গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : সরকারের ৫৮২ কোটি টাকার সার আত্মসাতের ঘটনায় নরসিংদীর সাবেক সংসদ সদস্য ও পোটন ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী কামরুল আশরাফ খানকে (পোটন) কালো তালিকাভুক্ত করেছে সরকার। ফলে তিনি বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন (বিসিআইসি) ও বাংলাদেশ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কোনো সার পরিবহন করতে পারছেন না।
সোমবার (০৩ এপ্রিল) কৃষি মন্ত্রণালয়ে সারবিষয়ক জাতীয় সমন্বয় ও পরামর্শক কমিটির সভা শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক এসব তথ্য জানান।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘তাকে (পোটন) আমরা কালো তালিকাভুক্ত করেছি। তিনি আমাদের এখানের কোনো দরপত্রে অংশ নিতে পারবেন না। তার বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। উল্টো তিনি আমাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। কীভাবে যেন আদালত তাদের পক্ষেই রায় দিয়েছেন, জানি না।’
ব্রিফিংয়ে আগামী অর্থবছরে দেশে ৬৮ লাখ ৪২ হাজার ৫০০ টন রাসায়নিক সারের প্রয়োজন হবে জানিয়ে কৃষিমন্ত্রী বলেন, চলতি অর্থবছরে সারের জন্য ১৫ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দেওয়া হয়েছে। এ বছর সারের দাম বাড়ান হবে না।
তিনি আরও বলেন, ‘গত চার বছরে প্রধানমন্ত্রী সারের দাম এক টাকাও বাড়াননি। অর্থ মন্ত্রণালয় বারবার আমাদের ওপর চাপ দিচ্ছে, সারের দাম বাড়ান, আমরা অর্থ জোগাড় করতে পারছি না, আমরা অর্থ আপনাদের দিতে পারছি না। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী অনড়, কিছুতেই তিনি সারের দাম বাড়াবেন না।
আব্দুর রাজ্জাক বলেন, এ পরিপ্রেক্ষিতে আজকেও আমরা আলোচনা করেছি। আমি আপনাদের বলতে চাই, আশা করি আপনারা জাতির সামনে তুলে ধরবেন। এ বছরও আমাদের সারের দাম বৃদ্ধির কোনো পরিকল্পনা নেই। সারের দাম বাড়ানো হবে না। কৃষক যাতে পর্যাপ্ত পরিমাণ সার পায় সেজন্য সভায় সারের চাহিদা নির্ধারণ করা হয়েছে। আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৬৮ লাখ ৪২ হাজার ৫০০ টন সারের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
আগামী অর্থবছরে ২৭ লাখ টন ইউরিয়া, ১৬ লাখ টন ডিএপি, সাড়ে ৭ লাখ টন টিএসপি, ৯ লাখ টন এমওপি, ৩০ হাজার টন এমএপি, ৩০ হাজার টন এনপিকেএস, সাড়ে ৫ লাখ টন জিপসাম, এক লাখ ৪০ হাজার টন জিংক সালফেট, ২ হাজার ৫০০ টন অ্যামোনিয়াম সালফেট, ৯০ হাজার টন ম্যাগনেশিয়াম সালফেট এবং ৫০ হাজার টন বোরন প্রয়োজন হবে বলে জানান কৃষিমন্ত্রী।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠকে গ্যাস সরবরাহের নিশ্চয়তা কতটুকু পাওয়া গেছে, জানতে চাইলে শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন বলেন, আগামী বছরগুলোতে যাতে সার সংকট না হয়, কারখানাগুলো যাতে সচল রাখতে পারি, তা নিয়েই আমরা বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। বিশ্ব বাজারে জ্বালানির দাম যেহেতু বেড়ে গেছে, সেহেতু আমদানির চেয়ে আমাদের কারখানাগুলো সচল রাখতে পারলে লাভ বেশি হয়। কারণ আমরা আমদানি নির্ভরতা কমাতে চাই। কারখানাগুলো নিজেদের সক্ষমতা অনুসারে সচল রাখার চেষ্টা করছি।
শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন ও কৃষি মন্ত্রণালয়সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি কামরুল ইসলাম, কৃষি সচিব ওয়াহিদা আক্তার এবং শিল্প সচিব জাকিয়া সুলতানাসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
আরো জানতে….
পোটনের পেটে ৫০৮ কোটি টাকার সার