আলোচিতগাজীপুর

দলে ফেরার চার মাসের মধ্যে ফের স্থায়ীভাবে বহিস্কার হলেন জাহাঙ্গীর

গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : ক্ষমা চেয়ে দলে ফেরার চার মাসের মধ্যে আবার আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত হলেন গাজীপুরের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম।

এবার তাকে স্থায়ীভাবে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

সোমবার (১৫ মে) আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, “বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ সংগঠনের গঠনতন্ত্রের বিধি মোতাবেক গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলমকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে স্বায়ীভাবে বহিস্কার করেছে। এটি অবিলম্বে কার্যকর হবে।”

ক্ষমা চেয়ে দলের ফেরার পর গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে আবার দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করায় জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে আওয়ামী লীগ।

আগামী ২৫ মে অনুষ্ঠেয় গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে জাহাঙ্গীর তার মা জায়েদা খাতুনকে মেয়র প্রার্থী করে তার পক্ষে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন; যদিও আওয়ামী লীগ সেখানে প্রার্থী করেছে আজম উল্লা খানকে।

ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সহসভাপতি জাহাঙ্গীর গত এক দশক ধরে গাজীপুরের রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচিত ব্যক্তি।

২০১৩ সালে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মেয়র পদে আজমতকে সমর্থন দিলেও জাহাঙ্গীর ‘বিদ্রোহী’ হয়ে প্রার্থী হন।

দলের নির্দেশেও ভোট থেকে সরে দাঁড়াতে রাজি না হওয়ার পর নিখোঁজ হন জাহাঙ্গীর। ভোটের আগে আগে গাজীপুরে ফিরে কাঁদতে কাঁদতে আজমতকে সমর্থন জানান তিনি।

তবে সেই নির্বাচনে বিএনপি নেতা আব্দুল মান্নানের কাছে আজমততের হারার জন্য জাহাঙ্গীরের বিরোধিতাকেই দায়ী করা হয়।

পাঁচ বছর পরে ২০১৮ সালের নির্বাচনে জাহাঙ্গীর দলীয় প্রতীক নৌকা নিয়ে মেয়র নির্বাচিত হন। সেই নির্বাচনের পর থেকে রাজধানী লাগোয়া এই জনপদে জাহাঙ্গীরের প্রভাব ক্রমেই বাড়ছিল।

তবে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে একটি ঘরোয়া আলোচনায় বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের নিয়ে ‘আপত্তিকর’ মন্তব্য করার অভিযোগ উঠে তার বিরুদ্ধে।

আওয়ামী লীগের একটি অংশের ক্ষোভ-বিক্ষোভের মধ্যে জাহাঙ্গীরের দলীয় সদস্যপদ কেড়ে নেয় আওয়ামী লীগ। বরখাস্ত হন মেয়র পদ থেকেও।

এক বছরের বেশি সময় পর ভবিষ্যতে সংগঠনের স্বার্থ পরিপন্থী কার্যক্রম ও সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গ না করার শর্তে গত ১ জানুয়ারি তাকে ক্ষমা করার কথা জানিয়ে চিঠি দেয় আওয়ামী লীগ।

ক্ষমা চেয়ে শৃঙ্খলা মেনে চলার শর্তে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের চার মাস যেতে না যেতেই ফের দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে গাজীপুর সিটি নির্বাচনে প্রার্থী হন জাহাঙ্গীর।

জাহাঙ্গীরও দলের মনোনয়ন চেয়েছিলেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ মনোনয়ন দেয় আজমতকে। কিন্তু জাহাঙ্গীর নিজে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। শুধু তাই নয়, মায়ের নামেও মনোনয়নপত্র জমা দেন তিনি।

বাছাইয়ে খেলাপি ঋণের কারণে জাহাঙ্গীরের মনোনয়নপত্র বাতিল হলেও তার মায়েরটি টিকে আছে। আর নৌকার প্রার্থীর বিপরীতে মায়ের হয়ে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন জাহাঙ্গীর।

এর মধ্যে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন, শর্ত সাপেক্ষে জাহাঙ্গীরকে ক্ষমা করা হয়েছিল। কিন্তু তিনি একই আচরণ করে যাওয়ায় তার বিরুদ্ধে ‘কঠিন ব্যবস্থা’ নেওয়া হবে।

এর কয়েকদিন পরই জাহাঙ্গীরকে স্থায়ী বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত এল।

এরকম আরও খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button