পুলিশের ধাওয়া খেয়ে আহত আওয়ামী লীগ কর্মীর মৃত্যু
গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার পাকাটি গ্রামে পুলিশের ধাওয়া খেয়ে পালাতে গিয়ে লিটন মিয়া (৩০) নামে এক আওয়ামী লীগ কর্মী আহত হন। আহত লিটন মিয়া মৃত্যুর সঙ্গে ১৭ দিন লড়ে গত বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকার একটি একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়।
লিটনের পরিবারের দাবি লিটনের পিতা মইজউদ্দিনের নামের সঙ্গে একটি মামলার আসামি কামরুজ্জামানের পিতা মইজউদ্দিনের নামের মিল থাকায়, নিরপরাধ লিটন মিয়াকে পুলিশ গ্রেপ্তার করতে গভীর রাতে লিটন মিয়ার বাড়িতে হানা দেয়। এ সময় পুলিশের নির্যাতনে লিটন মিয়া গুরুতর আহত হয়।
এলাকাবাসী ও লিটন মিয়ার পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪শে এপ্রিল রাত আনুমানিক ১টার দিকে গফরগাঁও থানার ওসি আবদুল আহাদ খান ইমার্জেন্সি অফিসার এসআই রুবেল, ওয়ারেন্ট তলবের দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসার এএসআই সুখময় দত্ত, এসআই নূর শাহীনের নেতৃত্বে ৮-১০ জন পুলিশ লিটনের বাড়ির পাশে পাকাটি বাজারে আসে। পাকাটি বাজারের ব্যবসায়ী ও ওইদিনের বাজার পাহারাদার আল আমিন (৩৮) ও বাচ্চু মিয়ার কাছে কামরুজ্জামান পিতা-মইজউদ্দিনকে খোঁজ করে। আল আমিন ও বাচ্চু মিয়া পুলিশকে সঠিক তথ্য দিতে পারে না। রাত দেড়টার দিকে এসআই রুবেল, এএসআই সুখময় দত্ত, এসআই নূর শাহীনের নেতৃত্বে ৮-১০ জন পুলিশ বাড়ি লিটনের বাড়ি ঘেরাও করে।
পুলিশ লিটনকে বসতঘরের দরজা খুলতে বলে এবং বসতঘরের দরজাতে আঘাত করে। ভয়ে লিটন ঘরের টিনের চালা কেটে পালাতে গিয়ে, টিনের উপর থেকে পড়ে গুরুতর আহত হয়। গুরুতর লিটনকে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে, পরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে ২৫শে এপ্রিল থেকে ৬ই মে পর্যন্ত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে এবং পরে ঢাকার লালমাটিয়ার ইস্টার্ন কেয়ার হাসপাতালে আইসিইউতে রাখা হয়। গত বৃহস্পতিবার রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
এদিকে লিটনের পিতা মইজউদ্দিন (৭০), মা ওজুফা খাতুন (৬০) বলেন, তার ছেলে লিটন মিয়ার নামে কোনো মামলা নেই। পুলিশ এলাকার কিছু লোকের ইন্ধনে পড়ে আমার ছেলেকে গ্রেপ্তার করতে আমার বাড়িতে অভিযান চালায়। আমার ছেলে ঘরের চালা থেকে পড়ে যাওয়ার পরও পুলিশ অচেতন লিটনকে টেনেহেঁচড়ে নিয়ে যায়।
গফরগাঁও থানার ওসি আবদুল আহাদ বলেন, লিটনের নামে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছিল। পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করতে গেলে পালাতে গিয়ে সে আহত হয়। এরপরও তার সুচিকিৎসার জন্য থানা পুলিশ দ্রুত তাকে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।
স্থানীয় ইউপি সদন্য হিরু মেম্বারের সঙ্গে কথা বলেই লিটনের বাড়িতে অভিযান চালানো হয় বলে জানান গফরগাঁও থানার এসআই নূর শাহীন।