আন্তর্জাতিক

পর্তুগালের ‘গোল্ডেন ভিসা’ বন্ধ, বাড়ি ভাড়ার লাগাম টানতে কড়াকড়ি

গাজীপুর কণ্ঠ, আন্তর্জাতিক ডেস্ক : আবাসন সংকটের মধ্যে পড়ে বিতর্কিত ‘গোল্ডেন ভিসা’ প্রকল্প বন্ধ করার ঘোষণা দিয়েছে পর্তুগাল সরকার। একই সঙ্গে এয়ারবিএনবির মতো নতুন পর্যটন সংস্থাকে লাইসেন্স না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটি। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার পর্তুগাল সরকারের তরফ থেকে এসব বলা হয়েছে বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে।

পশ্চিম ইউরোপের দরিদ্র দেশগুলোর মধ্যে পর্তুগালে বাসা ভাড়া ও বাড়ির দাম আকাশচুম্বী হয়েছে। শুধু লিসবন শহরেই গত বছরের তুলনায় ৩৭ শতাংশ বাসা ভাড়া বেড়েছে। এ শহরের অন্তত অর্ধেক মানুষের মাসিক আয় ১ হাজার ইউরোর নিচে নেমে এসেছে।

আবাসন প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, মানুষের আয় কমে যাওয়া, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, ধনী বিদেশিদের পর্তুগালে বিনিয়োগের সরকারি নীতি ও পর্যটননির্ভর অর্থনীতির কারণে পর্তুগালের স্থানীয়দের জন্য বাসাভাড়া অসহনীয় পর্যায়ে চলে গেছে। সম্প্রতি পর্তুগালের ৮ দশমিক ৩ শতাংশ মূল্যস্ফীতির কারণে সমস্যাটি আরও প্রকট আকার ধারণ করেছে।

সংকট মোকাবিলায় পর্তুগালের প্রধানমন্ত্রী আন্তোনিও কস্তা ৯০ কোটি ইউরো তহবিল ঘোষণা করেছেন। তবে কবে নাগাদ তা কার্যকর হবে, স্পষ্ট নয়। আন্তোনিও কস্তা বলেছেন, আগামী মাসে কিছু অর্থ ছাড়ের অনুমোদন দেওয়া হবে। এ ব্যাপারে আইনপ্রণেতারা ভোট দেবেন।

প্রধানমন্ত্রী আন্তোনিও কস্তা আরও বলেছেন, বাসাভাড়া বৃদ্ধির লাগাম টানার জন্য একটি ব্যবস্থা চালু করা হবে। সেটি হচ্ছে, পর্যটন বাড়িগুলোকে যারা স্থানীয় লোকজনদের ভাড়া দেওয়ার জন্য ব্যবহার করবেন, সেসব বাড়ির মালিকদের ট্যাক্স প্রণোদনা দেবে সরকার। এ ছাড়া এয়ারবিএনবির মতো পর্যটন বাসস্থানকেন্দ্রিক নতুন কোনো প্রতিষ্ঠানকে লাইসেন্স দেওয়া হবে না।

তবে প্রধানমন্ত্রীর এসব সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছেন বাম দলের একজন এমপি মারিয়ানা মর্টাগুয়া। তিনি বলেছেন, সরকার বাড়ির মালিকদের কর ছাড় দিচ্ছে, যারা ইতিমধ্যেই আবাসন খাত থেকে প্রচুর লাভবান হয়েছে।

আবাসনের ঘাটতি মেটাতে কস্তা বলেছেন, তাঁর সরকার পাঁচ বছরের জন্য বাড়িওয়ালাদের কাছ থেকে সরাসরি খালি বাড়ি ভাড়া নেবে এবং স্থানীয়দের ভাড়া দেবে।

এদিকে গোল্ডেন ভিসা প্রোগ্রাম বন্ধ করার কথাও বলেছেন কস্তা। গোল্ডেন ভিসা হচ্ছে, ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ) দেশের নাগরিক নয়, এমন কেউ যদি পর্তুগালে আবাসন খাতসহ অন্যান্য খাতে বিনিয়োগ করেন, তবে তাঁকে ইইউ পাসপোর্ট দেওয়া হয়। এটিকেই বলা হয় গোল্ডেন ভিসা। পর্তুগাল ২০১২ সাল থেকে এই প্রোগ্রাম চালু করে। এ পর্যন্ত এ প্রোগ্রামের আওতায় বিদেশি বিনিয়োগকারীরা ৬৮০ কোটি ইউরো বিনিয়োগ করেছেন। এর বেশির ভাগই আবাসনখাতে বিনিয়োগ করেছেন তাঁরা।

এরকম আরও খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button