আদালতে পাঠানো হলে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় আব্দুল্লাহ।
আদালতে দেয়া জবানবন্দিতে আব্দুল্লাহ জানায়, ঘটনার দিন নূপুর আক্তার ও তার প্রতিবেশী মরিয়ম (১৩) এবং আব্দুল্লাহ সকলেই ওই ডোবার পানিতে গোসল করতে নামে। মরিয়ম গোসল শেষে বাড়ি ফিরে যায়। কিন্তু নূপুর এবং আব্দুল্লাহ ডোবার পানিতেই ছিলো। এক পর্যায়ে আব্দুল্লাহ নূপুরকে ডোবার পাড়ে নির্জন স্থানে নিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। সে সময় ডোবার অপরপ্রান্তে মানুষ চলাচলের শব্দ পেয়ে নূপুরকে ডোবার পানিতে ফেলে দিয়ে পালিয়ে যায় আব্দুল্লাহ। পরে পানিতে ডুবে নূপুর মারা যয়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পূবাইল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মিল্টন কুন্ড বলেন, আব্দুল্লাহকে আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে সে ঘটনার দায় স্বীকার করে‌। পরে তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হলে সে নিজে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে।

এরকম আরও খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button