কালীগঞ্জে প্রেমিকের বাড়িতে বিয়ের দাবিতে প্রেমিকার অনশন, আত্মহত্যার হুমকি

নিজস্ব সংবাদদাতা : কালীগঞ্জে প্রতিশ্রুতি দিয়েও বিয়ে না করায় আত্মহত্যা হুমকি দিয়ে প্রেমিকের বাড়িতে গিয়ে বিয়ের দাবিতে প্রায় ৭ ঘন্টা অনশন করে এক প্রেমিকা। এ সংবাদ পেয়ে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায় প্রেমিক। একপর্যায়ে জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর-৯৯৯ এ কল করে পুলিশকে খবর দেয় স্থানীয়রা। এরপর পুলিশ ঘটনাস্থলে হাজির হলে শর্তসাপেক্ষে অনশন ভেঙ্গে বাড়ি ফিরে ভুক্তভোগী প্রেমিকা।
শনিবার (৬ মে) বিকেল ৪টার থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত কালীগঞ্জের বাহাদুরসাদী ইউনিয়নের ধোলাসাধুখাঁ গ্রামে এ অনশন চলে।
পলাতক প্রেমিক বাহাদুরসাদী ইউনিয়ন ৮নং ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার ধোলাসাধুখাঁ গ্রামের মাজেদ আলির ছেলে জাহিদুল ইসলাম (২৪)। তিনি স্থানীয় একটি কারখানায় চাকরি করেন।
অনশন করা প্রেমিকা কালীগঞ্জ পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের রাজপাড়া বাগদীরটেক গ্রামের মৃত আমির হোসেনের মেয়ে মাসুমা আক্তার (২১)।
অনশন করা তরুণীর বরাত দিয়ে তার স্বজন ও স্থানীয়রা জানায়, প্রায় চার বছর পূর্বে স্থানীয় মোতালেব হোসেনের সঙ্গে পারিবারিকভাবে মাসুমা আক্তারের বিয়ে হয়। এরপর তাদের সংসারে ছেলে সন্তানের জন্ম হয়। কিছুদিন পর মোতালেব পরকীয়া প্রেমে লিপ্ত হয়েছে এমন অভিযোগে সংসারে দাম্পত্য কলহ বাঁধে। এর জের ধরেই প্রায় এক বছর আগে মাসুমা আক্তারের সঙ্গে তার স্বামীর বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। এরপর থেকে মাসুমা আক্তার সন্তান নিয়ে তার বাবার বাড়িতে বসবাস করতে থাকে। এরমধ্যে জাহিদুলের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে মাসুমা আক্তার। প্রায় এক বছর যাবত তাদের মধ্যে গোপনে প্রেম চলতে থাকে। শনিবার বিকেল ৪টার দিকে কাউকে কিছু না বলেই হঠাৎ করে জাহিদুলের বাড়িতে গিয়ে হাজির হয়ে বিয়ের দাবি তুলে মাসুমা আক্তার। সে সময় জাহিদুল বাড়িতে ছিল না। পরে বিয়ের দাবিতে ওই বাড়িতে অনশন শুরু করে মাসুমা। দাবি না মানলে আত্মহত্যার হুমকিও দেয় সে। বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে স্থানীয়রা জড়ো হয়। রাত সাড়ে ৮টার দিকে স্থানীয় ইউপি সদস্য আনোয়ার হোসেন ঘটনাস্থলে যায়। এর মধ্যে জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর-৯৯৯ এ কল করে বিষয়টি পুলিশকেও জানায় স্থানীয়রা। রাত পৌনে ১১টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে হাজির হয়। এরপর মেয়ের বক্তব্য শুনে উভয় পক্ষের অভিভাবকদের ডেকে এনে আগামী সোমবার ছেলেকে হাজির করার সিদ্ধান্ত হয়। ওই দিন জাহিদুলের উপস্থিতে বিয়ের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে এমন প্রস্তাব দেয়া হলে তা মেনে নিয়ে অনশন ভেঙে তার মা ও বোনের সঙ্গে বাড়ি ফিরে যেতে সম্মত হয় মাসুমা।
ভুক্তভোগী মাসুমা আক্তার বলেন, প্রায় এক বছর যাবত জাহিদুলের সঙ্গে আমার প্রেমের সম্পর্ক চলছে। আমাকে নিয়ে বিভিন্ন সময় জাহিদুল ঘোড়াশাল ও পূবাইল এলাকার রিসোর্টে সময় কাটিয়েছে। সে আমাকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েও বিয়ে না করায় তার বাড়িতে গিয়ে অনশন করেছি। আমার দাবি মেনে না নিয়ে আমি আত্মহত্যা করবো।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আনোয়ার হোসেন বলেন, ওই মেয়ে বিকেলে অনশন শুরু করে। সংবাদ পেয়ে রাত সাড়ে ৮টার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে বিস্তারিত শুনে থানায় খবর দেয়া হয়। এরপর আনুমানিক রাত পৌণে ১১টার দিকে থানা থেকে পুলিশ আসে। পরে দুই পক্ষের অভিভাবকদের উপস্থিতিতে সিদ্ধান্ত নেয়া হয় আগামী সোমবার জাহিদুলকে হাজির করে এ বিষয়ে পরবর্তী করণীয় ঠিক করা হবে। এরপর অনশন ভেঙে মাসুমা তার মা ও বোনের সঙ্গে বাড়ি ফিরে গেছে।
কালীগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আমিনুল ইসলাম বলেন, ৯৯৯ থেকে কল পেয়ে রাত পৌনে ১১টার দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছে মেয়েকে তার মা ও বোনের জিম্মায় দেয়া হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, উভয় পক্ষের অভিভাবক ও স্থানীয় ইউপি সদস্যসহ সকলে মিলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে আগামী সোমবার অভিযুক্ত জাহিদুলকে হাজির করে এ বিষয়ে পরবর্তী করণীয় ঠিক করা হবে।
আরো জানতে……….
কালীগঞ্জে বিয়ের প্রলোভনে প্রবাসীর স্ত্রীর সঙ্গে সহবাস, বিয়ের দাবিতে অনশন!