জাতীয়

আন্দোলন সংগ্রাম করে কেউ কিছু করতে পারবে না: প্রধানমন্ত্রী

গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকার জনগণের কল্যাণে কাজ করছে। জনগণ আমাদের সাথে আছে। কাজেই আন্দোলন সংগ্রাম করে কেউ কিছু করতে পারবে না। দেশের অপ্রতিরোধ্য অগ্রগতি কেউ রুখতে পারবে না।

তিনি বলেন, ‘আপনারা আস্থা রাখতে পারেন (আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা) যে, জনগণ আমাদের সাথে আছে। কারণ, আমরা জনগণের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছি। কাজেই জনগণ যতক্ষণ আমাদের সাথে থাকবে ততক্ষণ পর্যন্ত আন্দোলন-সংগ্রাম করে কেউ কিছু করতে পারবেনা। ’

বৃহস্পতিবার (০২ ফেব্রুয়ারি) দেশের প্রথম পাতাল মেট্রোরেল এমআরটি লাইন-১ এর নির্মাণ কাজের উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত এক সমাবেশে প্রধান অতিথি’র ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, পাতাল রেলের নির্মাণ কাজের উদ্বোধনের মাধ্যমে ‘বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় আরেকটি মাইলফলক স্থাপিত হলো’ এবং ‘পাতাল রেলে বাংলাদেশের নবযাত্রা শুরু হলো’।

সরকার প্রধান বলেন, বাংলাদেশকে আমরা এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি, দেশ আরো এগিয়ে যাবে। বাংলাদেশের এই অপ্রতিরোধ্য অগ্রগতি আর কেউ রুখতে পারবে না। এটাই হচ্ছে বাস্তবতা। এজন্য আপনাদের সহযোগিতা একান্তভাবে কাম্য।

তিনি আবারো সবাইকে বিদ্যূৎ, জ্বালানি ও পানি ব্যবহারে সাশ্রয়ী হওয়ার আহবান জানিয়ে বলেছেন, অন্যথায় বিপদের শঙ্কা রয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ আজ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল। এটা সম্ভব হয়েছে ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর থেকে এ পর্যন্ত গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রয়েছে বলেই। এই গণতন্ত্র আছে বলেই বাংলাদেশ উন্নয়নের মহাসড়কে যাত্রা শুরু করেছে। উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে। ইনশাল্লাহ ২০৪১ সাল নাগাদ বাংলাদেশ হবে উন্নত সমৃদ্ধ ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’।

প্রধানমন্ত্রী সকালে রূপগঞ্জের পূর্বাচল ৪ নম্বর সেক্টরে ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (এমআরটি) লাইন-১ নির্মাণ কাজের উদ্বোধনী ফলক উন্মোচন করেন। এর আগে গত ২৮ ডিসেম্বর রাজধানীর দিয়াবাড়িতে দিয়াবাড়ী থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত মেট্রোরেল প্রকল্পের ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (এমআরটি) লাইন-৬ এর ১১ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার অংশের উদ্বোধনের মাধ্যমে দেশে প্রথম মেট্রোরেলের যাত্রা শুরু হয়।

প্রকল্প সুত্র জানায়, সরকার ২০২৬ সালের মধ্যে আনুমানিক ৫২,৫৬১.৪৩ কোটি টাকা ব্যয়ে বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর এবং পূর্বাচল থেকে নতুন বাজার পর্যন্ত মাটির নীচ দিয়ে এবং এলিভেটেড উভয় সুবিধা সম্বলিত ৩১ দশমিক ২৪২ কিলোমিটার দীর্ঘ এমআরটি লাইন-১ নির্মাণ করবে। ২০৩০ সাল নাগাদ রাজধানী ঢাকায় মোট ছয়টি মেট্রোরেল রুট উদ্বোধন করা হবে এবং ডিএমটিসিএল এই মেগা প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করবে।

এমআরটি লাইন-১-এর দু’টি অংশ থাকবে-একটি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর পর্যন্ত (বিমানবন্দর রুট) ১৯ দশমিক ৮৭২ কিলোমিটার অংশ। এটি হবে ভূগর্ভস্থ এবং এতে ১২টি স্টেশন থাকবে। অপর অংশটি নতুন বাজার থেকে প্রায় ১১ দশমিক ৩৭ কিলোমিটার এলিভেটেড লাইনসহ পূর্বাচল পর্যন্ত (পূর্বাচল রুট)। এতে সাতটি স্টেশন থাকবে। অন্যদিকে বিমানবন্দর রুটের অংশ হিসেবে নতুন বাজার এবং নদ্দা স্টেশন হবে ভূগর্ভস্থ ।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ সরকার ও উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) এমআরটি লাইন-১-এর নির্মাণ কাজের জন্য ৫২,৫৬১.৪৩ কোটি টাকার ব্যয়ভার বহন করবে। এর মধ্যে জাইকা প্রকল্প সহায়তা (পিএ) হিসাবে দেবে ৩৯,৪৫০.৩২ কোটি টাকা এবং বাংলাদেশ সরকার দেবে ১৩ হাজার ১১১ কোটি ১১ লাখ টাকা।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।

অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, বীর প্রতীক, বাংলাদেশে জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি এবং বাংলাদেশে জাইকা’র চিফ রিপ্রেজেন্টেটিভ ইচিগুছি তোমোহাইড। সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নূরী স্বাগত বক্তৃতা করেন এবং ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন সিদ্দিক প্রকল্প পরিচিতি তুলে ধরেন।

অনুষ্ঠানে এমআরটি লাইন-১ এর ওপর একটি ভিডিও চিত্র এবং প্রকল্পের ওপর এটুআই নির্মিত একটি ‘থিম সং’ পরিবেশিত হয়।

এরকম আরও খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button