দৃষ্টিহীনদের জন্য ‘আশার আলো’
গাজীপুর কণ্ঠ, আন্তর্জাতিক ডেস্ক : চোখের দৃষ্টি ফেরাতে মানুষের মস্তিষ্কের সতেজ কোষ ইঁদুরের মস্তিষ্কে বসিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। সম্প্রতি মস্তিষ্কের এই কোষ প্রতিস্থাপনের পরীক্ষায় সফল হয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দি ইন্ডেপেনডেন্ট ও ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, মানুষের মস্তিষ্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশকে ল্যাবে কৃত্রিমভাবে পরিনত করা হয়। এরপর সেটি বিশেষ পদ্ধতিতে দৃষ্টিহীন ইঁদুরের মস্তিষ্কে বসিয়ে দেন বিজ্ঞানীরা।
পরীক্ষার জন্য নির্বাচিত ইঁদুরগুলোর মস্তিষ্ক নষ্ট ছিল। মগজের যে অংশ দৃষ্টিশক্তি ঠিক রাখে, সেটাই অকেজো হয়ে গিয়েছিল। এই পরীক্ষায় সেই অকেজো অংশকে প্রতিস্থাপন করেন বিজ্ঞানীরা। মানুষের মস্তিষ্কের ওই একই অংশ ল্যাবে কৃত্রিমভাবে তৈরি করা হয়। তারপর ইঁদুরের মস্তিষ্কে বসিয়ে দেওয়া হয়। কিছু দিনের মধ্যে দৃষ্টি ফিরে পেয়েছে সেই অন্ধ ইঁদুর।
এই সাফল্যের পর মানুষের দৃষ্টি ফিরিয়ে আনার গবেষণা অনেকটাই এগিয়ে গেল বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।
পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউরোসার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ইসাক চেন বলেন, দৃষ্টি হারানোর জন্য দায়ী কোষটিকে নয়, পুরো টিস্যুকে এই পরীক্ষায় প্রতিস্থাপন করা হয়। মস্তিষ্কের বিভিন্ন কোষ ও টিস্যুর সঙ্গে মস্তিষ্কের একটি গঠনগত সাদৃশ্য রয়েছে। এই পরীক্ষা সেই বিশেষ কোষ ‘নিউরোন’কে গুরুত্ব দেওয়া হয়। মস্তিষ্কের গঠন বুঝতেই এমনটা করা হয়।
নতুন করে বসানো টিস্যুটি কীভাবে কাজ করছে, তা পরীক্ষার জন্য বিশেষ পদ্ধতির সাহায্য নেন বিজ্ঞানীরা। এর জন্য ব্যবহার করা হয় একটি ফ্লুরোসেন্ট ভাইরাস। এই ভাইরাস চোখের দৃষ্টিশক্তি অনুযায়ী কাজ করছে কি না, তা বুঝতে ব্যবহার করা হয়।
ইঁদুরের চোখে এটি ইনজেকশন দিয়ে ঢুকিয়ে দেখা যায়, ফ্লুরোসেন্ট ভাইরাস চোখের স্নায়ু ধরেই এগিয়ে চলেছে মস্তিষ্কের দিকে। শেষ পর্যন্ত সেটি পৌঁছে যাচ্ছে নতুন করে বসানো টিস্যুতে। এর ফলেই পরীক্ষাটি সফল হয়েছে বুঝতে পারেন বিজ্ঞানীরা। পাশাপাশি বাইরে থেকে বসানো টিস্যুটি যে মস্তিষ্কের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে কাজ করতে পারছে, তারও প্রমাণ মেলে।