গাজীপুর

পূবাইলে শিশু সিহাবকে ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে খুন করে তাবলিগে চলে যায় আসামী!

গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : মহানগরের পূবাইলের মাজুখানে ধর্ষণ চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে পাশবিক নির্যাতনের পর শিশু সিহাব হোসেনকে (৬) হত্যার পর তাবলিগে চলে যায় আসামী নাসির মিয়া (২৮)। এরপর দীর্ঘ প্রায় ১৬মাস পলাতক থেকে অবশেষে পিবিআই’র হাতে গ্রেপ্তার হয়ে আদালতে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি দিয়েছে নাসির মিয়া। আর এতে এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করতে সফল হয়েছে পিবিআই।

শুক্রবার (২০ জানুয়ারি) পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) গাজীপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান এ তথ্য জানান।

গ্রেপ্তার নাসির মিয়া নোয়াখালীর কবিরহাট থানার সোনাপুর জমিদারহাট এলাকার কালাম মিয়ার ছেলে। সে পূবাইলের মাজুখান বাগেরটেক এলাকায় ভাড়া থাকত।

হত্যাকাণ্ডের শিকার শিশু সিহাব হোসেন মাজুখান উত্তরপাড়ায় জুয়েলের ছেলে।

পিবিআই জানায়, ২০২১ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর দুপুরে শিশু সিহাব নিখোঁজ হয়। খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে পরদিন সকালে মাজুখান এলাকার একটি বাড়ির সামনে সিহাবের লাশ পাওয়া যায়। পরে সিহাবের স্বজনরা লাশ শনাক্ত করে বাড়ি নিয়ে যায়। খবর পেয়ে জিএমপির পূবাইল থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়। এ ঘটনায় ২৬ সেপ্টেম্বর নিহত শিশুর দাদী বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামীদের বিরুদ্ধে পূবাইল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন {মামলা নং-১৫(১১)২১}। পূবাইল থানা পুলিশ মামলা তদন্ত করে হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করতে না পারায় মামলাটি তদন্তাধীন অবস্থায় পিবিআইয়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরে পিবিআই নাসির মিয়াকে গ্রেপ্তার করে।

গ্রেপ্তার আসামীর বরাত দিয়ে পিবিআই’র পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান জানান, নাসির মিয়া মাজুখান উত্তরপাড়ায় জনৈক ফারুকের মুরগীর দোকানে কর্মচারি হিসেবে কাজ করত। বেশিরভাগ সময় মালিক দোকানে থাকতেন না। নাসির নিজেই মুরগী ও ফিড বেচা কেনা করতেন। শিশু সিহাব মাঝে মধ্যে নাসির মিয়ার দোকানে আসত। অন্য মুরগী ফিড খেয়ে ফেলার সময় মুরগী তাড়ানোর জন্য নাসির খেলনা পিস্তল ব্যবহার করতেন। খেলনা পিস্তলের ছোড়া গুলি সিহাব কুড়িয়ে আনতো। নাসির মাঝে মধ্যে সিহাবকে চিপস্ কিনে দিত। শিশু সিহাব নাসিরকে মুরগী চাচ্চু বলে ডাকতো। এভাবে  সিহাবের সঙ্গে নাসিরের সম্পর্ক গড়ে উঠে। আসামি নাসির একই মহল্লায় ভাড়া থাকতো।

পিবিআই কর্মকর্তা আরো জানান, ঘটনায় জড়িত আসামি নাসির বিকৃত মানসিকতা সম্পন্ন। ঘটনার দিন নাসির বাসায় নিজের রুমে ল্যাপটপে ব্লু ফিল্ম দেখছিল। দুপুরে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টির সময় সিহাব নাসিরের রুমে যায়। নাসির তখন ল্যাপটপে নীল ছবি দেখে উত্তেজিত হয়ে শিশু সিহাবকে ধর্ষণের (বলৎকার) চেষ্টা করে। সে সময় সিহাব চিৎকার দেয়। পরে তার মুখ চেপে ধরে পাশবিক নির্যাতন করে। এক পর্যায়ে সিহাবের দেহ নিস্তেজ হয়ে যায়। পরে মৃতদেহ খাটের নিচে লুকিয়ে রাখে দরজা লাগিয়ে নাসির বাইরে চলে যায়। পরদিন ভোররাতে সিহাবের লাশ সালাম মুন্সীর বাড়ির পাশে ফেলে রাখে নাসির। ঘটনার তিনদিন পরে নাসির এলাকা ছেড়ে চট্টগ্রাম চলে যায়। দু’দিন পরে সেখান থেকে ফিরে। এর ১সপ্তাহ পর নাসির ৪০দিনের চিল্লায় (তাবলিগে) চলে যায়।

তিনি আরো জানান, গ্রেপ্তার নাসির বৃহস্পতিবার এ ঘটনার দায় শিকার করে হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দিয়ে আদালতে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি দিয়েছে।

এরকম আরও খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button