
গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : বগুড়ার সোনাতলায় রেল বিভাগের পুকুর দখল করে মাটি ভরাট করার অভিযোগ উঠেছে আওয়ামী লীগ ও স্বেচ্ছাসেবক দল নেতার বিরুদ্ধে। এতে সোনাতলা পৌর এলাকার ও উপজেলা পরিষদের পানি নিষ্কাষণের পথ বন্ধ হয়ে গেছে। বর্ষা মৌসুমে এজন্য পৌরবাসীকে ভুগতে হতে পারে বলে মনে করছেন অনেকেই।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, দখলদাররা প্রভাবশালী হওয়ায় উপজেলা প্রশাসন ব্যবস্থা নেয়নি। এনিয়ে প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন তারা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সোনাতলা রেল স্টেশন থেকে হাসপাতাল সড়কের হাসপাতালের পূর্ব দিকে রেলের সম্পত্তিতে দুটি পুকুর ছিল। পুকুরটি লিজ নিয়ে মাছ চাষ করতেন জেলেরা। কিন্তু দখলের কারণে বর্তমানে এ পুকুরের অস্তিত্ব বিলীন হয়েছে।
এলাকাবাসী জানান, সম্প্রতি সোনাতলা পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মিস্টার ও সোনাতলা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা মোস্তাক আহমেদ লিটন দুটি পুকুর দখল করে মাটি ভরাট করেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, সোনাতলা উপজেলা পরিষদের কাছে শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামের পাশ দিয়ে পানি নিষ্কাষণের একমাত্র ড্রেনটি উপজেলা পরিষদের সীমানা প্রাচীর সংলগ্ন পুকুরে শেষ হয়েছে। তবে সেটিরও ড্রেনের মুখ বন্ধ হয়ে গেছে। বর্ষা শুরু হলে এ কারণে উপজেলা পরিষদ চত্বর ও পৌর শহরের নিচু এলাকা প্লাবিত হবে।
অভিযোগের বিষয়ে আওয়ামী লীগ নেতা মিজানুর রহমান মিস্টার সংবাদ মাধ্যমকে জানান, সেখানে তার কোনো জমি নেই। এমনকি রেলের পুকুর দখল বা সেখানে মাটি ভরাটের সাথেও তিনি জড়িত নন। এটি রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের মিথ্যাচার ও ষড়যন্ত্র।
তবে স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা মোস্তাক আহম্মেদ লিটন ফোন ধরেননি।
সোনাতলা রেলওয়ে স্টেশনের সহকারি স্টেশন মাস্টার বাসুদেব সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, “রেলের পুকুর দখল করে মাটি ভরাটের বিষয়ে ইতোমধ্যে কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।”
বগুড়া রেলের প্রকৌশল বিভাগের সহকারি নির্বাহী প্রকৌশলী সাইদুর রহমান সংবাদ মাধ্যমকে জানান, সোনাতলা রেল স্টেশনের কাছে পুকুর ভরাটের বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছেন। তদন্ত সাপেক্ষে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সোনাতলা পৌরসভার মেয়র জাহাঙ্গীর আলম আকন্দ নান্নু সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, “আওয়ামী লীগ নেতা মিজানুর রহমান মিস্টার ও স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা মোস্তাক আহম্মেদ লিটন
রেলের প্রায় এক বিঘা আয়তনের ২-৩টি পুকুর দখল করে সেখানে মাটি ভরাট করেছেন। এতে পৌরসভার অধিকাংশ এলাকার পানি নিস্কাশন ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে যাবে। বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা দেখা দেবে।”
তিনি আরও জানান, বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করা হলেও কোনো প্রতিকার মেলেনি।
মেয়র নান্নু জলাবদ্ধতা থেকে বাঁচতে দখল ও ভরাট করা পুকুর দুটি উদ্ধারে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
সোনাতলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাঈদা পারভীন সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, “পুকুর দখলের বিষয়টি রেল কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।”
সূত্র: ঢাকা ট্রিবিউন