অন্যান্য

৩৫০ বছর আগে ডোবা জাহাজে মিলল রুপায় বোনা বিয়ের পোশাক

গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : ১৬৬০ সালে উত্তর সাগরের টেক্সেল উপকূলে একটি জাহাজডুবি হয়। সাড়ে তিনশ বছর পর ২০১০ সালে অজ্ঞাত ওই বাণিজ্য জাহাজটির সামান্য কিছু অংশ বালি ও লবণের আস্তরণের আড়াল থেকে উঁকি দেয়। পরে উদ্ধার করা হয় জাহাজটির অক্ষত কিছু অংশ। ভেতরে পাওয়া যায় এমন সব জিনিস, এর আগে যা কোনো জাহাজে পাওয়া যায়নি।

সিএনএনের খবর জানায়, জাহাজের ভেতরে পাওয়া যায় কিছু পোশাক, রুপার বাসন-কোসন এবং চামড়ার তৈরি বইয়ের কভার। দেখেই বোঝা যায়, এসব সমাজের সম্ভ্রান্ত লোকজনের ব্যবহৃত জিনিস। এর মধ্যে পাওয়া গিয়েছে দুটি প্রায় অক্ষত জবরদস্ত গাউন, একটি সিল্কের জামা এবং আরেকটি রুপায় বোনা পোশাক। জাদুঘরের পোশাক বিশেষজ্ঞদের ধারণা, রুপার গাউনটি একটি বিয়ের পোশাক।

পোশাক সাধারণত পানির নিচে খুব দ্রুতই পচে যায়। তবু এগুলো এতদিন টিকে থাকার বিষয়টিকে আলাদা গুরুত্ব দিচ্ছেন গবেষকরা। নেদারল্যান্ডসের একটি জাদুঘরের টেক্সটাইল রিস্টোরার এমি ডি গ্রুট বলেছেন, পোশাকগুলো হাত দিয়ে ধরে আমি আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েছি। সপ্তদশ শতকের পোশাকগুলো নিশ্চয়ই কেউ গায়ে পরেছিল। এগুলো স্পর্শ করা মানে কয়েক শতাব্দী আগের সংস্পর্শে আসা।

রুপার তৈরি বিয়ের গাউনটিতে সিল্ক সাটিন ডামাস্ক দিয়ে তৈরি ফুলের নকশা ও রুপার সুতায় বোনা হার্টশেপের নকশা আঁকা রয়েছে। এছাড়া রয়েছে ওপরে সেলাই করা রুপার পুতি। ধাতব হলেও গাউনটি বেশ হালকা।

সংরক্ষক অ্যালেক ইউইং বলেছেন, এটার মধ্যে একটা ঝকঝকে ব্যাপার রয়েছে। হয়তো কোনো বিয়ের অনুষ্ঠানের জন্য এটা বানানো হয়েছিল। পশ্চিম ইউরোপের সম্ভ্রান্ত কোনো নারী তার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিনে এটি পরেছেন।

লবণের মধ্যে রুপা দ্রুত ক্ষয় হয়ে যায়, তারপরও পোশাকটির ডিজাইন ও নকশা এখনো বেশ স্পষ্ট। বিয়ের পোশাকটি এখন বাদামি হয়ে গিয়েছে। তবে এটি আগে ক্রিম বা সাদাটে রঙের ছিল বলে মনে করছেন গবেষকরা।

আর রফল হাতার গাউনগুলোর সঙ্গে রয়েছে একটি পূর্ণাঙ্গ স্কার্ট। ১৬২০ এর দশকে পশ্চিম ইউরোপীয় অভিজাত নারীরা এ ধরনের পোশাক পরতেন। গাউনগুলোর রং এ মুহূর্তে ছোপ ছোপ ক্রিম, লাল ও বাদামী। তবে গবেষকরা বলছেন, এগুলো আসলে একরঙা পোশাকই ছিল। লবণের পানিতে থাকতে থাকতে এক অংশের রঙ অন্য অংশে লেগে আপাতত এমন রঙ হয়েছে। দামি এবং দুর্লভ কাপড়ে তৈরি হলেও গাউনগুলো নিত্যব্যবহার্য ছিল বলেই মনে হয়, কারণ সবগুলোই বেশ হালকা।

আমস্টারডাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রদর্শনী বিষয়ের গবেষক এবং সংরক্ষণ বিজ্ঞানের অধ্যাপক মার্টেন ভ্যান বোমেল বলেছেন, পুরো পৃথিবীতে হয়তো এমন গাউন এই দুটোই রয়েছে। আর সেগুলো এখন আমাদের হাতে। এখন পর্যন্ত আবিষ্কৃত সবচেয়ে অবিশ্বাস্য জিনিস এগুলোই।

এরকম আরও খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button