আলোচিতসারাদেশ

ভুয়া পরিচয়ে পু‌লিশের সঙ্গে প্রতারণা, মোবাইল ব্যাংকিংয়ে খোয়া গেলো আড়াই লাখ টাকা!

গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : কু‌ড়িগ্রামে ভুয়া পরিচয় ব্যবহার করে এক পুলিশ সদস্যের কাছ থেকে মোবাইল ব্যাংকিং নগদের মাধ্যমে আড়াই লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে প্রতারকচক্র।

বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) রাতে কুড়িগ্রাম জেলা শহরের বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

বাসস্ট্যান্ড এলাকার ব্যবসায়ীরা সংবাদ মাধ্যমকে জানান, রাত সাড়ে আটটার দিকে সততা স্টোরে শামীম নামে এক পুলিশ সদস্য গিয়ে দোকানদার স্বপনকে কয়েকটি নম্বরে টাকা পাঠানোর কথা বলেন। এ সময় স্বপন বিষয়টি যাচাই করতে বললে পুলিশ সদস্য শামীম তার নিজের ফোনে পুলিশ সুপারের দেহরক্ষী পরিচয়ে এক ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলিয়ে দেন। ফোনের অপর প্রান্তের ব্যক্তি স্বপনকে পুলিশ সদস্য শামীমের কথামতো টাকা পাঠাতে বলেন। পুলিশ সুপারের দেহরক্ষী টাকা নিয়ে দোকানে আসছেন বলে অপর প্রান্ত থেকে আশ্বস্ত করা হয়।

শামীমের পাশের দোকানের এক ব্যবসায়ী সংবাদ মাধ্যমকে জানান, নগদের এজেন্টকে আশ্বস্ত করতে পুলিশ সদস্য তার দোকানের ভেতরে গিয়ে বসে বলেন, “আপনি টাকা পাঠান। স্যারের দেহরক্ষী না আসা পর্যন্ত আমি দোকান থেকে বের হব না।” এ সময় এজেন্ট স্বপন শামীমের দেওয়া একাধিক মোবাইল নম্বরে মোট ২ লাখ ৫৫ হাজার টাকা পাঠান। কিন্তু শামীমের কথামতো এসপির দেহরক্ষী টাকা নিয়ে না আসায় স্বপন বিষয়টি কুড়িগ্রাম সদর থানাকে অবহিত করেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘটনার বিস্তারিত জানতে পারে।

সিএন্ডবি মোড় এলাকার একাধিক ব্যবসায়ী সংবাদ মাধ্যমকে জানান, সদর থানা–পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছার পর পুলিশ সদস্য শামীম জানান, তাকে মূলত পুলিশ লাইনস থেকে রিজার্ভ ইন্সপেক্টর (আরআই) নুর মোহাম্মদ বাসস্ট্যান্ডে পাঠিয়েছেন। এসপির কিছু মালামাল আসবে জানিয়ে তাকে তা আনতে পাঠানো হয়। কিন্তু সেখানে যাওয়ার পর এসপির দেহরক্ষী পরিচয় দিয়ে তাকে ফোন করে কয়েকটি নম্বর দিয়ে টাকা পাঠাতে বলা হয়। এরপর তিনি টাকা পাঠান।

পরে সদর থানা–পুলিশ নগদের এজেন্ট স্বপনসহ পুলিশ সদস্য শামীমকে পুলিশ লাইনসে নিয়ে যায়। সেখানে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনার বিস্তারিত শুনে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করেন। তবে তদন্তের স্বার্থে বিস্তারিত কিছু জানায়নি জেলা পুলিশ।

পুলিশ লাইন্সের আরআই নুর মোহাম্মদ সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, “বৃহস্পতিবার রাতে একটি নম্বর থেকে আমাকে ফোন দিয়ে এসপি স্যারের দেহরক্ষীর পরিচয় দেওয়া হয়। স্যারের কিছু মালামাল আসবে জানিয়ে একজন পোশাক পরিহিত কনস্টেবলকে বাসস্ট্যান্ডে পাঠাতে বলা হয়। আমি তখন একজন কনস্টেবলকে পাঠাই। কিন্তু আমি জানতাম না এটা প্রতারকদের কাজ। ওই পুলিশ সদস্য বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছালে প্রতারক চক্রটি তাকে এসপি স্যারের দেহরক্ষী পরিচয় দিয়ে কয়েকটি নম্বরে টাকা পাঠাতে বলেন। স্যারের দেহরক্ষী পরিচয় দেওয়া ব্যক্তি টাকা নিয়ে বাসস্ট্যান্ডে যাচ্ছেন বলে তাকে জানায়। তখন তিনি তা বিশ্বাস করে টাকা পাঠান।”

ভুক্তভোগী নগদ এজেন্ট স্বপনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি। তবে স্বপনের ঘনিষ্ঠ এক ব্যবসায়ী স্বপনের বরাতে সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, “জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা স্বপনকে ক্ষতি পুষিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। তদন্তের স্বার্থে তাকে আপাতত কারও সঙ্গে কথা না বলতে অনুরোধ করা হয়েছে।”

কুড়িগ্রাম সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খান মো. শাহরিয়ার সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, “এ ঘটনায় পুলিশ সদস্য শামীম বাদী হয়ে কুড়িগ্রাম সদর থানায় প্রতারণার মামলা করেছেন। পুলিশ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করতে কাজ শুরু করেছে।”

এরকম আরও খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button