আপিল করেও লাভ হল না, এখন উচ্চ আদালতে যাবেন জাহাঙ্গীর আলম

গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে আপিল করেও লাভ হল না গাজীপুর সিটি করপোরেশনে মেয়র পদে ভোট করতে ইচ্ছুক দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী হিসেবে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়া সাবেক জাহাঙ্গীর আলমের।
বৃহস্পতিবার (০৪ মে) ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার সাবিরুল ইসলাম প্রার্থী জাহাঙ্গীরের আপিল আবেদন খারিজ করে দেন।
তবে জাহাঙ্গীর আলমের সামনে এখন উচ্চ আদালতে যাওয়ার পথ খোলা রয়েছে। তিনি সেই পথেই যাবেন বলে জানিয়েছেন।
আদালতে যদি পক্ষে আদেশ পান, তাহলে ২৫ অনুষ্ঠেয় ওই নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে দেখা যাবে জাহাঙ্গীর আলমকে।
গাজীপুরের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর তার দল আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে মেয়র পদে প্রার্থী হতে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন।
গত ৩০ এপ্রিল মেয়র প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ে জাহাঙ্গীরের প্রার্থিতা বাতিল করেন গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম।
তিনি বলেছিলেন, “উনি (জাহাঙ্গীর) একজন ঋণখেলাপি হিসেবে আমাদের কাছে তথ্য এসেছে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে। উনি একজন জামিনদাতা হিসেবে ঋণখেলাপি।”
যে ঋণের জামিনদাতা হিসেবে জাহাঙ্গীরের প্রার্থিতা বাতিল হয়, সেই ঋণ পরিশোধের দাবি সেদিনই করেছিলেন জাহাঙ্গীর। এর পক্ষে ব্যাংকের নথিপত্র দেখিয়েছিলেন তিনি।
এরপর প্রার্থিতা ফিরে পেতে তিনি গাজীপুর সিটি নির্বাচনের আপিল কর্তৃপক্ষের কাছে আপিল আবেদন করেন, যে কর্তৃপক্ষের প্রধানের দায়িত্ব পালন করছেন ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার সাবিরুল ইসলাম।
বৃহস্পতিবার ঢাকা বিভাগীয় নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে সেই আবেদনের শুনানি শেষে ঢাকার বিভাগীয় কমিশনারের একান্ত সচিব রাহুল চন্দ (জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার) সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, “(জাহাঙ্গীর আলমের) আপিল আবেদন না মঞ্জুর। আপিল কর্তৃপক্ষ তা জানিয়ে দিয়েছেন।”
জাহাঙ্গীরের উপস্থিতিতে এই রায় দেওয়া হয় বলে জানান রাহুল।
আপিলে হারার পর জাহাঙ্গীর সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, “আমি উচ্চ আদালতে যাব।”
রিটার্নিং কর্মকর্তা মনোনয়নপত্র বাতিল করার পর পক্ষপাতের অভিযোগ তুলেছিলেন জাহাঙ্গীর। তার মনোনয়নপত্র বাতিল হলেও তার মা জায়েদা খাতুনের মনোনয়নপত্র টিকে আছে।
সাবেক ছাত্রলীগ নেতা জাহাঙ্গীর ২০১৮ সালে গাজীপুর সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়ে মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন। গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকও ছিলেন তিনি।
দুই বছর আগে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে করা এক কটূ মন্তব্যের জন্য আওয়ামী লীগ তাকে দল থেকে বহিষ্কার করে। পরে মেয়র পদ থেকেও তাকে বরখাস্ত করে সরকার।
গত জানুয়ারিতে জাহাঙ্গীরকে ক্ষমা করে দলে ফিরিয়ে নেয় আওয়ামী লীগ। এর পাঁচ মাসের মধ্যে দলে সিদ্ধান্তের বাইরে গেলেন তিনি।
২০১৩ সালে অনুষ্ঠিত গাজীপুর সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচনেও আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী হয়েছিলেন জাহাঙ্গীর। সেবার নানা নাটকীয়তার পর তিনি ভোটের মাঠ ছেড়েছিলেন।
সেবার আওয়ামী লীগের সমর্থন নিয়ে মেয়র প্রার্থী হয়ে হেরেছিলেন টঙ্গী পৌরসভার সা্বেক চেয়ারম্যান আজমত উল্লা খান। প্রবীণ এই নেতা এবারও দলের মনোনয়নে নৌকা প্রতীক নিয়ে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন।