আলোচিতজাতীয়

বিশ্বের ১০১ দেশে দ্বৈত নাগরিকত্বের সুবিধা: সহজ হচ্ছে আবেদন ও ফি প্রদান প্রক্রিয়া

গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : বর্তমানে বিশ্বের ১০১টি দেশের দ্বৈত নাগরিকত্ব সুবিধা পান বাংলাদেশিরা। এই সুবিধা পেতে মিশনে আবেদন, পুলিশি ছাড়পত্র, ব্যাংকে টাকা জমা দেওয়াসহ আনুষঙ্গিক কাজে নানা জায়গায় ভোগান্তিতে পড়তে হয় সেবাপ্রার্থীকে। দালাল ধরার পাশাপাশি অপেক্ষার প্রহর গুনতে হয় তিন থেকে ছয় মাস পর্যন্ত। ভোগান্তি দূর করতে এ-সংক্রান্ত প্রক্রিয়া সহজ করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এখন থেকে ঘরে বসে অনলাইনেই দেওয়া যাবে দ্বৈত নাগরিকত্ব ফি। সেই সঙ্গে স্পেন গমনেচ্ছুদের পুলিশ ক্লিয়ারেন্সও মিলবে অনলাইনে।

অনলাইনে ফি জমা দেওয়ার জন্য গত ২০ ফেব্রুয়ারি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সঙ্গে চুক্তি করেছে সোনালী ব্যাংক। চুক্তির ফলে আগামী মাস থেকেই অনলাইন সিকিউরিটি ক্লিয়ারেন্স সফটওয়্যারের মাধ্যমে এ-সংক্রান্ত আবেদন ও ফি জমা নেওয়া শুরু হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

সুরক্ষা সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (নিরাপত্তা ও বহিরাগমন) মো. হাবিবুর রহমান সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, দ্বৈত নাগরিকত্ব সুবিধা পাওয়া প্রবাসীদের বাংলাদেশি নাগরিকত্ব বহাল রাখতে নিয়মমাফিক আবেদন করতে হয়। এ ছাড়া স্পেনে যেতেও পুলিশি ছাড়পত্র নিতে হয়। এসব পুলিশি ছাড়পত্র, আবেদনে ব্যাংক ফি প্রদান করাসহ নানা ধরনের ঝক্কি-ঝামেলায় পড়তে হয় সেবাপ্রার্থীদের। এসব ভোগান্তি দূর করতে ‘অনলাইন সিকিউরিটি ক্লিয়ারেন্স সফটওয়্যার’-এর মাধ্যমে আবেদন ও ফি জমা নেওয়া হবে।

সুরক্ষা সেবা বিভাগ সূত্র জানায়, আগে ইউরোপ, আমেরিকা, কানাডা, নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, হংকং, ব্রুনেই, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়াসহ মোট ৫৭টি দেশ বাংলাদেশিদের দ্বৈত নাগরিকত্বের সুবিধার আওতায় ছিল। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি নতুন করে ৪৪টি দেশ যুক্ত করে এসআরও জারির প্রস্তাব অনুমোদন করে মন্ত্রিসভা। ফলে এখন মোট ১০১টি দেশের নাগরিকত্বপ্রাপ্ত বাংলাদেশিরা দ্বৈত নাগরিকত্ব সুবিধা পাবেন।

কিন্তু দ্বৈত নাগরিকত্ব সুবিধা টিকিয়ে রাখতে আবেদন, ফি জমাসহ নানা ধাপে ভোগান্তির শিকার হন প্রবাসীরা।

সেবাপ্রার্থীদের ভোগান্তির বিষয়ে সুরক্ষা সেবা বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখার উপসচিব আলীমুন রাজীব সংবাদ মাধ্যমকে জানান, দ্বৈত নাগরিকত্বের সুবিধা পেতে বর্তমানে সংশ্লিষ্ট দেশের মিশনের মাধ্যমে আবেদন করতে হয়। ওই সব দেশে ২০-২৫টা আবেদন জমা হলে ‘কূটনৈতিক ব্যাগ’ করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। এরপর তা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হলে তা ছাড়পত্রের জন্য পুলিশের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে যায়। পুলিশি ছাড়পত্র পাওয়ার পর মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় কার্যক্রম সম্পন্ন করে। এসব কার্যক্রমের জন্য সেবাপ্রার্থীকে বা তাঁর পক্ষে কাউকে মন্ত্রণালয়ে যাতায়াত করতে হয়। এ জন্য সচিবালয়ে প্রবেশের জন্য নানা ভোগান্তিতে পড়েন সেবাপ্রার্থী। এ কারণে কেউ কেউ দালালকেও মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে থাকেন। এসব প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে অন্তত তিন থেকে ছয় মাস পর্যন্ত সময় লাগে। অনলাইনে আবেদন নেওয়া শুরু হলে দেশ-বিদেশে যেকোনো জায়গা থেকে আবেদনের সুযোগ হবে। সোনালি ব্যাংকের সোনালি পেমেন্ট গেটওয়ে অ্যাপের সঙ্গে পররাষ্ট্র, স্বরাষ্ট্র, পুলিশের বিশেষ শাখার সংযোগ থাকবে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা নির্দিষ্ট পাসওয়ার্ড দিয়ে অ্যাপে প্রবেশ করে প্রয়োজনীয় কাজ সম্পন্ন করবেন।

এ প্রসঙ্গে সোনালি ব্যাংক লিমিটেডের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক সুভাষ চন্দ্র দাস সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, চুক্তির ফলে দ্বৈত নাগরিকত্ব এবং স্পেন গমনেচ্ছুদের পুলিশ ক্লিয়ারেন্সের জন্য দেশ ও বিদেশ থেকে বাংলাদেশিরা অনলাইনে আবেদনের সময় সরকার নির্ধারিত ফি-চার্জ সোনালি ব্যাংক লিমিটেডের নিজস্ব গেটওয়ে সোনালি পেমেন্ট গেটওয়ের মাধ্যমে পরিশোধ করতে পারবেন। সোনালি ই-সেবা মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে দেশ ও বিদেশে ঘরে বসেই দুই মিনিটে ব্যাংক হিসাব খোলা যাবে। এমনকি এর মাধ্যমে দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা ব্যাংকিং লেনদেন করা যাবে। সেবাপ্রার্থীকে এ জন্য মাসের পর মাস অপেক্ষায় থাকতে হবে না।

 

সূত্র: আজকের পত্রিকা

এরকম আরও খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button