ধর্ম

জুমার দিনে দরুদ পড়ার তাগিদ

গাজীপুর কণ্ঠ, ধর্ম ডেস্ক : বিশাল এ মহাবিশ্বের প্রতিটি সৃষ্টি মহান আল্লাহর রহমত ও দয়ার মুখাপেক্ষী। আল্লাহর রহমত, দয়া ও করুণা ছাড়া কারও কারও জন্য এ পৃথিবীতে একমুহূর্তও টিকে থাকা সম্ভব নয়। তো আল্লাহতায়ালার রহমত, দয়া ও করুণা লাভের কী উপায়? কোন সে আমল যার বরকতে মানুষের জীবন রহমতের স্নিগ্ধ জলধারায় সিক্ত হয়; যে আমলটি অফুরন্ত বরকত ও রহমতের আঁধার! এ কথা সবারই জানা যে, মানবজাতির মধ্যে সবচেয়ে সম্মানিত মানুষটি আমাদের শেষ নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)।

তাকে যে ভালোবাসবে, আল্লাহ তাকে ভালোবাসবেন। তার জন্য আল্লাহ কিছু হক ও প্রাপ্য উম্মতের ওপর অর্পণ করেছেন। উম্মতের জন্য সৌভাগ্যের ও নবীর প্রাপ্য সে আমলটি হচ্ছে তার প্রতি হৃদয়ের সবটুকু ভালোবাসা নিবেদন করে দরুদ প্রেরণ করা। এটা আল্লাহতায়ালার কাছেও খুবই প্রিয় আমল। এতে করে আল্লাহ ও বান্দার মধ্যে এক গভীর সম্পর্ক তৈরি হয়।

এ সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, ‘নিশ্চয় আল্লাহ ও তার ফেরেশতারা নবীর প্রতি দরুদ পাঠান। হে মুমিনগণ! তোমরাও তার প্রতি দরুদ পাঠাও এবং অধিক পরিমাণে সালাম পাঠাও।’ (সুরা আহজাব : ৫৬)। সুস্পষ্টভাবে এ নির্দেশনার পর প্রত্যেক মুমিনের জন্য অবশ্য পালনীয় হচ্ছে, রাসুলুল্লাহর (সা.) প্রতি হৃদয়ের সবটুকু আবেগ ও ভালোবাসা উজাড় করে দরুদ প্রেরণ করা। দরুদ প্রেরণ করলে আল্লাহ তো খুশি হন; উপরন্তু দরুদ প্রেরণকারীর ওপর তিনি বিশেষ রহমত বর্ষণ করেন। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছেন, নবীজি বলেন, ‘যে ব্যক্তি আমার ওপর একবার দরুদ পাঠ করবে আল্লাহ তার প্রতি দশবার রহমত নাজিল করবেন।’ (মুসলিম : ১/৩০৬)

জুমার দিন বেশি বেশি দরুদ প্রেরণ করা উচিত। এটা রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর পবিত্র নির্দেশনা। হজরত আবু উমামা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘আমার ওপর জুমার দিন বেশি বেশি দরুদ পাঠ করো। কারণ আমার উম্মতের দরুদ জুমার দিন আমার কাছে পৌঁছানো হয়। যে ব্যক্তি আমার ওপর সবচেয়ে বেশি দরুদ পাঠাবে, সে ব্যক্তি কেয়ামতের দিন সবচেয়ে আমার নিকটতম হবে।’ (তারগিব : ১৫৭)। হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেন, ‘তোমরা জুমার দিনে বেশি বেশি দরুদ পাঠ করো। কারণ জিবরাইল (আ.) এইমাত্র আল্লাহতায়ালার বাণী নিয়ে হাজির হলেন। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘পৃথিবীতে যখন কোনো মুসলমান আপনার ওপর একবার দরুদ পাঠ করে আমি তার ওপর দশবার রহমত নাজিল করি এবং আমার সব ফেরেশতা তার জন্য দশবার ইস্তেগফার করে।’ (তারগিব : ৩/২৯৯)। অন্য বর্ণনায় নবী করিম (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন আসরের নামাজের পর নিজ স্থান থেকে ওঠার আগে ৮০ বার এই দরুদ শরিফ পাঠ করে, ‘আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মাদিনিন নাবিইয়্যিল উম্মিইয়ি ওয়া আলা আলিহি ওয়া আস হাবিহি ওয়াসাল্লিমু তাসলিমা’, তার ৮০ বছরের পাপ মাফ হয়ে যায় এবং ৮০ বছরের ইবাদতের সওয়াব তার আমলনামায় লেখা হয়।’ (আফদালুস সালাওয়াত : ২৬)। রহমত-বরকতে ভরা এ আমলটি আমাদের অভ্যাসে পরিণত হোক।

এরকম আরও খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button