আইন-আদালতআলোচিতরাজনীতি

মির্জা ফখরুল-আব্বাসের জামিন আপিল বিভাগেও বহাল

গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসকে দেওয়া হাই কোর্টের জামিন আপিল বিভাগেও বহাল রয়েছে।

তাদের স্থায়ী জামিন প্রশ্নে হাই কোর্টে যে রুল দিয়েছিল, তা এক মাসের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়ে আপিল বিভাগ রাষ্ট্রপক্ষের করা জামিন বাতিলের আবেদনটির নিষ্পত্তি করে দিয়েছে।

প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে আপিল বিভাগের চার সদস্যের বেঞ্চ রোববার এ সিদ্ধান্ত দেয়।

এই আদেশের ফলে মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসের মুক্তিতে আর কোনো বাধা থাকল না বলে তাদের আইনজীবীদের ভাষ্য।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন। ফখরুল ও আব্বাসের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন। সঙ্গে ছিলেন এ জে মোহাম্মদ আলী, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম সজল ও অ্যাডভোকেট সগীর হোসেন লিওন।

বিচারপতি মো. সেলিম ও বিচারপতি মো. রিয়াজ উদ্দীন খানের হাই কোর্ট বেঞ্চ মঙ্গলবার ৬ মাসের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দেয় ফখরুল ও আব্বাসকে।

পাশাপাশি তাদের নিয়মিত জামিন কেন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল দেয় হাই কোর্ট। চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয় সংশ্লিষ্টদের।

রাষ্ট্রপক্ষ সেই জামিন স্থগিতের আবেদন নিয়ে আপিল বিভাগে গেলে চেম্বার বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন বুধবার বিষয়টি শুনানির জন্য নিয়মিত বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন। আর আপিল বিভাগে শুনানি শেষ না হওয়া পর্যন্ত আসামিপক্ষকে নিম্ন আদালতে জামিননামা দাখিল না করতে বলা হয়।

এর ধারাবাহিকতায় রোববার আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানি শেষে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনটির নিষ্পত্তি করে দিল সর্বোচ্চ আদালত।

ফখরুল ও আব্বাসের আইনজীবী জয়নুল আবেদীন সাংবাদিকদের বলেন, “আপিল বিভাগ আমাদের কথা শুনেছেন এবং সরকার পক্ষের কথাও শুনেছেন। উভয় পক্ষকে শুনে চেম্বার আদালত যে আদেশটি দিয়েছিলেন, সেই আদেশটি ভ্যাকেট করে দিয়েছেন।

“আরেকটি আদেশ দিয়ে বলছেন যে, (হাই কোর্টের) রুলটি এক মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করার জন্য। সুতরাং হাই কোর্ট বিভাগ যে জামিন দিয়েছেন, সেটা বহাল আছে।”

অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন বলেন, “আপিল বিভাগের এই আদেশ পাওয়ায় আমরা বেইলবন্ড ফার্নিশ করব।… মনে করি বেইলবন্ড ফার্নিশ করা সাপেক্ষে তাদেরকে মুক্তি দেওয়া হবে।”

গত ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় বিএনপির সমাবেশ ও স্থান নির্ধারণ নিয়ে উৎকণ্ঠা-উত্তেজনার মধ্যে ৭ ডিসেম্বর নয়া পল্টনে জমায়েত হওয়া বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষে একজনের মৃত্যু ও শতাধিক আহত হয়।

বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে হাতবোমা ছোড়া হয়েছে অভিযোগ তুলে তখন ওই কার্যালয়ের ভেতরে অভিযান চালায় পুলিশ, গ্রেপ্তার করা হয় কেন্দ্রীয় কয়েকজন নেতাসহ কয়েকশ নেতা-কর্মীকে।

পরদিন রাতে বাড়ি থেকে মির্জা ফখরুলকে গ্রেপ্তার করা হয়, একই রাতে গ্রেপ্তার করা হয় মির্জা আব্বাসকেও। ৯ ডিসেম্বর পুলিশের উপর হামলা ও উস্কানি দেওয়ার মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে পাঠানো হয় আদালতে। তাদের পক্ষে জামিন আবেদন হলেও তা নাকচ করে পাঠানো হয় কারাগারে।

সংঘর্ষের ঘটনায় পল্টন, মতিঝিল, শাহজাহানপুর ও রমনা থানায় চারটি মামলা করে পুলিশ। সব মিলিয়ে প্রায় তিন হাজার নেতকর্মীকে আসামি করা হয় সেসব মামলায়।

তাদের মধ্যে ৭২৫ জনের নাম মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছিল, ওই তালিকায় মির্জা ফখরুল বা মির্জা আব্বাসের নাম ছিল না।

গত ২১ ডিসেম্বর ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও মির্জা আব্বাসের জামিন নামঞ্জুর করেন মহানগর দায়রা জজ মো. আসাদুজ্জামান।

এর আগে তিন দফা ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত তাদের জামিন আবেদন নাকচ করে।

এরকম আরও খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button